ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পৌর নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না ॥ কূটনীতিকদের কাছে বিএনপির নালিশ

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫

পৌর নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না ॥ কূটনীতিকদের কাছে বিএনপির নালিশ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বলে সংশয় প্রকাশ করে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে কূটনীতিকদের কাছে নালিশ করেছে বিএনপি। বুধবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে পৌর নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে ঢাকায় কর্মরত বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠককালে দলের নেতারা এ নালিশ করেন। সেই সঙ্গে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কূটনীতিকদের সহযোগিতা কামনা করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বিএনপি প্রতিনিধি দলের নেতা ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, পৌর নির্বাচনের পরিস্থিতি, সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও সরকারী দলের নেতাদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, বিরোধী নেতাকর্মীদের গণগ্রেফতার, বিরোধী দলীয় প্রার্থীদের বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, নির্বাচনের আগেই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের অভাব, নির্বাচন কমিশনের আজ্ঞাবহ ভূমিকা, প্রশাসনের দলীয় ভূমিকা, বিরোধী দলের প্রার্থীদের প্রচারে বাধা ও নেতাদের ওপর হামলার বিভিন্ন ঘটনাসহ সার্বিক পরিস্থিতি কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরা হয়। আলোচনায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অর্থাৎ গণতন্ত্রের চিত্র ওঠে আসে। আজ দেশে গণতান্ত্রিক কোন স্বাধীনতা নেই তাই বিরোধী দল কোন রাজনৈতিক কর্মকা- করতে পারে না বলে তাদের জানানো হয়। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর, সুইডেন, জার্মানি, তুরস্ক ও নেপালের কূটনীতিক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তবে বৈঠক শেষে বিদেশী কূটনীতিকদের পক্ষ থেকে কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মঈন খান বলেন, পৌরসভা নির্বাচন ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। আপনারা দেখেছেন পৌরসভার ৭ জন মেয়র ও প্রায় দেড় শ’ কাউন্সিলর ইতোমধ্যে নির্বাচিত হয়ে গেছেন। এটা কিভাবে সম্ভব? এটা সম্ভব হয়েছে এ কারণে যে, পৌরসভায় একতরফা নির্বাচন হয়ে গেছে, সেখানে কোন বিরোধী দলের প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে দেয়া হয়নি। অনেকে বলছেন, দেশে যদি অনির্বাচিত সংসদ সদস্য থাকে তাহলে অনির্বাচিত মেয়র থাকতে সমস্যা কোথায়? তিনি বলেন, এ নির্বাচন আমাদের জন্য কিছু না, কিন্তু সরকারের জন্য টেস্ট কেস। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, সরকারী দলের একজন এমপি হেলিকপ্টারে চড়ে এলাকায় গিয়ে তার মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে কাগজ দাখিল করেছেন। নির্বাচন কমিশন কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় আমরা অবাক হয়েছি। ড. মঈন খান অভিযোগ করেন, গত ২ সপ্তাহে বিরোধী দলের এক হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবে নির্বাচন দিলাম কিন্তু বিরোধী দলকে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে দিলাম না, তাহলে কেমন হলো? যৌথবাহিনী এখন যে কাজগুলো করছে, সেগুলো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পক্ষে যাচ্ছে না। তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কোনকিছুই করতে পারছে না। বরং প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছে সহায়তা কামনা করছে। এটা তো হতে পারে না। এতেই প্রমাণ হয় ইসি কতটা অসহায়। বৈঠকে কূটনীতিকরা কী বলেছেন জানতে চাইলে ড. মঈন খান বলেন, সেটা তাদের জিজ্ঞাসা করেন। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রতি অবাধ ও সুষ্ঠু পৌর নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে চাই, সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পৌর নির্বাচন করবে এবং ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ-নিঃসংকোচে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা তারা নিশ্চিত করবে। তাহলে সেটা দেশের জন্যই কেবল নয়, সরকার ও আওয়ামী লীগের জন্যও মঙ্গলজনক হবে। সরকার এবং আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তিও বাড়বে। আটক নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি ফখরুলের ॥ বি.বাড়িয়া জেলা বিএনপির ৩২ জন নেতাকর্মী জামিন লাভের পরও শ্যোন এ্যারেস্টের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তাদের মুক্তির দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, জামিন লাভের পরও বারবার শ্যোন এ্যারেস্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
×