ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মুন্সীগঞ্জে ৬৯টি ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী উদ্বোধন

প্রকাশিত: ০০:১৬, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

মুন্সীগঞ্জে ৬৯টি ভ্রাম্যমান লাইব্রেরী উদ্বোধন

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ॥ মুন্সীগঞ্জে ৬৯টি ভ্রাম্যমান লাইব্রেরীর যাত্রা শুরু হয়েছে। জেলা ৬৭টি ইউনিয়ন এবং ২টি পৌরসভায় একটি করে এই লাইব্রেরী তৃনমূল পর্যায়ে মানুষের ঘরে ঘরে পৌছবে। শনিবার বিকালে এই ভ্রাম্যামান লাইব্রেরীসহ ১২৩টি লাইব্রেরীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছে। জেলার অনগ্রসর এলাকাসহ জেলার প্রায় এক হাজার গ্রামের দুয়ারে দুয়ারে বিনামূল্যে বই দেয়া নেয়া করবে। ছয় উপজেলা এবং দু’পৌরসভার পৃথক সাত রংয়ে লাইব্রেরীগুলো প্রচীন জনপদটিতে জ্ঞানের রং ছড়াতে যাচ্ছে। উদ্বোধনীতে সারি সারি ভ্রাম্যমান লাইব্রেরীগুলো জড়ো হয় মুন্সীগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমি ঘিরে। হরেক রকমের বইয়ের পসরাসহ এই লাইব্রেরীগুলো উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচির মো. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান ও জেলা প্রশাসক মো. সাইধুল হাসান বাদল। এখন থেকে জেলার প্রতিটি গ্রামে- গঞ্জে বই নিয়ে ছুটবে লাইব্রেরীগুলো। রেজিস্টারের মাধ্যমে বই নিবেন আবার পরে ফেরত দিবেন। এই লাইব্রেরীর মাধ্যমে এই অঞ্চলের আবার গড়ে উঠবে গুনী মানুষ। প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে এই লাইব্রেরীর যাবতীয় খোঁজ খবর এবং বইয়ের চাহিদা রেজিস্টার তদরাকি দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইউপি সচিবকে। আর ভ্রাম্যমান এই লাইব্রেরীর লাইব্রেরীয়ানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ইউপর চৌকিদারকে। ইউনিয়নের নিজস্ব অর্থায়নে এই লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠিত হয়। ভ্যানটি তৈরীতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩৮ হাজার টাকা। বই কেনা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকার। লাইব্রেরিয়ানকে মাসিক অতিরিক্ত বেতন দেয়া হচ্ছে ১৫ শ’ টাকা। তুলনামূলক অল্প টাকা খরচে আউটপুট বেশী হচ্ছে। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবতর্নের জন্য প্রয়োজন জ্ঞান অর্জন। নানা কারণে বই পড়ার অভ্যাস কমে যাচ্ছে। তাই প্রথমে ৪৭ ইউনিয়ন কমপ্লেক্সে লাইব্রেরী চালু করা হয়। এতে পাঠকের আশানুরূপ পাঠকের সারা পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই ঘরের পাশেই যেন লাইব্রেরী থাকে, অজপাড়া গাঁসহ সবখানে সব শ্রেণির মানুষ বই পড়তে পারে সেই জন্য এই লাইব্রেরীর উদ্যোগ গ্রহণ করেন মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল। ফিতা কেটে এবং বেলুন উড়িয়ে ১২৩টি লাইব্রেরী উদ্বোধনের পর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই উপলক্ষে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ, মূখ্য আলোচক বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আতিউর রহমান। জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল হালিম, অধ্যাপক সুখেন চন্দ্র ব্যানার্জী, এডিসি হারুনুর রশীদ, টঙ্গীবাড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার কাজী ওয়াহিদ, গজারিয়ার ইউএনও মাহবুবা বিলকিস, সিরাজদিখানের ইছাপুরা ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মতিন হালদার ও মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ব্যক্তিগতভাবে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, এপিজি আব্দুল কালামের লেখা উইংস অব ফায়ায়, সকলের বঙ্গবন্ধুসহ ১০টি করে বই প্রদান করেন। মূখ্য আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর ড. আতিউর রহমান বলেন, ভ্রাম্যমান লাইব্রেরীগুলো যখন পথে প্রান্তরে গ্রামে গঞ্জে দৌড়াবে তখন যেন বাংলাদেশে দৌড়াবে। এতে জ্ঞানভিত্তিক আধুনিক সমাজ বিনিমার্ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জেলা প্রশাসনের এই অনুকরণীয় উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এসব সৃজনশীল কাজের মাধ্যমেই বাংলাদেশ সফলতার শিখরের দিকে এগিয়ে যাবে। প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, লাইব্রেরী তথা এই জ্ঞান চর্চার আন্দোলন ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি বর্তমান সরকারের নানা সৃজনশীল প্রকল্পেরর বর্ণর্ণা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ এখন মধ্য আয়ের রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে চলেছে।
×