ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের মাঝেও অসন্তোষ বাড়ছে

পে স্কেলে ক্ষুব্ধ সরকারী কলেজ শিক্ষকরা ফের আন্দোলনে যাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫

পে স্কেলে ক্ষুব্ধ সরকারী কলেজ শিক্ষকরা ফের আন্দোলনে যাচ্ছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পে স্কেলে দাবির প্রতিফলন না হওয়ায় আন্দোলনে যাচ্ছেন সারাদেশের সরকারী কলেজের শিক্ষকরা। সকল স্তরে বেতনবৈষম্য নিরসন না করেই বেতন পে স্কেল বাস্তবায়নের খবরে ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা বৃহস্পতিবার জরুরী বৈঠক করে ব্যাপক আপত্তি তুলেছেন। বেতনবৈষম্য নিরসন করে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সাড়ে ১৫ হাজার সদস্যের মর্যাদা ও বেতন সমুন্নত রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে পে স্কেলে পরিষ্কার কিছু না থাকায় অসন্তোষ বাড়ছে বেসরকারী স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মাঝে। বুধবার পে স্কেলের গেজেট প্রকাশের পরই আন্দোলনরত সরকারী কলেজ শিক্ষকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরী বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আগামী রবিবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাত করে আপত্তির কথা তুলে ধরবেন শিক্ষক নেতারা। তুলে ধরা হবে তাদের বৈষম্যের চিত্রও। এরপর ২২ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে বৃহত্তর কর্মসূচীর ঘোষণা করা হবে। বৈঠকে সমিতির সভাপতি অধ্যাপক নাসরিন বেগ, মহাসচিব আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার, কেন্দ্রীয় নেতা কুদ্দুস সিকদারসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষক নেতারা বলেন, সারাদেশে পে স্কেল নিয়ে ব্যাপক আন্দোলনের মধ্যেই বৈষম্য নিরসন কমিটি হলো। সকলে আশা করেছিলেন অবশ্যই শিক্ষকদের বৈষম্যের অবসান হবে। কিন্তু তার কোন প্রতিফলন দেখা গেল না। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হবে বলেও হতাশা প্রকাশ করেন শিক্ষকরা। বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের অধীন সরকারী কলেজ শিক্ষকরা বলেছেন, পে স্কেল নিয়ে চলা আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়। এটা শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষার আন্দোলন। সারাদেশে ৩০৫ সরকারী কলেজ, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড, অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডারের সদস্যরা অবিলম্বে বৈষম্য নিরসনের দাবি জাানিয়ে বলেছেন, বর্তমান বেতন কাঠামোতেই সকল স্তরে বেতন বৈষম্য নিরসন করতে হবে। বর্তমান সরকার ৮ম জাতীয় বেতন স্কেল করেছে। এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। কারণ পে স্কেলের অনেক ইতিবাচক দিক আছে। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক পদে বেতনবৈষম্য নিরসনের দাবিকে বিবেচনায় না এনে অধ্যাপক পদের বেতন স্কেল ও গ্রেড অবনমন করা হয়েছে। সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বাতিল করে প্রভাষক, সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপকসহ শিক্ষা ক্যাডারের সকল স্তরের বেতনবৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে শিক্ষা ক্যাডারের ১৫ হাজার সদস্য এটি উপভোগ করতে পারছে না। শিক্ষকরা তথ্য-প্রমাণ তুলে ধরে বলেছেন, এখনও বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা পঞ্চম গ্রেড হতে পদোন্নতি পেয়ে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত হন। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপকরা পঞ্চম গ্রেড হতে চতুর্থ গ্রেডে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান, যা বৈষম্যমূলক। সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বন্ধ করে দেয়ায় শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ সর্বোচ্চ চতুর্থ গ্রেড হতে অবসরে যাবেন। পদোন্নতির সুযোগ না থাকায় শিক্ষা ক্যাডারের অনেকেই সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে অবসরে যান। সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল না থাকায় এখন সহযোগী অধ্যাপকদের পঞ্চম গ্রেড হতে অবসরে যেতে হবে। প্রাপ্য মর্যাদায় উন্নীত না করে স্কেল ও পদ অবনমনে শিক্ষকরা মর্মাহত। শিক্ষক নেতারা একই সঙ্গে শিক্ষক সমাজের দাবি পূরণে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেছেন। এদিকে একই আপত্তি জানিয়েছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি। বৃহস্পতিবার সংগঠনের এক জরুরী বৈঠকে নেতৃবৃন্দ শর্ত ছাড়া পে স্কেলে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি সৈয়দ জুলফিকার আলম চৌধুরী, মহাসচিব ইয়দ আলী খান, মজির উদ্দিন আনসার প্রমুখ।
×