ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

নানা রঙে আঁকা একমুঠো শরীর, লম্বা ঠোঁটে মিষ্টি গান

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৫

নানা রঙে আঁকা একমুঠো শরীর, লম্বা ঠোঁটে মিষ্টি গান

মোরসালিন মিজান ॥ ছোট পাখি। একমুঠোর মতো শরীর। নানা রঙে সাজানো। সৌন্দর্য এত যে, দেখে শেষ করা যায় না! ইংরেজী নাম সান বার্ড। বাংলাদেশে মৌটুসী নামে ডাকা হয়। জাত পাত অনেক। অন্যতম একটি পার্পেল-রাম্পড সানবার্ড বা বেগুনিকোমর মৌটুসী। দেশের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়। এমনকি রাজধানী শহর ঢাকায় এরা দিব্যি আছে। একটু শুধু খেয়াল করলেই চোখে পড়বে। পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হকের মাপজোক বলে, বেগুনিকোমর মৌটুসী দৈর্ঘ্যে মাত্র ১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ডানা ৫.২ সেন্টিমিটার। লেজ ৩.৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। পাখিটি ওজনেও খুব কম। ৯ গ্রামের মতো। তবে, মজার বিষয় হলো, পাখি যত ছোট দেখতে, ততই লম্বা ঠোঁট! মাপলে সেটি ১.৭ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। অত্যন্ত সরু ঠোঁটের অগ্রভাগ নিচের দিকে সামান্য ঝুঁকে থাকে। সুবিধাটি কাজে লাগিয়ে ফুল থেকে খুব সহজেই মধু সংগ্রহ করতে পারে এরা। আর তখনই দেখা যায় ভাল। খুঁটিয়ে দেখলে অবাক হতে হয় শুধু। এইটুকুন পাখিকে প্রকৃতি যেন রং তুলিতে নিখুঁত এঁকে নিয়েছে! গানও গায় চমৎকার। গোলাকার চোখের মাঝখানটা বাদমী। এ অংশকে বৃত্তাকারে ঘিরে রাখে লাল রঙের আউট লাইন। পায়ের রং কালো। ১.৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। বেগুনিকোমর মৌটুসী নাম শুনে মেয়ে পাখি বলেই মনে হয়। আদতে এই নামে আছে ছেলে পাখিও। উভয়ের রং রূপ আলাদা। মেয়ে পাখিগুলো মেয়েদের মতোই সুশ্রী। আদুরে। ছেলে পাখি যে কম সুন্দর, তা নয়। বরং মেয়ে পাখিদের মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মতো আকর্ষণীয়! নামের সঙ্গে হুবহু মিলে যায় কোমরের রং। হ্যাঁ, বেগুনিকোমর। গলাও বেগুনি। ডানা ও লেজের উপরের আচ্ছাদক কালচে বাদামী। মাথার চাঁদি ও কাঁধের পট্টি ধাতব সবুজ। মাথার পাশে আবার মেরুন রং। পাখির বুক ও পেটের অংশটি বিশেষ চোখে পরে। কাঁচা হলুদ বেটে কেউ যেন মাখিয়ে দিয়েছে সেখানে! ডানা মেলে ওড়ার সময় এ অংশটি চমৎকারভাবে দৃশ্যমান হয়। পাখির দেহের পেছনের অংশ, কাঁধ-ঢাকনি গাঢ় তামাটে ও মেরুন রঙে সাজানো। এভাবে নানা রঙে প্রকাশিত হয় বেগুনিকোমর মৌটুসী। রাজধানী শহর ছাড়াও চট্টগ্রাম খুলনা ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন গ্রামে পাখিটি দেখা যায়। সুন্দর এ পাখি বেঁচে থাকুক- আমাদের তাই প্রত্যাশা।
×