ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আট বছর পর ধোনি বনাম রায়না

প্রকাশিত: ১৯:০৩, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫

আট বছর পর ধোনি বনাম রায়না

অনলাইন ডেস্ক ॥ গত আট বছরের আইপিএল সংসারে কেউ তাঁদের আলাদা করতে পারেনি। প্রথম আইপিএল থেকে একই টিমে, একই জার্সি গায়ে নামতে দেখা যেত দু’জনকে। আইপিএল নাইনে এসে ছবিটা পাল্টে গেল। দু’জনেই টুর্নামেন্টে নামবেন, তবে আলাদা জার্সিতে। আলাদা আলাদা টিমের হয়ে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও সুরেশ রায়না। এক কথায়, নির্বাসিত সিএসকের দুই স্তম্ভ। চেন্নাই সুপার কিংগসকে দু’জনের পার্টনারশিপ অসংখ্য ম্যাচ জিতিয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার আইপিএল ড্রাফটের পর পার্টনারশিপটা ভেঙে গেল। ধোনি আজকের পর থেকে দু’বছরের জন্য সঞ্জীব গোয়েন্কার পুণে ফ্র্যাঞ্চাইজিতে। রায়না রাজকোটের। কী অনুভূতি হবে ধোনির বিরুদ্ধে নামার সময়? এই মুহূর্তে রাজকোটে বিজয় হাজারে ট্রফি খেলতে ব্যস্ত রায়না। সেখানে তিনি বলে দেন, ‘‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। কিন্তু স্পোর্টসম্যান স্পিরিট রেখে।’’ ভারতীয় বাঁ হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান আরও জানিয়েছেন যে, রাজকোটে খেলতে তাঁর কোনও অসুবিধে হবে না। ‘‘রাজকোটের পরিবেশ কেমন হয়, জানি। প্রচুর অনূর্ধ্ব ১৬, অনূর্ধ্ব ১৯ ম্যাচ খেলেছি এখানে। আমি ছাড়াও টিমে জাডে়জা আছে। ও তো এখানকারই ছেলে। দু’জনেই জানি এখানকার পরিবেশ কে‌মন হয়। সেটারই পুরো ফায়দা তুলতে হবে।’’ রায়নাকে রাজকোট তুলে নিলে কী হবে, সঞ্জীব গোয়েন্কার পুণে শক্তিশালী টিমই তৈরি করছে। এ দিন ড্রাফট থেকে যে পাঁচ ক্রিকেটারকে পুণে তুলে নেয় তাঁরা হলেন— ধোনি, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, অজিঙ্ক রাহানে, ফাফ দু’প্লেসি এবং স্টিভ স্মিথ। অর্থাৎ, টিমে একই সঙ্গে ভারতের সীমিত ওভারের অধিনায়ক, দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক এবং অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ও ওয়ান ডে অধিনায়ক! আনন্দবাজারে গত কালই পূর্বাভাস করা হয়েছিল যে, ধোনি-অশ্বিন খেলতে পারেন পুণেতে। এ দিন সেটাই হল। ড্রাফটিংয়ে প্রথম সুযোগ ছিল পুণের। প্রথমেই তারা ধোনিকে তুলে নেয়। রাজকোটও কম কিছু নয়। রায়না ছাড়া তারা নিয়েছে রবীন্দ্র জাডেজা, ব্রেন্ডন ম্যাকালাম, জেমস ফকনার এবং ডোয়েন ব্র্যাভোকে। যার অর্থ, আগামী ফেব্রুয়ারির নিলামে শেন ওয়াটসন, ডোয়েন স্মিথ, স্টুয়ার্ট বিনি, ক্রিস মরিসরা পড়ে থাকলেন। আর আইপিএলের নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে এর পর পড়ে থাকল ২৭ কোটি টাকা করে। বাকি টিম তৈরির জন্য। কারণ এ দিন দু’টো ফ্র্যাঞ্চাইজিই ৩৯ কোটি খরচ করে ফেলেছে। পুণের অধিনায়ক কে, সেটা নিয়ে জল্পনা অর্থহীন। ওটা ধোনিই হচ্ছেন। বরং প্রশ্ন হল, টিমের কোচ কে হবেন? এ দিন ড্রাফটিং শেষে সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসে পুণে প্রতিনিধি তথা আটলেটিকো দে কলকাতা সচিব সুব্রত তালুকদার বলে দেন, ‘‘আমরা যাদের নেওয়ার প্ল্যান করেছিলাম, সবাইকে পেয়েছি। আমরা নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি। আমাদের ব্র্যান্ড তৈরি করতে হবে। তার জন্য ধোনির চেয়ে ভাল আর কে হতে পারত?’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘টিমের নাম আর লোগো আগামী সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে। আর আমরা ইতিমধ্যে দু’জনের সঙ্গে কথা বলছি যাঁরা কোচ হিসেবে দাবিদার।’’ শোনা যাচ্ছে, নাম দু’টো গ্যারি কার্স্টেন এবং স্টিভন ফ্লেমিং। অন্য দিকে অবশ্য ছোটখাটো একটা বিতর্কও হল। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে পুণে কর্তা সুব্রত তালুকদার বলে দেন যে, ড্রাফটিংয়ে কাদের নেওয়া হবে সে ব্যাপারে তাঁরা নিজেদের কোম্পানির দুই ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি এবং অশোক দিন্দার পরামর্শ নিয়েছেন। চাকরিসূত্রে যে দুই বঙ্গ ক্রিকেটার গোয়েন্কার সংস্থায় কাজ করেন। যা নিয়ে একপ্রস্থ বিতর্ক বাঁধল। কারণ আইপিএলে মনোজ দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে খেলেন। দিন্দা রয়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে। আরসিবি কিছু না জানালেও দিল্লি ইতিমধ্যে জানিয়েছে, এ ব্যাপারে তারা মনোজের কাছে কৈফিয়ত চাইবে। ডেয়ারডেভিলস কর্তাদের বক্তব্য, এটা পরিষ্কার স্বার্থের সংঘাত। ডেয়ারডেভিলস প্লেয়ার কী ভাবে অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি কোন প্লেয়ার নেবে না নেবে, সে ব্যাপারে মতামত দেবে? তা ছাড়া এটা নাকি আইপিএলের নিয়মবিরোধী। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এর ফলে বাংলার দুইকে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে কি না। কারণ আইপিএলে উদাহরণ আছে। টুর্নামেন্টের নিয়মবিরোধী কাণ্ড ঘটিয়ে এক নামী ক্রিকেটারকে এক বছরের জন্য আইপিএলের বাইরে চলে যেতে হয়েছিল। নাম? রবীন্দ্র জাডেজা। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
×