ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের মূলধন বিনিয়োগ সীমার বাইরে

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ছে

প্রকাশিত: ০৪:১৪, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫

পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ছে। জানুয়ারি থেকে বিষয়টি কার্যকর হবে। রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী বছরের জানুয়ারি হতে তফসিলি ব্যাংকসমূহ কর্তৃক বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে প্রদত্ত মূলধনের বিপরীতে ধারণকৃত ইক্যুয়িটি শেয়ার পুঁজিবাজার বিনিয়োগ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত হবে না। এর আগে ২০১৩ সালে কোম্পানি আইনকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা দেখা দেয় পুঁজিবাজারে। বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা শেষে দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজারের উন্নয়নে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের ফলে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ আরও বাড়বে। ফলে গতিশীল হবে বাজার। যার ইতিবাচক প্রভাব দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে পড়বে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে ইবিএল সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ছায়েদুর রহমান তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়বে। এতে বাজার আরও গতিশীল ও প্রাণবন্ত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বাজারের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত ইতিবাচক। কারণ এতে ব্যাংকগুলোর শেয়ার কেনার ক্ষমতা বাড়বে। আর যাদের নির্ধারিত সীমার চেয়ে অতিরিক্ত বিনিয়োগ রয়েছে তা আর সমন্বয় করতে হবে না। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, এর আগে বাজারে ব্যাংকগুলোর মোট দায়ের ১০ শতাংশ বাজারে বিনিয়োগ করা যেত। কিন্তু ২০১৩ সালে আইনটি পরিবর্তন করা হয়। পরিবর্তিত আইনে মোট মূলধনের ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করার বিধান রাখা হয়। ফলে অনেক ব্যাংককেই শেয়ার বিক্রির আদেশ দিতে হয়। বাজারে নানা অস্থিরতা তৈরি হয়। কোন রকম আলাপ-আলোচনা ছাড়াই বাংলাদেশ ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে আইনে উল্লেখ করে দেয়া হয় যে, যেসব ব্যাংকের অতিরিক্ত বিনিয়োগ রয়েছে, ওইসব প্রতিষ্ঠানকে ২০১৬ সালের জুন মাসের মধ্যে তা সমন্বয় করতে হবে। তবে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এমন ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে যে, এ সময় আরও দুই বছর বাড়ানো হবে। বাজার সংশ্লিষ্টদের অন্যান্য দাবির মধ্যে একটি ছিল, ব্যাংকগুলোর সাবসিডিয়ারি কোম্পানির বিনিয়োগকে ব্যাংকের বিনিয়োগের মধ্যে না অন্তর্ভুক্ত করা। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ সুদে মূল প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে থাকে। ফলে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগটি শুধুমাত্র সহযোগী বা সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানেরই মূলধন। মূল ব্যাংকের বিনিয়োগের সঙ্গে এটির কোন সামঞ্জস্য নেই। ফলে এটি নিয়েও নানা আলোচনা সমালোচনা হচ্ছিল। এর আগে বিষয়টির সুরাহা করতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে শুরু করে বাজার সংশ্লিষ্ট নীতি-নির্ধারকরা দফায় দফায় বৈঠক করেন। সর্বশেষ বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০১৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজার ও দেশের অর্থনীতির স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও নমনীয় হতে হবে। অবশেষে পুুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতার স্বার্থে কিছুটা নমনীয় হলো বাংলাদেশ ব্যাংক।
×