ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

১৯৫ যুদ্ধাপরাধী বনাম আটকে পড়া বাঙালী

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫

১৯৫ যুদ্ধাপরাধী বনাম আটকে পড়া বাঙালী

(২১ ডিসেম্বর সম্পাদকীয় পাতার পর) আটকে পড়া বাঙালীদের ফেরত আনার জন্য তাদের পরিবার ঢাকাসহ সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। প্রয়োজনে যুদ্ধাপরাধীদের বিনিময়ে তাদের স্বজনদের ফেরত আনার দাবি জানাতে থাকে। এই দাবিতে তারা সমাবেশ এবং অনশন পালন অব্যাহত রাখে। ১৯৭২ সালের ৪ মে ঢাকাজুড়ে জনতার বিক্ষোভ মিছিল বের হয় বাঙালীদের ফিরিয়ে আনার দাবিতে। সরকারের ওপর তারা ক্রমাগত চাপ বাড়াতে থাকে। আটকে পড়া বাঙালীদের ব্যাপারে বাংলাদেশ তখন বিশ্ব জনমতের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করে। বাংলাদেশ এ ব্যাপারে জাতিসংঘের মহাসচিবের সাহায্য কামনা করে ভারতের মাধ্যমে আবেদন জানায়। অপরদিকে হানাদার বাহিনীর নৃশংসতায় নিহত শহীদদের পরিবারগুলো সারাদেশে সভা-সমাবেশ করতে থাকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সরকার দালাল আইন জারি করে। আলবদর, আলশামস, রাজাকারসহ দালালদের গ্রেফতার অব্যাহত রাখে এবং বিচারকাজ শুরু করে। চীনাপন্থী দল, উপদল ও গ্রুপ এবং মওলানা ভাসানী এই আইন বাতিলের দাবি জানাতে থাকেন। তারা এই আইনে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না বলে সভা-সমাবেশ ও মিছিলে হুঁশিয়ারি জারি করে। পাশাপাশি মুজাফফর ন্যাপ, সিপিবিসহ কয়েকটি দল আটকেপড়া পাকিস্তানীদের দ্রুত পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর দাবি তুলতে থাকে। নানামুখী চাপে তখন বঙ্গবন্ধু সরকার। অপরদিকে ভুট্টো বুঝতে পেরেছেন, আটকেপড়া বাঙালীদের ফেরত নিতে শেখ মুজিবের সরকার চাপের মুখে রয়েছে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে দেরি না করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীতে কর্মরত সেনাসদস্য ও চাকরিজীবী কয়েক শ’ বাঙালীকে গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগ এনে গ্রেফতার করে। বঙ্গবন্ধু তাদের মুক্তি প্রদানের দাবি জানালেও ভুট্টো তাতে সাড়া দেননি বরং আটকেপড়াদের বিনিময়ে সকল যুদ্ধবন্দীকে ফেরত নিতে ষড়যন্ত্র আঁটে। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভুট্টো বিহারি অধ্যুষিত সিন্ধুপ্রদেশে ‘বিহারি বাঁচাও’ নামে মিছিল সমাবেশ করান এবং আন্তর্জাতিক মহলকে এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে আবেদন জানালেও বাংলাদেশ থেকে ফেরত নেয়ার ব্যাপারে কোন আগ্রহ দেখায়নি। ১৯৮৯ সালে দিল্লী হতে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ এ্যান্ড ইন্ডিয়ান ওমান এরিয়াস’ গ্রন্থে অধ্যাপক ডেনিস রাইট উল্লেখ করেছিলেন সে সময়ের কথা ‘বিকৃত বিচারের বদলে যুদ্ধাপরাধীদের প্রশ্নটি বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় দেশের জন্যই একটি ‘কূটনৈতিক তুরুপের তাস’-এ পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ তাকে ব্যবহার করছে পাকিস্তানের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য। আর পাকিস্তান স্বীকৃতি দেয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে দাবি করছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নাকচ করার জন্য।’ যুদ্ধবন্দী পাকিস্তানী সেনাদের নিয়েও বিপাকে পড়ে ভারত। জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী এদের নিরাপত্তা, খাওয়া-দাওয়াসহ ভরণ-পোষণ এবং ভাতা প্রদান করতে হতো ভারতকেই। এ খাতে প্রতিমাসে ব্যয় দাঁড়াচ্ছিল এক লাখ ডলারের বেশি। যুদ্ধ শেষ, যুদ্ধবিরতি চুক্তিও সই হয়েছে, পরাজিতরা আত্মসমর্পণও করেছে, সুতরাং তাদের আর আটকে রাখার পক্ষে কোন যুক্তিও ভারতের সামনে তখন ছিল না। ভারত আকাশবাণীর বিশেষ চ্যানেল চালু করে, যেখান থেকে যুদ্ধবন্দীরা পাকিস্তানে তাদের পরিবারের কাছে নিজের অবস্থা জানান দিয়ে বার্তা প্রচার করতে থাকে। তাই দেখা যায়, বিষয়টির নিষ্পত্তির জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব কুর্ট ওয়াল্ডাইম ভারত সফরে এসে ইন্দিরা গান্ধীকে পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পরামর্শ দেন। ইন্দিরা অবশ্য সরাসরি জানিয়ে দেন, বাংলাদেশের মতামত অগ্রাহ্য করে ভারত একতরফাভাবে কিছু করতে পারে না, করবেও না। ইন্দিরা জানতেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে শেখ মুজিব দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের প্রথম তালিকায় ১৫০০ পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্যের নাম প্রকাশ করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী যথাযথ তথ্য প্রমাণ হাজির করার ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় তালিকা কমিয়ে আনে। শেষে তা দাঁড়ায় ১৯৫ জনে। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে গঠিত বাংলাদেশের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি এই তালিকা করে। ১৯৭৩ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে যুদ্ধবন্দী বিষয়ে প্রথম আইন পাস করা হয়। দিল্লী থেকে ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত ‘ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ; সার্চ ফর নিউ রিলেশনশিপ’ গ্রন্থে অধ্যাপক মুহম্মদ আইউব লিখেছেন, ‘ভুট্টো জানতেন, তার দেশের আটক যুদ্ধবন্দী ভারতের জন্য বোঝাস্বরূপ। আজ বা কাল হোক, ভারতকে সব যুদ্ধবন্দীকে ছেড়ে দিতেই হবে। ফলে এই প্রশ্নে দেন-দরবার করে কোন বাড়তি ফায়দা আদায় হবে না। ভুট্টো বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন ও হেনস্থা করার জন্য উঠে পড়ে লাগেন। পুরো ১৯৭২ সাল তাই ভুট্টো বাংলাদেশকে ভারতের অধিকৃত অঞ্চল বলে ঘোষণা করতেন। ১৯৭২ সালের ১০ আগস্ট এক সংবাদ সম্মেলনে ভুট্টো বলেন, ‘বাংলাদেশ ভেবেছে যে, আমাদের বন্দীদের মুক্ত করার ব্যাপারে তাদের ভেটো ক্ষমতা আছে। ভেটো আমাদের হাতেও একটা আছে।’ ভুট্টো জানান যে, ‘পাকিস্তানের অনুরোধে চীন জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের বিষয়ে ভেটো দেবে।’ সে সময় সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক সাহায্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সুতরাং জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে। তাই বাংলাদেশ সাহায্য পাওয়ার জন্য আবেদন করে। ২৫ আগস্ট চীন নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের সদস্যপদ লাভের বিষয়ে ভেটো দেয়। বাংলাদেশের অপরাধ তখন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করা। তদুপরি বাংলাদেশ বিচারের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। দূতিয়ালির জন্য বঙ্গবন্ধু চীনেও প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন