ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরগঞ্জে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই ॥ লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫

কিশোরগঞ্জে বিদ্রোহী প্রার্থী নেই ॥ লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

মাজহার মান্না, কিশোরগঞ্জ ॥ ‘ভিআইপি’ হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় তিন দলের একক প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শুরুতে মেয়র পদে পাঁচ প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। পরবর্তীতে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিকল্পধারা বাংলাদশের প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়। বর্তমানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও সিপিবি-বাসদ মনোনীত প্রার্থী দলীয় প্রতীকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নেমেছে। প্রতীক পেয়েই জোর প্রচারণায় নেমেছে তিন মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের প্রার্থীরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। পুরো পৌর এলাকায় পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে। ভোটারদের সঙ্গে প্রার্থীরা হাত মেলাচ্ছে, দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করছে। এ সময় প্রার্থীরা ভোটযুদ্ধে জয়ী হতে দিচ্ছে নানা প্রতিশ্রুতি। উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচার সর্বত্র এখন বইছে নির্বাচনী হাওয়া। চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে সবখানেই নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নির্বাচনী এলাকা হলেও সে তুলনায় পৌর শহরের তেমন উন্নয়ন হয়নি। পৌরসভার অধিকাংশ রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় নাগরিকদের ভোগান্তির শেষ নেই। পরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। পর্যাপ্ত ডাস্টবিন ময়লা পরিবহনের গাড়ি না থাকায় যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে শহরের পরিবেশ দুর্গন্ধময় এবং নানা সমস্যা বিরাজমান। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক হলেও বর্তমান মেয়র মাজহারুল ইসলাম কাঞ্চনের ব্যর্থতার কারণে এখানে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন হয়নি। তাই বর্তমান মেয়রসহ ডজনখানেক আওয়ামী লীগ নেতা এবার মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও পরিচ্ছন্ন ও উদ্যমী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মাহমুদ পারভেজকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আর দলের এ সিদ্ধান্তকে মেনে নিয়েছে অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরাও। অপরদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি গত পৌর নির্বাচনেও বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে সে সময় আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী থাকলেও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মাঠে ছিলেন তৎকালীন পৌর মেয়র আবু তাহের মিয়া। এবারও আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী মাহমুদ পারভেজ মনোনয়ন দাখিল করেন। অপরদিকে বিএনপির মনোনীত মাজহারুল ইসলাম ও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া। ধারণা করা হচ্ছিল, গতবারের মতো এবারও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচনে লড়ে যাবেন। কিন্তু শেষ পর্যায়ে এসে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে ইসরাইল মিয়া তাঁর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন। এদিকে অনেক ভোটারদের ধারণা, বিএনপির দুই প্রার্থী থাকলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর জন্য জয়টা সহজ ছিল। এখন নির্বাচনী মাঠ থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী সরে যাওয়ায় বিএনপির একক প্রার্থীর কারণে তীব্র লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে সিপিবি-বাসদ মনোনীত প্রার্থী আবুল হাসেম বিএসসিও দিন-রাত প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনিও নাগরিকদের সেবার মান উন্নয়নসহ পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট প্রার্থনা করে যাচ্ছেন বলে জানান।
×