ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে শীঘ্রই ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি হবে

প্রকাশিত: ০৭:৪২, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে শীঘ্রই ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে জটিলতার কারণে ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি করতে কিছুটা সময় চলে গেছে। তবে শীঘ্রই এই চুক্তি সই হবে। চুক্তি হলে বিপুলসংখ্যক কর্মী সে দেশে পাঠানো যাবে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ কোন সিন্ডিকেট স্থান পাবে না। যেসব রিক্রুটিং এজেন্সির অতীত রেকর্ড ভাল, তারাই মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শুক্রবার ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি একথা বলেন। এবার অভিবাসন দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘বিশ্বময় অভিবাসন, সমৃদ্ধ দেশ, উৎসবের জীবন’। দিবসটি পালনে মন্ত্রণালয় নানা কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে জিটুজি প্লাস চুক্তির বিষয়ে আমরা সর্বশেষ অবস্থায় এসে পৌঁছেছি। এখন শুধু এমওইউ সই বাকি। সেটা হলেই দেশটিতে কর্মী পাঠানো শুরু হবে। তবে মালয়েশিয়ায় জিটুজি পদ্ধতিতে এখনও কর্মী যাচ্ছে। তবে বেশিসংখ্যায় নয়। আমরা চাই না অতিরিক্ত লোক যাক। পরে তারা খেতে পাবে না, বাসস্থান পাবে না। চুক্তির মাধ্যমে কর্মীর কর্মক্ষেত্র ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই বড় পরিসরে কর্মী পাঠানো হবে। মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেটের বিষয়টি আমার জানা নেই। মালয়েশিয়ার কোম্পানির কাছ থেকেও এমন কোন বিষয় জানতে পারিনি। আমরা যে সমঝোতা চুক্তি সই করতে যাচ্ছি সেখানে ‘বায়রা’ না বলে বিআরএ বলেছি। যার অর্থ, বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সি। আমরা কারও পক্ষে নেই। বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সির যত ভাল ভাল কোম্পানি আছে, যাদের অতীত রেকর্ড ভাল, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোয় যারা অভিজ্ঞ- সেসব এজেন্সির নাম মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে। মালয়েশিয়া থেকেই রিক্রুটিং এজেন্সি বাছাই করবে। নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ‘বিশ্বময় অভিবাসন, সমৃদ্ধ দেশ, উৎসবের জীবন’ প্রতিপাদ্যে এবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিবাসনের গুরুত্ব আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অভিবাসী কর্মীদের অবদান অপরিসীম। বর্তমানে প্রায় ৯৬ লাখ বাংলাদেশী অভিবাসী হিসেবে ১৬০ দেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স জাতীয় উন্নয়নের অগ্রগতিকে আরও ত্বরান্বিত করছে। এ বছর প্রবাসী ভাই-বোনদের পাঠানো রেমিটেন্স ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদেশে কর্মসংস্থানের বর্তমান ধারা অব্যাহত রাখার জন্য বিদ্যমান শ্রমবাজার ধরে রাখাসহ আমরা নতুন নতুন সম্ভাবনাময় শ্রমবাজার অনুসন্ধান করছি। থাইল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে। আশা করা যাচ্ছে এই দুই দেশে কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ৬৪ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও পাঁচটি ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজির মাধ্যমে আমরা প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার দক্ষ জনশক্তি প্রতিবছর তৈরি করতে সক্ষম হচ্ছি। যাদের একটি অংশ বিদেশে চাকরি নিয়ে যাচ্ছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে শুক্রবার দিনব্যাপী কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। সকাল আটটায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে র‌্যালি বের করা হবে। সাড়ে নয়টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অভিবাসী মেলাসহ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচী পালন করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হজরত আলী, বিএমইটির ডিজি শামসুন নাহারসহ অন্য কর্মকর্তারা। সংবাদ সম্মেলন শেষে মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিং সেন্টারে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অভিবাসন’ শীর্ষক একটি সেমিনার হয়। অতিরিক্ত সচিব হজরত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি।
×