গোপনে। চীন তখন পাকিস্তানের বিষয়ে অন্ধ এবং গণহত্যাকারীদের বিচারের বিপক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়। ফলে বাংলাদেশের দূতিয়ালি সফল হতে পারেনি। চীন বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেছিল পুরো একাত্তর সালসহ ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। ১৯৭২ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ভুট্টো ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় প্রদত্ত এক সাক্ষাতকারে উল্লেখ করেন, ‘কয়েক শ’ পাকিস্তানী বন্দীকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে বিচার করার জন্য রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয়া হলে তার আপত্তি নেই। কিন্তু ১৯৭৩ সালে ভুট্টো তার মত পরিবর্তন করে বলেন, ‘পাকিস্তানী বন্দীদের বিচার করা হলে সে আটকেপড়া বাঙালীদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ (হু কিল্ড মুজিব, এএল খতিব)। ১৯৭২ সালের নবেম্বরে ভারতে আটক পাকিস্তানী সেনাপরিবারের প্রায় ৬ হাজার সদস্যকে মুক্তি দেয়। বিপরীতে পাকিস্তানও আটকেপড়া ১০ হাজার বাঙালী নারী ও শিশুর একটি দলকে বাংলাদেশে প্রত্যাবাসনে সম্মত হয়। কিন্তু পাকিস্তানে আটক অধিকাংশ বাঙালীর কী হবে, সে নিয়ে উৎকণ্ঠা বাড়তে থাকে বাংলাদেশের। যুদ্ধবন্দী ও আটকেপড়া বাঙালীদের বিনিময় নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতার আড়ালে চাপা পড়ে যেতে থাকে আটকেপড়া পাকিস্তানী তথা বিহারিদের ফেরত যাওয়ার বিষয়টি। জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন এদের শরণার্থী হিসেবে মর্যাদা দেয়। এরা যেসব ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়, তা জেনেভা ক্যাম্প নামে পরিচিত হয়ে ওঠে। প্রায় ৬ লাখ বিহারি পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে সে দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত হয়। এদের একটা অংশ ১৯৭২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মিরপুর দখল করে রেখেছিল। আল শামস বাহিনীর সদস্যও ছিল এরা। ১৯৪৭ সালের পূর্ব হতেই ব্রিটিশদের কূটকৌশলে বিহার থেকে এরা এদেশে আসে রেলসহ অন্যান্য সেক্টরে কাজের জন্য। পাকিস্তান যুগে এদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃজনে এরাই প্রধান নৃশংস ভূমিকা রেখেছিল। প্রচ-ভাবে বাঙালীবিদ্বেষী বিহারিরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় জায়গা জমি দখল করে গোত্রভুক্ত হয়ে থাকত। ১৯৭১ সালের মার্চে এরা বিভিন্ন স্থানে বাঙালীর ওপর হামলা চালায়। আর পুরো নয় মাস গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটে এরা পাকিস্তান বাহিনীর বিশ্বস্ত হিসেবে নৃশংস হয়ে উঠেছিল। এদের একটি বড় অংশ অর্থাৎ বিত্তবানরা ডিসেম্বরের আগেই পাকিস্তান চলে যায়। দরিদ্র বিহারিরা আর পালানোর পথ পায়নি। পাকিস্তানী হানাদাররাও এদের সঙ্গে নিয়ে যায়নি। এই আটকেপড়ারা পাকিস্তান যাওয়ার জন্য চার দশকেরও বেশি অপেক্ষমাণ। যুদ্ধাপরাধী বিচারের পথ বন্ধ করতে পাকিস্তানের কূটনৈতিক তৎপরতা এগিয়ে যেতে থাকে। ১৯৭৩ সালের ১০ জানুয়ারিতে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় লেখা হয়, ’যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান শেখ মুজিবকে পরামর্শদান উপলক্ষে জানিয়ে দিয়েছে যে, একটি বিপুলসংখ্যক