ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংক ব্যবস্থাপনার অনেক ক্ষেত্রে আমরা ভারতের চেয়ে এগিয়ে ॥ গবর্নর

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫

ব্যাংক ব্যবস্থাপনার অনেক ক্ষেত্রে আমরা ভারতের চেয়ে এগিয়ে ॥ গবর্নর

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থাপনা অনেক ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান। প্রত্যেক মানুষের কাছে আর্থিক সেবা পৌঁছে দিতে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার মিরপুরস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) মিলনায়তনে ইন্ডিয়ান ব্যাংকিং চ্যালেঞ্জেস এ্যান্ড অপরচুনিটিস শীর্ষক এই সেমিনার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিআইবিএম মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। গবর্নর বলেন, ব্যাংক সুদের হারে আমরা ভারতের তুলনায় খারাপ অবস্থায় নেই। আমাদের স্প্রেড ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, ভারতের স্প্রেড ৫ শতাংশ। আমাদের সুদের হারও উদ্বেগজনক নয়, ১১ থেকে ১২ শতাংশের আশপাশে আছে। বাংলাদেশের ব্যাংক ব্যবস্থাপনা অনেক ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদের হার ও আমানতের সুদের হারের মধ্যে ব্যবধানকে স্প্রেড বলা হয়। আতিউর রহমান বলেন, আমরা এখন আদা, রসুনসহ কিছু মসলা চাষীদের মাত্র ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়ার জন্য একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ওই প্রকল্পে দুগ্ধ গাভী কেনার জন্য ঋণ দেয়া হবে মাত্র ৫ শতাংশ সুদে। আগামী ১৩ তারিখ প্রধানমন্ত্রী এ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন বলেও জানান তিনি। গবর্নর বলেন, এসব ঋণের সুদসহ হিসাব করলে বাংলাদেশে সুদ হার এক অঙ্কে নেমে আসবে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ভারতে যেখানে মাত্র ২ শতাংশ মানুষ মোবাইল ব্যাংকিং করে সেখানে আমাদের প্রায় ২০ ভাগ মানুষ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত। ২০১১ সালের জনগণনা তথ্য অনুযায়ী, ভারতের জনসংখ্যা ১২১ কোটিরও বেশি; যা সমগ্র বিশ্বের জনসংখ্যার এক-ষষ্ঠাংশ। অন্যদিকে সর্বশেষ আদম শুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় ১৬ কোটি। আতিউর রহমান বলেন, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকার ফলে রফতানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে (জুলাই-নবেম্বর) আমাদের প্রায় সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ভারতে তা নেতিবাচক। ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক শীঘ্রই অনলাইনভিত্তিক লেনদেন এমএফসিতে যাবে। যার মাধ্যমে প্রত্যেকে নিজের এ্যাকাউন্ট নিজেরাই চালাতে পারবে। তিনি বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে এ্যাজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মোট এ্যাজেন্টের সংখ্যা ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪৮৫ দাঁড়িয়েছে। যার মধ্যে নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা ২৯ দশমিক ২ মিলিয়ন। যেখানে অনলাইনভিত্তিক সচল ১১ দশমিক ২৭ মিলিয়ন গ্রাহক মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসের আওতায় রয়েছে। এই সার্ভিসগুলো আমাদের আর্জন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে ভারতের ‘বন্ধন ব্যাংক’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর ঘোষ বলেন, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে বন্ধন ব্যাংক সরকারী লাইসেন্স পেয়ে ঋণদান কর্মসূচী শুরু করেছে। ২১ শতাংশ সুদে দরিদ্র মানুষের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ পরিচালনায় সারা ভারতে ব্যাংকটির ৫০১টি শাখা রয়েছে। বর্তমানে ১০ হাজার কোটি রুপীর ঋণ দিচ্ছে। এর মধ্যে ২১ শতাংশ ঋণগ্রহণকারীকে দরজায় দরজায় গিয়ে সেবা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ৯৮ ভাগ দেয়া হচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ আর মাত্র ২ শতাংশ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) এ ঋণ দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
×