ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিখোঁজ সাংবাদিক সজিবের লাশ ধলেশ্বরী থেকে উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫

নিখোঁজ সাংবাদিক সজিবের লাশ ধলেশ্বরী থেকে উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ নিখোঁজের তিন দিন পর মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বিটে সাংবাদিক আওরঙ্গজেব সজিবের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। স্ত্রী মোর্শেদা বেগম লাশটি শনাক্ত করার পর বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। মুন্সীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুচ আলী জানান, নয়াগাঁওয়ের ধলেশ্বরী নদীতে বিকেলে ছোট্ট একটি ছেলে গোসল করতে এসে লাশ দেখে এলাকার মহিলাদের চিৎকার করে বলতে থাকে। এক পর্যায়ে নয়াগাঁও এলাকার স্থানীয় পুরুষ-মহিলারা কচুরিপানার মধ্যে একটি লাশ দেখতে পেয়ে মুন্সীগঞ্জ পুলিশে খবর দেয়। মুক্তারপুর নৌ-ফাঁড়ি পুলিশ বুধবার বিকেল তিনটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় লাশটি উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। লাশের পরনে ছিল ফুল প্যান্ট, ফুল শার্ট ও হাতা কাটা স্যুয়েটার। লাশটি নিখোঁজ সাংবাদিক সজিবের কিনা তা নিশ্চিত করতে পরিবারের সদস্যদের খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে সজিবের এক ভাই ঘটনাস্থলে পৌঁছলে লাশটি শনাক্ত করতে পারেনি তিনি। কারণ তিন দিন পানিতে থেকে লাশটি বিকৃত হয়ে গিয়েছিল। পরে বিকেল ৫টার দিকে ঢাকা থেকে সজিবের স্ত্রী ও সন্তান এসে তাঁর পরনের কাপড় দেখে এটি সজিবেরই লাশ বলে শনাক্ত করে তারা। এর পূর্বে সোমবার সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ঢাকার সদরঘাট নৌ-ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল দিনভর মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকার ধলেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থান করলেও স্থান নির্ধারণ করতে না পারায় লাশ তল্লাশি কার্যক্রম চালাতে পারেনি। সদরঘাট নৌ-ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, সোমবার দিনভর তিনি নিজেসহ ডুবুরিদল মুক্তারপুর এলাকার ধলেশ্বরীর তীরে অবস্থান করেছেন। স্থানীয় পুলিশ কোন স্থানে লঞ্চ থেকে পড়ে নিখোঁজ হয়েছে, তা শনাক্ত করতে না পারায় তল্লাশি কাজ চালানো সম্ভব হয়নি। এদিকে নিহত সাংবাদিক সজিবের মৃত্যু নিয়ে রহস্য রয়ে গেছে। তাকে লঞ্চ থেকে ফেলে দেয়া হয়েছিল নাকি তিনি নিজে ঝাঁপ দিয়েছিলেন তাও রহস্যাবৃত্ত। কারণ পানিতে পড়ে নিখোঁজ হওয়ার পূর্বে সজিব তার মানিব্যাগ রেখে গিয়েছিলেন লঞ্চে। তাছাড়া তার বাড়ি মুন্সীগঞ্জে হওয়ায় তার চাঁদপুরের লঞ্চে ওঠার কথা নয়। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মাঝে রহস্য দানা বেঁধেছে। সাংবাদিক সজিবের লাশ উদ্ধারের খবর শুনে স্থানীয় গণমাধ্যমের সকল সাংবাদিকরা ছুটে যান তার লাশ দেখতে। পরিচিতজনরা লাশের মুখ দেখে অনেকেই তাৎক্ষণিক শনাক্ত করেছিলেন এটি সাংবাদিক সজিবের লাশ। নিহত সজিবের ভাই রাজিন আহমেদ জানান, আমার ভাই আত্মহত্যা করতে পারে না। সে আত্মহত্যা করার মতো লোক নয়। তাই তার মৃত্যু নিয়ে আমাদের মাঝে রহস্য রয়েছে। আমরা ধারণা করছি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি মোঃ ইউনুচ আলী সন্ধ্যা ৭টায় জানিয়েছেন, লাশ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গেই বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত হবে। তিনি আরও জানান, এ ব্যাপারে এখনও পরিবারের পক্ষ থেকে কোন মামলা করা হয়নি। গত রবিবার বেলা ১২টার দিকে ‘তাকওয়া’ লঞ্চে করে ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুর যাওয়ার পথে লঞ্চ থেকে পড়ে গিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ বিটে রিপোর্টার আওরঙ্গজেব সজিব নিখোঁজ হন।
×