ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্ব ফুটবলে ব্লাটার-প্লাতিনি নিষিদ্ধ

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫

বিশ্ব ফুটবলে ব্লাটার-প্লাতিনি নিষিদ্ধ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অনেকটা নিজের পাতা ফাঁদেই আটকে গেলেন সেপ ব্লাটার। ফিফাকে স্বচ্ছ রাখতে তিনিই এথিকস কমিটির জন্ম দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই কমিটিই ফিফা সভাপতি ব্লাটারকে ফুটবলের সব ধরনের কর্মকা- থেকে আট বছর নিষিদ্ধ করেছে। একই পরিণতি হয়েছে উয়েফা সভাপতি মিশেল প্লাতিনিরও। তাকেও একই সময়ের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় বিশ্ব ফুটবলের সদর দফতর সুইজারল্যান্ডের জুরিখ থেকে ফিফার এথিকস কমিটি সোমবার এ রায় দিয়েছে। অবিলম্বে রায় কার্যকরেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ফিফার এথিকস কমিটি ১৯৯৮ সাল থেকে সভাপতির দায়িত্বে থাকা ব্লাটারকে ৫০ হাজার সুইস ফ্রাঁ এবং উয়েফা সভাপতি ও ফিফার সহ-সভাপতি প্লাতিনিকে ৮০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানাও করেছে। ফিফার আদালত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দু’জনই ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। পরস্পর বিরোধী স্বার্থে দু’জনই অপরাধী। আদালত জানায়, ব্যক্তিগত শুনানিতে ব্লাটার লেনদেনের কোন বৈধ যুক্তি উপস্থাপন করতে পারেননি। তিনি মৌখিকভাবে যে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন তা প্রত্যাখ্যান করেছে আদালত। প্লাতিনিও তার ওই অর্থ গ্রহণের পক্ষে জোরালো কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেননি। ফরাসী কিংবদন্তি ফুটবলারের প্রতি আদালত আরও বেশি রুষ্ট হয়ে বলেন, প্লাতিনি তার যোগ্যতা ও সততা প্রদর্শনে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি নিজের দায়িত্বের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। তার আচরণ নৈতিকতা পরিপন্থী। যা প্রয়োগযোগ্য সব ধরনের আইনকেই ছাড়িয়ে গেছে। এমনকি ফিফার যে কাঠামো আছে তার আলোকেও এটি গ্রহণযোগ্য নয়। ২০১১ সালে আর্থিক লেনদেন নিয়ে অস্বচ্ছতার অভিযোগ উত্থাপিত হয় ব্লাটার-প্লাতিনির বিরুদ্ধে। ফিফার একটা প্রকল্পের জন্য পরামর্শক হিসেবে ২০ লাখ ডলার নিয়েছিলেন প্লাতিনি। সেটা হয়েছিল ব্লাটারের মধ্যস্থতায়। অভিযোগ উঠে, ওই লেনদেনে ফিফার স্বার্থ রক্ষিত হয়নি। পরিবর্তীতে ফিফার নৈতিকতা কমিটি দুজনকে ৯০ দিনের জন্য নিষিদ্ধ করে। প্লাতিনি অবশ্য সর্বোচ্চ ক্রীড়া আদালতেও সাময়িক এ শাস্তি প্রত্যাহারের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। অবশ্য দু’জনরেই দাবি করেন, ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত উপদেষ্টার দায়িত্ব পালনের পারিশ্রমিক বাবদ ওই অর্থ লেনদেন হয়েছে। যদিও ওই কাজের কোন প্রমাণ নেই। প্লাতিনির মতে এটি করা হয়েছে ‘মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে।’ নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ক্রীড়া আদালত কোর্ট ফর আর্বিট্রেশন ফর স্পোর্টসে (সিএএস) দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছে ব্লাটার-প্লাতিনি। দু’জনই তাদের বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ব্লাটার বলেন, আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে এথিকস কমিটি। আর প্লাতিনি বলেছেন, তার সঙ্গে ছদ্মবেশে নোংরামি করা হয়েছে। তিনি জানান, এই সিদ্ধান্তে আমি অবাক হয়নি। কারণ সব কিছু আগেভাগেই ঠিক করা হয়েছে। দুঃসময়ে প্লাতিনির পাশে আছে ইউরোপিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (উয়েফা)। সংস্থাটি ফিফার এই সিদ্ধান্তকে বিরক্তিকর হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
×