ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড ও টেন্ডার নিয়ে কোন্দলের জের

ফের ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলি ॥ ইবি বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২০ ডিসেম্বর ২০১৫

ফের ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষ, গুলি ॥ ইবি বন্ধ ঘোষণা

ইবি সংবাদদাতা ॥ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড এবং টেন্ডারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে গতকাল আবারও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় গ্রুপের ১০ জন কর্মী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা ও বিকেল ৫টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুর ১টার দিকে সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল সকাল থেকে দলীয় টেন্ট ও বিজ্ঞান ভবনের পাশে মুখোমুখি অবস্থান নেয় উভয় দলের নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে দুপুর ১টার দিকে হালিম, আরাফাতের নেতৃত্বে শিশির ইসলাম বাবুর বিচার দাবিতে মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় টেন্টের সামনে এসে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সেøাগান দিতে থাকে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দলীয় টেন্টে অবস্থানকারী সভাপতি গ্রুপ তাদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া করে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে উভয় পক্ষ গুলিবিনিময় করে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম গ্রুপকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর সহ-সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা ধাওয়া দিলে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা দলীয় টেন্ট ছেড়ে আবাসিক এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় সহ-সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা দলীয় টেন্টে অবস্থান নেয়। সংঘর্ষে সভাপতি গ্রুপের আব্দুর রহিম, মনির খান, আতাউর রহমান, সোভন, এনায়েত করিম তপু এবং সহ-সভাপতি গ্রুপের বহিরাগত ক্যাডার বসির, কামরুল ইসলাম অনিকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। আহতদের ইবি চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর বেলা ২টার দিকে সহ-সভাপতি গ্রুপের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে উপাচার্যবিরোধী মানববন্ধন করে। এ বিষয়ে সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজু গ্রুপের কর্মী জুয়েল রানা হালিম বলেন, আমরা মিছিল বের করলে সভাপতি গ্রুপের কর্মীরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আমরা তাদের পিটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছি। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনের একটি অংশের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এর প্রতিহত করেছি। এদিকে এ ঘটনার জের ধরে ক্যাম্পাস বন্ধের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের এক জরুরী সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বলে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। শনিবার বিকেল ৫টার মধ্য সকল আবাসিক শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় প্রশাসন। শীতকালীন ছুটি শেষে আগামী ৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হবে। এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, ক্যাম্পাসে একটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার কারণে শীতকালীন ছুটি এগিয়ে রবিবার থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। শীতকালীন ছুটি শেষে ক্যাম্পাস আবারও স্বাভাবিকভাবে চলবে।
×