ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হবিগঞ্জে আলোচিত গউছের পক্ষে ব্যাপক প্রচার

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫

হবিগঞ্জে আলোচিত গউছের পক্ষে  ব্যাপক প্রচার

নিজস্ব সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ, ১৭ ডিসেম্বর ॥ সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী মরহুম শামস্ কিবরিয়া হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় চার্জশীটভুক্ত আসামি হয়ে কারাগারে থাকলেও মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন বিএনপি সমর্থিত আলোচিত প্রার্থী জি কে গউছ। বিএনপির হাইকমান্ড এ নির্বাচনে গউছকে সমর্থিত প্রার্থী ঘোষণা দিলেও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহরের শেষ দিন পর্যন্ত তার দলেই ছিল আমিনুর রশীদ এমরান ও ইসলাম তরফদার তনুর মতো শক্তিশালী একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। কিন্তু বহিষ্কৃৃত হয়ে দলীয় রাজনীতি থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কায় শেষ দিন এসব ব্যক্তি তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় একক প্রার্থী হিসেবে ‘ধানের ছড়া’ মার্কা নিয়ে জি কে গউছ এখন আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী আতাউর রহমান সেলিমের ‘নৌকা’ প্রতীকের মোকাবেলা করবেন। তবে এখনও মনোনয়ন প্রত্যাহারকারী ওই দু’জন প্রার্থীসহ আরেক উঠতি জনপ্রিয় নেতা এনামুল হক সেলিম ও তার অনুসারীরা জোরালোভাবে গউছের নির্বাচনী প্রচারণায় না নামায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে চলছে নানা কানাঘুষা। এছাড়া গউছ সিলেট কারাগারে থাকায় তার পরিবার যেমন পাচ্ছেন না সঠিক দিক নির্দেশনা, তেমনি নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও চরম দিশেহারা। তারপরও প্রার্থীর আপন ভাই জি কে গাফ্ফার ও আত্মীয়-স্বজনরাসহ দেওয়ান মসউদ চৌধুরী, খালেকুজ্জামান, মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ শাহীন, সদর উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান মাহবুব, মিজানুর রহমান মিজান, জেলা ছাত্রদল সভাপতি তাজুল ইসলাম ফরিদ, আজগর ও নুরুল ইসলামের মতো হেভিওয়েট নেতাদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে চলছে ‘ধানের ছড়া’ হাতে গউছের নির্বাচনী প্রচারণা। তারা ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই মর্মে ভোট প্রার্থনা করছেন যে, গউছ এই পৌরসভার মেয়র থাকাকালীন সময়ে নানা উন্নয়নমূলক কর্মকা- ত্বরান্বিত করে পৌরবাসীদের মন জয় করেছেন। শুধু তাই নয়, সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যা মামলার সঙ্গে গউছকে নাকি অযথা জড়িয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তাই তাকে মুক্ত করতে এ নির্বাচনে মেয়র পদে ভোট দেয়া উচিত। এছাড়া তারা এও মনে করছেন যে, বিএনপি প্রার্থী বিজয়ের নেপথ্যে জামায়াত ও হেফাজত ইসলামী দলের সমর্থকরা একটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তাদের ধারণা, এ দুটি দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ভোট তাদের অনুকূলে আসবেই। তবে অতীতে গউছ ও তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের ধারণায় থাকা হবিগঞ্জ শহরের সংখ্যালঘু ভোটারা ব্যক্তিগত ইমেজে গউছকে যে ভোট প্রদান করতেন তা এবার বিশেষ কারণে সম্ভব নাও হতে পারে। কিন্তু তাদের এমন যুক্তি প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সেলিমের নেতাকর্মীরা মানতে নারাজ। সেলিম সমর্থক এ নেতাকর্মীদের অনেকেই বলেন, তদন্তের ভিত্তিতে গউছ ওই মামলায় একজন চার্জশীটভুক্ত আসামি। বর্তমানে এ মামলায় তার বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য চলছে। এছাড়া তাকে পৌরবাসী ভোট দিয়ে কি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হাতে (প্রশাসক বানিয়ে) মেয়র পদটি ছেড়ে দেবেন। তাদের যুক্তি হচ্ছে, তর্কের খাতিরে যদি মেনে নেয়া হয়, মেয়র পদে গউছ নির্বাচিত হলো। তবে কি গউছ ওই মামলার আসামি হিসেবে চেয়ারে বসতে পারবেন? তাহলে গউছকে ভোট দিয়ে কি উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হতে চান পৌরবাসী। এছাড়া এখনও এ পৌরসভার নাগরিকদের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সমস্যারও সমাধান হয়নি। এদিকে গউছ অতীতে মাঠে থেকে পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন এ যুক্তি তুলে তাকেই ভোট দিবেন পৌরবাসী এমনটাই আশা করছে বিএনপি। এই পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ সম্মানিত ভোটারদের অনেকেই এ প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপকালে তাদের অনুভূতির কথা জানিয়ে বলেছেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত লাল-সবুজ পতাকার প্রতি সম্মান জানিয়েই ব্যক্তিগত ইমেজ, অতীত উন্নয়নের হিসেব সর্বপরি যোগ্যতাকে মূল্যায়ন করেই ভোট প্রদান করব। এভাবে তুমুল যুক্তি পাল্টা যুক্তি-তর্কের মাঝেই চলছে সাবেক এই ডাকসাইড মেয়রসহ অন্য প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার।
×