ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

র‌্যাবের জরিমানা

ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগ নির্ণয়ে টেকনিশিয়ান

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫

ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগ নির্ণয়ে টেকনিশিয়ান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ডাক্তার নেই। টেকনিশিয়ান দিয়েই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগ নির্ণয়ের রিপোর্ট স্বাক্ষর করা হয়। মেয়াদ নেই- তবুও সেই রাসায়নিক পদার্থ দিয়েই রিপোর্ট তৈরি করা হয়। লাইসেন্স নেই সেই কবে থেকেই। তারপরও দিব্যি চলছে ক্লিনিক। এই যখন অবস্থা- তখন কি আর র‌্যাব হানা না দিয়ে পারে। এমন তথ্য হাতে নিয়েই শনিবার দুপুরে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম সারওয়ার অভিযান চালান। জরিমানা করেন পাঁচটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে। এগুলো হচ্ছে পদ্মা প্যাথলজি ল্যাব, শাইখ ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক মেডিনেট মেডিক্যাল সার্ভিসেস, মেডিসন ডায়াগনস্টিক ও আমানত ডায়াগনস্টিক। এ পাঁচটিকে অর্থ জরিমানা করা হয় মোট ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা। ঘটনাস্থল মিরপুর এক নম্বর গোলচক্করের পাশের সেই আলোচিত মার্কেট। যেখান রয়েছে সারি সারি মার্কেট। আছে অনেক ফার্মেসি, রোগ নির্ণয়ের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ছোট বড় হাসপাতাল। এখানেই রমরমা বাণিজ্য করে আসছিল এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট যখন একের পর এক সেন্টারে হানা দেন তখন দৌড়াদৌড়ি শুরু হয় ওখানকার মালিক-কর্মচারীদের। প্রথমে যান তিনি পদ্মা প্যাথলজি ল্যাবে। দেখেন লাইসেন্সের মেয়াদ চলে গেছে সেই অনেক আগেই। তারপরও চালানো হচ্ছে রমরমা ব্যবসা। শুধু এ অপরাধেই এর মালিককে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সঙ্গে শর্ত দেয়া হয়- ১৫ দিনের মধ্যেই লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। একই অভিযোগে মেডিসনকেও জরিমানা করা হয় ৩ লাখ টাকা। বাকিগুলোকে ২ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয় মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দিয়ে মেডিক্যাল রিপোর্ট তৈরির জন্য। সবচেয়ে বড় অভিযোগ, এগুলোর একটিতেও ছিল না ডাক্তার। অথচ সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে দেশের শীর্ষ কয়েক বিশেষজ্ঞের নাম। ডাক্তার না থাকলেও তৈরি করা হয় রিপোর্ট। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম সারওয়ার বললেন সুনির্দিষ্ট ফরমেটে তৈরি করা প্যাডে রোগের বিবরণ দেয়া থাকে। সেগুলোতে রিপোর্টের ফাইন্ডিংস লিখে স্বাক্ষর করা হয় ডাক্তারের নামে। অর্থাৎ এখানেও ডাক্তারের স্বাক্ষর নকল করা হয়- যা কোন সচেতন রোগীর পক্ষেও আঁচ করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই রোগীরা প্রতারণার শিকার হলেও তাদের পক্ষে করার কিছুই থাকে না। জটিল রোগ শনাক্ত করার কাজে যে কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় সেগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ। ফলে এমনও ঘটেছে যে রোগ না থাকলেও রোগের রেজাল্ট আসে। তখন রোগী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরামর্শেই আরও অর্থবহুল চিকিৎসার দিকে ঝোঁকে। এভাবেই মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছিল এসব সেন্টারে।
×