ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যশোরে পরিবহনে চলছে ব্যাপক চাঁদাবাজি

প্রকাশিত: ০৬:১০, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫

যশোরে পরিবহনে চলছে ব্যাপক চাঁদাবাজি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর নুরুল হক সিদ্দিকীর নাম ভাঙ্গিয়ে সার্জেন্ট কাজী হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে চলছে প্রায় কোটি টাকার অর্থ বাণিজ্য। পরিবহন, বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস, ইজিবাইক, রিক্সা, অটোটেম্পোসহ বিভিন্ন খাত থেকে প্রতিমাসে অবৈধ অর্থ যশোর ট্রাফিক পুলিশ আদায় করছে। জানা গেছে, শহরের ভেতরে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও হরহামেশায় চলতে দেখা যাচ্ছে। ফলে শহরের যানজটে প্রতিকূল অবস্থার সৃষ্টি করছে। সাধারণের চলাচলেও বিঘœ ঘটছে। আর ওই সব গাড়ি অবাধে শহরে ঢুকে পড়ার নেপথ্যে রয়েছে ট্রাফিকের বাণিজ্য। ভারি যানবাহনের মধ্যে অধিকাংশ বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের কাভার্ডভ্যান। কুরিয়ার অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিনেদুপুরে শহরে প্রবেশ ও গাড়ির বহনক্ষমতার অতিরিক্ত মাল বহনের জন্য ট্রাফিক অফিসকে দিতে হয় মাসিক চাঁদা। একটি সূত্রের তথ্যানুযায়ী প্রতিমাসে বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিস থেকে ৫৫ হাজার টাকা উৎকোচ আদায় করে ট্রাফিক পুলিশ। সূত্র আরও জানায়, ট্রাফিক পুলিশের দালাল চক্র আছে, যাদের মাধ্যমে প্রতিদিন ইজিবাইকপ্রতি টাকা আদায় করা হয়। শহরের বিভিন্ন মোড় থেকে প্রতিদিন ইজিবাইকপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা ও ফুটপাথের কিছু দোকান থেকে ৫০ টাকা করে উত্তোলন করে ওই চক্র। এসব দালালদের মধ্যে খালধার রোড এলাকার বাবু নিয়ন্ত্রণ করে চিত্রার মোড় এলাকা, কাজীপাড়ার টুটুল নিয়ন্ত্রণ করে জর্জকোট এলাকা, বাহাদুরপুরের নান্নু নিয়ন্ত্রণ করে দড়াটানা সদর হাসপাতাল এলাকা, কাজীপাড়ার আজিজ ও ভা-ারি নিয়ন্ত্রণ করে বকুলতলাসহ আশপাশের এলাকা। মনিহার এলাকায় কাজলসহ বেশকিছু সংঘবদ্ধ দালালচক্র যারা সক্রিয়ভাবে শহরের বিভিন্ন স্পট থেকে টাকা উত্তোলন করে বলে সূত্র জানায়। এদিকে পরিবহন সেক্টরের একটি সূত্র বলছে, ট্রাফিক পুলিশের নানামুখী হয়রানি চলছে দীর্ঘদিন ধরে। আর হয়রানি হয় টাকা না দিলেই। কাউন্টার ও পরিবহনে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকেই, আবার সব পরিবহনে কমবেশি অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া গাড়ির কাগজপত্র আপডেট থাকে নাÑ এমন পরিবহন সংখ্যায় কম নয়। আর এসব বিষয় মওকা হিসেবে ধরে গাড়ি আটকে দিয়ে কালক্ষেপণ চলে। হয়রানি ও ঝামেলা এড়াতে কাউন্টার ও পরিবহন কর্তৃপক্ষ টাকা দিয়ে থাকেন ট্রাফিক পুলিশকে। সূত্র বলছে, বাইরের জেলার গাড়িতে হয়রানির শিকার হয়। ট্রাফিক পুলিশকে হিস্যা না দিয়ে কোন বড় গাড়ি যশোর শহর পার হয়েছে এমন উদাহরণ নেই বলেও পরিবহন সেক্টরের ওই সূত্রটি জানায়। এছাড়া বেনাপোল থেকে যেসব পণ্যবাহী ট্রাক যায়, যশোরের ওপর দিয়ে তাদের কাছ থেকেও টাকা নেয়া হয়। যশোরের যেসব ট্রাক্সিস্ট্যান্ড রয়েছে, সেখান থেকেও অর্থ উত্তোলন করা হয়।
×