ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুরের মূর্ছনায় ছায়ানটের শুদ্ধ সঙ্গীত উৎসব

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫

সুরের মূর্ছনায় ছায়ানটের শুদ্ধ সঙ্গীত উৎসব

গৌতম পাণ্ডে ॥ দিনের শুরুটা ছিল চমৎকার। প্রভাত হতে না হতেই এক পসলা বৃষ্টি। পৌষের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। সবে কোলাহলমুখর হতে শুরু করেছে রাজধানী। কিন্তু এ সময়ে ছায়ানটের চিত্র ছিল ভিন্ন। ফুলে ফুলে সাজানো হয়েছে বিদ্যায়তন আঙ্গিনা। মাইকে সম্মেলক কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে গুণকেলি রাগের আলাপ। গম্ভীর প্রকৃতির এ রাগটি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে যেন সূর্যকে বরণ করে নিচ্ছে ছায়ানট বিদ্যায়তনের শিল্পীরা। লাল-সাদা রঙের মিশ্রণের পোশাকে পুরো পরিবেশটা ছিল সঙ্গীতময়। বলা হয়ে থাকে কলা বিদ্যার শ্রেষ্ঠ হলো সঙ্গীত। এতে মানুষের নীরব মনের সরব অভিব্যক্তি প্রকাশ পায়। চিত্ত পুলকিত হয় সঙ্গীতের মূর্ছনায়। সঙ্গীতের একটি বিশেষ বিভাগ হলো শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। বাংলাদেশে এ সঙ্গীতের সুদিন আসতে শুরু করেছে। বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসব তার বাস্তব প্রমাণ। দেশের যে কয়টি সংগঠন শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অগ্রগতিতে এগিয়ে এসেছে ছায়ানট তাদের অন্যতম। প্রতি বছর শুদ্ধ সঙ্গীত উৎসবের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি এ সঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি সবার মধ্যে এর রূপ ও রসের প্রসার ঘটিয়ে থাকে। নতুন প্রজন্মও এ সঙ্গীতের রস আস্বাদনে প্রভাবিত হয়। নব জাগরণের স্রোতধারায় প্রতিবারের মতো এবারও শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী শুদ্ধ সঙ্গীত উৎসব। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিল্পীদের পাশাপাশি এ উৎসবে অংশ নিচ্ছেন ভারতের শিল্পীরাও। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উৎসবের উদ্বোধন করেন ওস্তাদ মোহাম্মদ ইয়াসিন খান। শুদ্ধ সঙ্গীত উৎসবের শুক্রবার ছিল দ্বিতীয় অধিবেশন। শুরুতে ‘রাগ গুণকেলি’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সুন্দর একটি দিনের বন্দনা করে নেন শিল্পীরা। সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন ওস্তাদ আসিত দে এবং তবলায় সঙ্গত করেন রতন দাস। এরপর রাজশাহীর আলমগীর পারভেজ সুমন পরিবেশন করেন ‘রাগ ভাটিয়ার’। তবলায় সঙ্গত করেন স্বরূপ হোসেন। রাগ টোড়িতে শ্রাবন্তী ধর অসাধারণ নৈপূণ্য দেখান। শ্রোতা মুগ্ধ হয় শিল্পী শিউলী ভট্টাচার্যীর বেহালা বাদনে। রাগ আলাহিয়া বিলাবলে তিনি সকলকে মুগ্ধ করেন। তবলায় সঙ্গত করেন মীর নাকিবুল ইসলাম। সব শেষে রাগ রামকেলি পরিবেশন করেন অগ্রজপ্রতিম সঙ্গীত শিল্পী সতীন্দ্রনাথ হালদার। তবলায় ছিলেন গৌতম সরকার। সকাল থেকে শুরু হয়ে দ্বিতীয় অধিবেশন চলে বেলা ১টা পর্যন্ত। তৃতীয় অধিবেশন শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টা থেকে। এতে ছায়ানটের শিল্পীদের বৃন্দ পরিবেশনার পাশাপাশি একক সঙ্গীতে অংশ নেন শিল্পী লতিফুন জুলিও, সুপ্রিয়া দাশ, শুষেণ রায়, সঞ্জীবন সন্যাল, সুষ্মিতা দেবনাথ, খায়রুল আনাম শাকিল, তাপস দত্ত, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, এবাদুল হক সৈকত, রেজোয়ান আলী, অসিত কুমার দে, কলকাতার অমরেশ রায় চৌধুরী ও দেবষ্মিতা ভট্টাচার্য।
×