ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ডিএসইর ইপিএস বেড়েছে ১ পয়সা

প্রকাশিত: ২৩:২১, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫

ডিএসইর ইপিএস বেড়েছে ১ পয়সা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) লিমিটেডের ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে মাত্র ১ পয়সা। এরফলে ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে দেশের প্রধান এ স্টক এক্সচেঞ্জটির শেয়ার প্রতি আয় ৭৫ পয়সায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। আগের হিসাব বছরে এ আয়ের পরিমাণ ছিল ৭৪ পয়সা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ডিএসইর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ১ পয়সা আয় বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে ডিএসইর শেয়ার প্রতি আয় বেড়েছে ১ পয়সা। অডিট ফার্ম এ কাশেম এন্ড কোম্পানি এই আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে গত সম্পাহে তা ডিএসইর অডিট এন্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির কাছে জমা দিয়েছে। এই কমিটির অনুমোদন পেলে তা ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদে উঠবে। এ আয়ের উপর ভিত্তি করে সর্বোচ্চ ৭.৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করতে পারবে। এর বেশি লভ্যাংশ দিতে চাইলে রিজার্ভ থেকে দিতে হবে। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে। আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১ হাজার ৮০৩ কোটি টাকা। ২০১৩-১৪ হিসাব বছরে কোম্পানিটি নিট আয় করে ১৩৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন অপরিবর্তিত রয়েছে এবং ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৭৫ পয়সা। এ হিসাবে ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে নিট আয় হয়েছে প্রায় ১৩৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ডিএসই’র আয়ের মূল উৎস হচ্ছে -লাগা চার্জ, হাওলা চার্জ ও তালিকাভুক্তি ফি। তবে কোম্পানিটি ডিপোজিটের সুদ থেকেই সবচেয়ে বেশি আয় করেছে। ব্যাংকের সুদের হার কমে যাওয়ার কারণে আগের বছরের তুলনায় এ খাত থেকেও আয় কমেছে। জানা গেছে, পুঁজিবাজারে লেনদেন কমে যাওয়ায় লাগা এবং হাওলা চার্জ থেকে আয় কমেছে। পাশাপাশি সুদ বাবদ আয়ও কমেছে। তারপরও আগের হিসাব বছরের তুলনায় আয় সামান্য বেড়েছে। মূলত ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করায় নিট আয় বা ইপিএস বেড়েছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ডিএসইতে মোট লেনদেন (টার্নওভার) হয়েছিল ১ লাখ ১২ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকার। ২০১৪-১৫ হিসাব বছরে এর পরিমাণ হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৩৫১ কোটি টাকার। ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, লেনদেন ও ফিক্সড ডিপোজিটের সুদের হার কমে যাওয়ার কারণে ডিএসইর আয় বাড়ানো ছিল বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। তারপরও ডিএসইর আয় বেড়েছে। ডিএসইর অফিসিয়াল ব্যয় নিয়ন্ত্রণের কারণে এ আয় বেড়েছে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। শাকিল রিজভী আরও বলেন, আগে প্রতিবছর ডিএসই’র ৭-৮ কোটি টাকা করে ব্যয় বৃদ্ধি পেত। তবে ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পরে ব্যয় সংকোচন নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এ কারণেই মূলত ডিএসইর ইপিএস বেড়েছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ডিমিউচুয়ালাইজেশনের কারণে স্টক এক্সচেঞ্জ লাভজনক কোম্পানিতে রূপান্তরিত হয়েছে। এ কারণে শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদান করা উচিত। আয়ের হিসাবে ৭.৫ শতাংশের বেশি লভ্যাংশ দিতে পারবে না এমন প্রশ্নে মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, এক্ষেত্রে ডিএসইর আয়ের সাপোর্টের উপর ভিত্তি করে লভ্যাংশ দেবে। সেক্ষেত্রে লভ্যাংশ ১০ শতাংশেরও কম হতে পারে। ডিএসইর সাবেক সভাপতি রকিবুর রহমান বলেন, ডিএসইর অবশ্যই উচিত লভ্যাংশ প্রদান করা। কারণ ব্রোকারেজ হাউজগুলো লোকসানের মধ্যে দিয়ে সময় কাটাচ্ছে। অনেকে অফিস ভাড়া প্রদান করতে পারছে না। সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ ও সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করা উচিত বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। আয়ের মাধ্যমে এ পরিমাণ লভ্যাংশ দেওয়া সম্ভব না হলে প্রয়োজন বোধে রিজার্ভ থেকে হলেও লভ্যাংশ দেওয়া উচিত।
×