যুদ্ধবন্দী ও বেসামরিক ব্যক্তিদের বিচার করা হলে পাকিস্তানের হতোদ্যম জনগণের মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হবে, প্রেসিডেন্ট ভুট্টো তা সামলাতে পারবে না এবং এর ফলে উপমহাদেশে শান্তি স্থাপন সম্পর্কিত আলাপ-আলোচনা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ যুদ্ধাপরাধী বিচার প্রত্যাহারের জন্য এটাই প্রথম বিদেশী চাপ তা নয়, শুধু যুক্তরাষ্ট্র বা ব্রিটেন এ ধরনের পরামর্শ দিয়েছে, তাও নয়। ১৯৭১ সালে যখন পাকিস্তানী হানাদাররা বাংলাদেশে গণহত্যায় লিপ্ত, তখন যেসব মুসলিম দেশ এসবেরও প্রতিবাদ করেনি, তারা ১৯৫ পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীর জন্য গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে। বিশেষত, মধ্যপ্রাচ্যের ধনী দেশগুলো। এর মধ্যে সবচে’ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, পাকিস্তানে আটকেপড়া বাঙালীদের ভাগ্যের সঙ্গে পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের ভাগ্য বিজড়িত হয়ে পড়ে। তখন ১৭ এপ্রিল, ১৯৭৩ সালে টানা চারদিনের আলোচনা শেষে বাংলাদেশ ও ভারতে যৌথ ঘোষণায় যুগপৎ প্রত্যাবাসনের প্রস্তাব রেখে বলে, যুদ্ধবন্দী, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে আটক সব নাগরিককে একযোগে নিজ নিজ দেশে পাঠানো হবে। তার আগে তিনটি দেশ নাগরিকদের ৭টি ক্যাটাগরি প্রণয়ন করেছিল। এই তালিকায় আটকেপড়া বাঙালী ও বিহারি ছাড়াও পাকিস্তানের যুদ্ধবন্দী ও যুদ্ধাপরাধীরা অন্তর্ভুক্ত ছিল। পাকিস্তান এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেনি। তাই প্রস্তাব আনা হয়, ভারত সেদেশে আটক প্রায় ১০ হাজার বন্দীকে পাকিস্তানের কাছে হস্তান্তর করবে। বিনিময়ে পাকিস্তান সেদেশে আটকে থাকা বাঙালীদের মধ্যে দু’লাখকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে। এছাড়া বাংলাদেশে আটক প্রায় দু’লাখ ৬৩ হাজার অবাঙালী তথা বিহারিকেও পাকিস্তান ফেরত নেবে। তারপরও বাংলাদেশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি হতে সরে আসেনি। এমনকি অভিযুক্ত পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদের এই প্রত্যাবাসন প্রস্তাবের বাইরে রাখে। যুগপৎ এই প্রত্যাবাসনে ভুট্টো সায় দিলেও মাত্র ৫০ হাজার বিহারিকে ফেরত নিতে রাজি হয়। তবে ভুট্টো বাংলাদেশে পাকিস্তানী সেনাদের বিচারের তীব্র প্রতিবাদ জানায়। সদম্ভে ঘোষণা করে, ‘বাংলাদেশ যদি অভিযুক্ত পাকিস্তানীদের বিচার করে, তাহলে তিনি পাকিস্তানে আটক বাংলাদেশের নাগরিকদের একই রকম ট্রাইব্যুনালে বিচার করবেন।’ ১৯৭৩ সালের ২৭ মে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ভুট্টো বলেন, ‘বাঙালীদের এখানে বিচার করার দাবি জনগণ করবে। আমরা জানি বাঙালীরা যুদ্ধের সময় তথ্য পাচার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হবে। কতজনের বিচার করা হবে, তা এখনই বলতে পারছি না। বাংলাদেশ যদি পাকিস্তানী সেনাদের বিচার করে, তাহলে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ক্যু’র মাধ্যমে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সরকারের পতন ঘটাবে এবং দুই দেশের পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যাবে। এই চক্রান্তের জন্য ইতোমধ্যেই পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কয়েক শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।’ চলবে...
×