ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘বি’ গ্রুপে প্রথম ম্যাচে মামুনুলদের প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আফগানিস্তান

শিরোপা মিশন শুরু আজ বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫

শিরোপা মিশন শুরু আজ বাংলাদেশের

রুমেল খান ॥ দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের এবারের আসর মাঠে গড়িয়েছে বুধবার। তবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাফ মিশনটা শুরু হচ্ছে আজ থেকে। আজ ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আসরের বর্তমান শিরোপাধারী আফগানিস্তান। বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ মারুফুল হক জানিয়েছেন, প্রতিপক্ষ যত কঠিন আর শক্তিশালীই হোক জয় দিয়েই দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে চায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এটি দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের মর্যাদার লড়াই। যে শিরোপাটা একবারই ছুঁতে পেরেছে বাংলাদেশ। ২০০৩ সালে। অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটানের হাত ধরে এক যুগ আগে শিরোপা জিতেছিল লাল-সবুজরা। এরপর পার হয়ে গেছে দীর্ঘ ১২ বছর। কিন্তু সাফের শিরোপা আর ছুঁয়ে দেখা হয়নি বাংলাদেশের। অধরা স্বপ্ন সফল করতে এবার দেশী কোচে আস্থা রাখছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কোচ মারুফুল হকও আশ্বস্থ করেছেন এবার নিজেদের সেরাটা দিয়ে ভাল কিছুই উপহার দেবে তার শিষ্যরা। আর সে জন্য প্রথম ম্যাচটাতেই জয় চাই তার। পরিসংখ্যান এগিয়ে রাখছে বাংলাদেশকেই। তবে সময়ের পরিবর্তনে অনেক এগিয়ে গেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের গ্রুপে র‌্যাঙ্কিংয়ে সবার উপরে তারাই। বাংলদেশ (১৮২) আফগানিস্তান (১৫০)। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে র‌্যাঙ্কিংয়ে ৩২ ধাপ এগিয়ে তারা। শক্তিধর দল নিয়ে গত সাফের চ্যাম্পিয়নও হয়েছে তারা। তবে পরিসংখ্যানে আরেকটি দিকে বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে আফগানরা। সেটি হলো বাংলাদেশের বিপক্ষে জাতীয় অথবা বয়স ভিত্তিক কোন আসরেই জয় পায়নি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি। এর আগে বাংলাদেশ জাতীয় দল পাঁচবার মুখোমুখি হয়েছে আফগানিস্তান জাতীয় দলের। এর মধ্যে চারটিতে ড্র এর একটিতে জিতেছে লাল-সবুজরা। সর্বপ্রথম আন্তঃমহাদেশীয় বাছাইয়ে ১৯৭৯ সালে ঢাকায় ৪-১ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ। একই বছর এই টুর্নামেন্টেই ২-২ গোলে ড্র করেছিল লাল সবুজরা। ২০০৮ সালে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে গোলশূন্য ড্র। ওই বছর সাফে ২-২ গোলে ড্র করে বাংলাদেশ। এরপর এ বছরই ৩ জুন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানদের বিপক্ষে ৯০ মিনিট এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত ১-১ গোলে ড্র করেই মাঠ ছাড়েন মামুনুলরা। যদিও জাতীয় পর্যায়ে আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়টা ৩৬ বছর আগে। তবে ২০১০ সালে এসএ গেমাসে ৪-০ এবং ২০১৪ সালে এশিয়ান গেমসে ১-০ গোলে আফগানিস্তান অনুর্ধ ২৩ দলকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ অনুর্ধ ২৩ দল। কোচ মারুফুল হক বলেছেন, ‘আফগানিস্তান ভাল দল। তারা গত আসরের চ্যাম্পিয়ন। তাদের বিপক্ষে খেলতে আমরা প্রস্তুত আছি। নিজেদের সেরাটা মাঠে দিতে পারলে তাদের হারানো সম্ভব। প্রথম ম্যাচে জয় মানে সেমির পথে এগিয়ে যাওয়া। তাই নিজেদের প্রথম ম্যাচটা জয় দিয়েই শুরু করতে চাই।’ প্রস্তুতিও ভাল হয়েছে মামুনুলদের। তাই প্রথম ম্যাচটা জয় দিয়েই শুরু করতে পারবেন বলে বিশ্বাস বাংলাদেশ অধিনায়কের। তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য প্রথম ম্যাচটা জয় দিয়ে শুরু করা। প্রথম ম্যাচ জেতা মানে সেমিফাইনালের পথে ৬০-৭০ ভাগ এগিয়ে যাওয়া। এবার ক্যাম্প শুরু হওয়ার পর থেকে দলের সবাই ট্রেনিংয়ে খুব ভাল পারফর্ম করেছে, দলের সবাই নিজেদের শতভাগেরও বেশি দিয়েছে। আমরা শুধু আত্মবিশ্বাসীই না। নিজেদের সেরাটা দিয়েই ম্যাচটা জিততে চাই।’ সাফে ভাল ফলাফল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন থেকেও সর্বোচ্চটাই দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় দলকে। ন্যাশনাল টিমস কমিটির চেয়ারম্যান কাজী নাবিল আহমেদ বলেছেন, ‘আমাদের এবারের দলটি এ বছর অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। সেগুলোতে খারাপ ফল আসলেও অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। কোচ মারুফ খেলোয়াড়দের চেনে। ফলাফল আশানুরূপই হবে আশা করছি। সেমিফাইনালে উঠতে পারলে খেলোয়াড়দের জন্য ঘোষণা। আর চ্যাম্পিয়ন বা রানার্সআপ হলে সেটা হবে আনলিমিটেড। খেলোয়াড়রা যা চাইবে তাই দেয়া হবে।’ বাংলাদেশ দল ॥ শহিদুল আলম, রাসেল মাহমুদ, রানা, নাসিরুল ইসলাম নাসির, ইয়াসিন খান, ইয়ামিন মুন্না, রায়হান হাসান, তপু বর্মণ, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, আতিকুর রহমান মিশু, ওয়ালী ফয়সাল, জামাল ভূঁইয়া, জাহিদ হোসেন, মামুনুল ইসলাম, হেমন্ত ভিনসেন্ট, জুয়েল রানা, মোনায়েম খান রাজু, সোহেল রানা, নাবিব নওয়াজ জীবন, সাখাওয়াত হোসেন রনি।
×