ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিউজিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫

নিউজিল্যান্ডের কাছে হোয়াইটওয়াশ শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শেষ পর্যন্ত হ্যামিল্টন টেস্টে কোন নাটকীয়তার জন্ম দিতে পারেনি সফরকারী লঙ্কানরা। কেন উইলিয়ামসনের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির (১০৮*) ওপর ভর করে একদিন বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের বড় ব্যবধানে ম্যাচটা জিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। সেই সঙ্গে দুই টেস্টের সিরিজে অতিথিদের ‘হোয়াইটওয়াশ’ করল কিউইরা। ম্যাচের ‘নায়ক’ উইলিয়ামসনের ব্যাটে ভর করে ৫৪.৩ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ১৮৯ রান তুলে নেয় ব্রেন্ডন ম্যাককুলামের দল। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ২৩৭। আর শ্রীলঙ্কা অলআউট হয় ২৯২ ও ১৩৩ রানে। এ নিয়ে ঘরের মাটিতে টানা ১৩ টেস্টে অপরাজিত থেকে নিজেদের পুরনো রেকর্ড স্পর্শ করল কিউইরা। সব মিলিয়ে সিরিজে দুরন্ত ব্ল্যাক ক্যাপসদের কাছে পাত্তাই পেল না এশিয়ান ক্রিকেটের পরাশক্তি শ্রীলঙ্কা। দুটি ম্যাচেই বাজেভাবে হারল এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের দল। তৃতীয় দিন শেষেও হ্যামিল্টনে ছিল জমে ওঠার ইঙ্গিত। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের চাই ৪৭ রান; লঙ্কানদের সম্ভাবনও কম ছিল না, ঘাসে ভরা সেডন পার্কে কোনমতে স্বাগতিকদের ৫ উইকেট তুলে নিতে পারলেই হলো! একদিকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ক্রিজে ‘সুপার’ উইলিয়ামসন, অন্যদিকে লঙ্কানদের পেস আক্রমণে চামিরা চমক। নাটকীয় সমাপ্তির অপেক্ষায় ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। ছিল রোমাঞ্চকর চতুর্থ দিনের প্রতিশ্রুতি। কিন্তু শেষ অবধি রোমাঞ্চের সেই মঞ্চটা পুরোপুরি দখল করে নিল নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা। আরও নির্দ্দিষ্ট করে বললে ব্যাট হাতে লঙ্কানদের আশার ফানুশটাকে চুপসে দিলেন উইলিয়ামসন একাই। তার অনবদ্য সেঞ্চুরিতেই জয়ের বন্দরে ভিড়তে আর উইকেট হারতে হলো না স্বাগতিকদের। ম্যাচটা তারা জিতে নিল সেই ৫ উইকেট অক্ষত রেখে, সঙ্গে শ্রীলঙ্কার মতো পরাশক্তিকে ২-০তে ‘হোয়াইটওয়াশ’। অথচ টেস্টটা জিতে সিরিজ সমতায় শেষ করার সুযোগ ছিল ম্যাথুসদের। বিশেষ করে প্রথম তিনদিনে বোলাররা যেভাবে দাপট দেখিয়েছেন, তাতে কিউইদের শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের প্রাণ বধ করাটা লঙ্কানদের জন্য অসম্ভব ছিল না। বিশেষ করে তরুণ দুশমান্থা চামিরা যেভাবে জ্বলে উঠেছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো শেষ পর্যন্ত সেই সম্ভাবনার ধারের কাছেও যেতে পারেননি তারা। চামিরা-সুরাঙ্গা লাকমল আর রঙ্গনা হেরাথদের অকার্যকর বানিয়ে এক উইলিয়ামসনই ম্যাচটা দারুণভাবে বের করে নিয়েছেন। যে সেডন পার্ক মোটেই ‘পয়া’ নয়, এখানে নিজেদের শেষ ৬ টেস্টের ৪টিতেই হার ম্যাককুলামদের, সেখানেই কি না অনন্য এক রেকর্ডের সাক্ষী হলো কিউইরা। এই জয়ের মধ্য দিয়ে ঘরের মাটিতে টানা ১৩ টেস্টে অপরাজিত নিউজিল্যান্ড। ২০১২ থেকে ৬ ড্র’র বিপরীতে জয় ৭টিতে। এর আগে ১৯৮৭-১৯৯১ পর্যন্ত ঘরের মাটিতে টানা ১৩ টেস্টে অপরাজেয় ছিল দলটি। দারুণ এই অর্জনের মধ্য দিয়ে ম্যাককুলাম নিজেকে একজন সফল অধিনায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চলেছেন। এ নিয়ে তার নেতৃত্বে ১১ টেস্ট জিতল নিউজিল্যান্ড, যা দেশটির ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট জয়ের সমান। যৌথভাবে এ তালিকায় তার পাশে আছেন সাবেক অধিনায়ক জিওফ হওয়ার্থ। রেকর্ডটা অবশ্য স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের। ২৮ টেস্ট জিতে সবার ওপরে তুখোড় জনপ্রিয় এই সাবেক ক্যাপ্টেন। কিসের নাকট-ফাটক উইলিমাসন কাল শ্রীলঙ্কানদের কোনরকম সুযোগই দেননি। ৭৮ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেন তিনি। সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান বিজে ওয়াটলিং। কিন্তু চতুর্থ দিনে দু-জনে মিলে ১২ ওভারেই খেল খতম করে দেন! উইলিয়ামসন ১০৮ ও ওয়াটলিং ১৩ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। এ নিয়ে ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ৫ সেঞ্চুরি হাঁকালেন উইলিয়াসন, রেকর্ড সর্বোচ্চ ৯০.১৫ গড়ে করলেন ১১৭২ রান! দু-দল পাঁচ ওয়ানডে ও দুই ম্যাচের টি২০তে মুখোমুখি হবে। ক্রাইস্টচার্চে প্রথম ওয়ানডে ২৬ ডিসেম্বর।
×