ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শাহজালাল থেকে পাকিস্তানী ব্যাংক কর্মকর্তাকে ফেরত

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫

শাহজালাল থেকে পাকিস্তানী ব্যাংক কর্মকর্তাকে  ফেরত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য যখন বিভিন্ন মহলে দাবি উঠেছেÑ ঠিক সেই সময়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক পাকিস্তানী ব্যাংকারকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। রবিবার রাতে অন এ্যারাইভাল ভিসায় ঢাকায় আসার পর তাকে ভিসা দেয়া হয়নি। এই ব্যাংকারের নাম আসমা খালিদ। তিনি স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের সিনিয়র জয়েন্ট ডিরেক্টর। ইমিগ্রেশন পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের আলোকেই আসমা খালিদকে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। যদিও তিনি একটি আন্তর্জাতিক কর্মশালায় যোগ দিতে রবিবার রাতে কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় আসেন আসমা। কিন্তু ভিসা না থাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটকে দেয়। এদিকে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে পাকিস্তানের এক বিবৃতিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনার মধ্যেই এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে কেন তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি সে সম্পর্কে কোন ব্যাখ্যা বা জবাব দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন পুলিশের বিশেষ সুপার মাহবুবুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, এটা তো খুবই স্বাভাবিক। আসমা খালিদের ভিসা ছিল না। আর পাকিস্তানের নাগরিকদের অন এ্যারাইভাল ভিসা দেয়ার বিধান নেই। এ কারণে তাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। তিনি যে বিমানে করে বাংলাদেশে এসেছিলেন সেই বিমান কর্তৃপক্ষের কাছেই আমরা তাকে বুঝিয়ে দিয়েছি। এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, এটা এত সিরিয়াস কিছু নয়। পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের অন এ্যারাইভাল ভিসার কোন চুক্তি নেই। ওরা আমাদেরও পাকিস্তানে গেলে অন এ্যারাইভাল ভিসা দেয় না। আমরাও একই নিয়মে আসমাকে ফিরিয়ে দিয়েছি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এক কর্মকর্তা বলেন, পাকিস্তানী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা রবিবার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত বিমানবন্দরেই ছিলেন। এরপর বেলা দেড়টার দিকে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে আসমা দেশে ফিরে যান। দেশে ফেরার আগে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় পাকিস্তান দূতাবাসেরও কয়েক কর্মকর্তাকে বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে যোগাযোগ ও তদ্বির করতে দেখা যায়। এদিকে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষণা বিভাগের উপ-মহাব্যবস্থাপক জুলহাস উদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, ঢাকার বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইউএন-ডিইএসএ’র যৌথ আয়োজনে সোমবার দুই দিনের একটি আন্তর্জাতিক কর্মশালা শুরু হয়েছে। ওই কর্মশালায় যোগ দিতেই আসমা খালিদ ঢাকায় এসেছিলেন। তবে ভিসা না থাকায় তাকে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ। একই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, আসমা খালিদ হয়ত ভেবেছিলেন বাংলাদেশে বোধহয় অন এ্যারাইভাল ভিসা নিয়েই আসা যাবে। এ কারণে আর পাকিস্তান থেকে ভিসা পাওয়ার চেষ্টাই করেননি। ভিসা না থাকার কারণেই বিমানবন্দরে তাকে বাংলাদেশে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি। তবে আসমাকে ঢুকতে না দেয়ায় পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে কোন প্রভাব ফেলবে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন পুলিশ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
×