ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনে বিজয় দিবস পালিত

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫

বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনে বিজয় দিবস পালিত

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রতি বছরের মতো এবারও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনে বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। এবারের ৪৪ তম দিবস উপলক্ষে বিদেশে বাংলাদেশি মিশনে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ উৎসব, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিজয় মেলা, আনন্দ মিছিল প্রভৃতির আয়োজন ছিল। এসব মিশনের উৎসবে প্রবল আনন্দে অংশ নেন প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাসের কর্মকর্তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জাপান, উজবেকিস্তান, মালয়েশিয়া, ভারত, থাইল্যান্ড, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ইত্যাদি দেশে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস, উপদূতাবাস ও কনস্যুলেট অফিসে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। এসব অনুষ্ঠানে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি সেখানের প্রবাসীরা যোগ দেন। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আরো বিভিন্ন দেশ থেকে বিজয় দিবস উদ্যাপনের খবর আসছিল। ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশের অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশন অফিসেও যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় সহকারী হাইকমিশনার সাখাওয়াত হোসেইন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পতাকা উত্তোলন শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির সামনে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অনুষ্ঠানে সককারী হাইকমিশনার সাখওয়াত হোসেইন ছাড়াও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ ভারতীয় সেনা জওয়ানদের স্মৃতির প্রতিও শ্রদ্ধা জানানো হয়। আগরতলার পোস্ট অফিস চৌমুহনী এলাকার শহীদ ভারতীয় সৈন্যদের স্মৃতিতে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায়। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা কারা দপ্তরের মন্ত্রী মণীন্দ্র রিয়াংসহ পশ্চিম জেলার জেলাশাসক মিলিন্দ রামটেক ও অন্যান্য কর্মকর্তারা। শ্রদ্ধাজ্ঞাপন শেষে রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেন, ভারতীয় সৈন্যদের সহযোগিতা ছাড়া পাকিস্তানি সেনাদের অত্যাচার প্রতিহত করা কঠিন ছিল- একথা বিশ্ববাসী জানে এবং বাংলাদেশ এই বিষয়টি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে। উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের তাসখন্দ দূতাবাসে বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। দূতাবাস প্রাঙ্গনে বুধবার সকালে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে সেখানে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মসয়ূদ মান্নান এনডিসি। পতাকা উত্তোলনকালে সেখানের প্রবাসী বাংলাদেশী ও তাসখন্দ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। তাসখন্দ দূতাবাস আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়। এসময় উজবেকিস্তানের কূটনৈতিক কোরের ডীন ও দেশটিতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত, আলজেরিয়া, জর্ডান, বেলারুশ দূতাবাসের মিশন প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। বুধবার মালয়েশিয়ার প্র্রবাসী বাংলাদেশিরাও বিজয় দিবস পালন করেছে। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে দিবসটি পালিত হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও এক মিনিট নিরাবতা পালনের মধ্য দিয়ে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। সেখানে কর্মকর্তাদের নিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাইকমিশনার শহীদুল ইসলাম। পরে একে একে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পড়ে শোনানো হয়। লাল-সবুজ পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিজয় দিবস পালনের জন্য দূতাবাস প্রাঙ্গনে ভিড় জমান দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসা কয়েক’শ প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এসময় পুরো হাইকমিশন চত্ত্বর প্রবাসী বাংলাদেশিদের মিলন মেলায় পরিণত হয়। সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতা শেষে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের সংগঠন। এছাড়া মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগ ছাড়াও এর সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিকলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষক লীগ, নবীন লীগ ও তরুণ প্রজন্মলীগের নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন, মালয়েশিয়ার শিক্ষার্থীদের নিয়ে গড়া বিএসইউএম’র নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় বিজয় দিবস উদযাপন করেছেন প্রবাসীরা। মঙ্গলবার রাত বারোটা এক মিনিটে শারজাহ হুদাবিয়া গ্রিন পার্কে বিজয় দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে মিলিত হন প্রবাসীরা। এসময় প্রবাসী সঙ্গীত শিল্পীদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে উপস্থিত সবাই পরিবেশন করেন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। জাতীয় সংগীত পরিবেশনে নেতৃত্ব দেন প্রবাসী শিল্পী কায়ছার হামিদ, পাবেল আব্দুল্লাহ ও শেখ তাওহিদ। এছাড়াও কবিতা আবৃত্তি করেন প্রবাসী লেখক আব্দুল্লাহ আল শাহীন।
×