ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্ধতি উদ্বোধন করলেন অর্থমন্ত্রী

অনলাইনে নির্ধারণ বেতন, পেনশন ॥ সরকারী চাকরি

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫

অনলাইনে নির্ধারণ বেতন, পেনশন ॥ সরকারী চাকরি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সরকারী চাকুরেদের বেতন ও পেনশন অনলাইনে নির্ধারণ করা হচ্ছে। অষ্টম পে স্কেলে একজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কত বেতন পাবেন তা অনলাইনে দেখা যাবে। নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশের একদিন পর অনলাইনে বেতন ও পেনশন নির্ধারণ পদ্ধতির উদ্বোধন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রয়োজন নেই বলেও ওই অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে অর্থমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে তিনি এ পদ্ধতির উদ্বোধন করেন। ওই সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ২৬৮ বছর ধরে যে পুরনো পদ্ধতি ছিল তা এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপ নিল। ১৯০ বছর ছিল ব্রিটিশ শাসন, ২৩ বছর ছিল পাকিস্তানের শাসন আর ৪৫ বছর আমাদের। ২৬৮ বছর পেরিয়ে আজকে একটা বড় পরিবর্তন হলো। দেশে প্রথমবারের মতো চালু হওয়া এ পদ্ধতির ফলে হিসাবরক্ষণ অফিসে দৌড়াদৌড়ি ও হয়রানি থেকে সরকারী চাকরিজীবীরা মুক্তি পাবেন। এ পদ্ধতি দুর্নীতি ও হয়রানি রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ও পেনশন নির্ধারণ হবে। সরকারী কর্মকর্তারা শুধু তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর আর জন্মতারিখ নির্দিষ্ট জায়গায় লিখলেই বেতন ও পেনশন নির্ধারণ হয়ে যাবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, অনলাইন পদ্ধতি প্রবর্তনের কারণে গতিশীল কর্মচারী ডাটাবেজ তৈরি, বাজেট প্রণয়ন ও হিসাবরক্ষণ বিশেষভাবে পরিচালিত হবে। পে-কমিশনের কার্যক্রম পরিচালনাসহ আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার ক্ষেত্রে এ ডাটাবেজ কাজ করবে। উদ্বোধনের সময় অর্থসচিবের বেতন ও পেনশন নির্ধারণ করা হয়। জানা গেছে, এর ফলে সরকারী চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণ নিয়ে আর কোন জটিলতা তৈরি হবে না। এছাড়া এ পদ্ধতিতে বেতন ও পেনশন নির্ধারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি স্বচ্ছ ও নির্ভুল ডাটাবেজ তৈরি হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী। এখনও সরকারের হাতে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিপূর্ণ কোন ডাটাবেজ নেই। এতে বেতন-ভাতা খাতে প্রতিবছর জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হয় অনুমানের ওপর নির্ভর করে। ফলে অনেক সময় অর্থবিভাগ নানা জটিলতায় পড়ে। কিন্তু অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেতন-ভাতা নির্ধারণ হওয়ায় একটি স্বচ্ছ ও শক্তিশালী ডাটাবেজ তৈরি হবে। বাজেট বরাদ্দ রাখতে সুবিধা হবে। এদিকে, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা নির্ধারণের জন্য নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করে তা সিজিএ দফতরে বা প্রধান হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে পাঠাতে হয়। সেখান থেকে অনুমোদন পেয়ে তা অর্থবিভাগে ফিরে আসে। এতে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ভুল-ভ্রান্তি হয়। এতে একদিকে অতিরিক্ত সময়ক্ষেপণ হয়। পাশাপাশি অনেকেই ভোগান্তি ও হয়রানির শিকার হন। আর অনলাইন বা ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করলে এ ধরনের ভোগান্তি বা হয়রানির কোন সুযোগ থাকবে না। অনলাইনে বেতন নির্ধারণে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সরবরাহ করবে। তবে এ কাজটির জন্য সার্ভিস চার্জ হিসেবে প্রতিটি আইডির জন্য ইসিকে দুই টাকা প্রদান করতে হবে। এছাড়া যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণের জন্য কম্পিউটার কাউন্সিলকে সার্ভিস চার্জ প্রদান করবে অর্থবিভাগ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো হচ্ছে না ॥ কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সকল রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকের জন্য আলাদা বেতন স্কেলের দাবি ছিল। এ নিয়ে ইতোপূর্বে কিছু কাজকর্ম এগিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু অষ্টম পে স্কেলে ব্যাংকের জন্য স্বতন্ত্র কোন বেতন কাঠামো দেয়া হয়নি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রয়োজন নেই। অর্থমন্ত্রী বলেন, না, না এটা আর হবেই না। ইট উইল নট বি দেয়ার, কোন প্রয়োজন নেই। আই থিংঙ্ক যে বেতন স্ট্রাকচার হয়েছে সেটাতে ইজিলি বাংলাদেশ ব্যাংক বি বেনিফিটেড। বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ডেপুটি গবর্নরের আলাদা বেতন হয়, সেটা তো আলাদা থাকবেই। বাকি কারও জন্য (স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর) কোন প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। প্রসঙ্গত, সর্বোচ্চ বেতন (গ্রেড-১) ৭৮ হাজার টাকা নির্ধারিত ও সর্বনিম্ন (গ্রেড-২০) ৮ হাজার ২৫০ টাকা নির্ধারণ করে ১৫ ডিসেম্বর রাতে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামোর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
×