ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পর্যবেক্ষণে আসছে উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ দল

হরদম কাজ চলছে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় ॥ উদ্বোধনের পর পেয়েছে নতুন গতি

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫

হরদম কাজ চলছে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় ॥ উদ্বোধনের পর পেয়েছে নতুন গতি

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মা সেতুর কাজ এখন চলছে উড়ন্ত গতিতে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পরই দেশের সর্ববৃহত এ প্রকল্পে পেয়েছে নতুন গতি। এদিকে মাওয়া রবিবারও ছিল উৎসুক মানুষের ভিড়। অনেকই পদ্মা সেতুর কর্মযজ্ঞ দেখতে মাওয়ায় ভিড় জমান। তবে এখন আর সেই মাওয়া নেই। ফেরি পারাপার আর যানজটের মাওয়ায় এখন সৃষ্টিশীল কাজের ব্যস্ততা। নদী, তীর এবং আশাপাশ সব জায়গাই কর্মব্যস্ততা। ভারি ভারি নির্মাণ যন্ত্রে ছেয়ে গেছে এলাকা। সবখানেই কাজ আর কাজ। এই পদ্মা সেতুতে ২০ হাজার কর্মী এখন কাজ করছে। এদিকে রবিবার এক্সপার্ট প্যানেলের দু’বিদেশী মাওয়ায় এসেছে। বাকিরাও আসতে শুরু করেছেন। প্রথম শুরু হওয়া মূল পাইলিংয়ের কাজ এগিয়ে চলছে। প্রথম দিনে শনিবার ৩ মিটার ব্যাসের ৪শ’ ফুট দীর্ঘ পাইলটির ৪০ ফুট ভেতরে প্রবেশ করেছে। এজন্য জার্মানি তৈরি ২ হাজার ৪শ’ কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামারের ৬শ’ ৪৯টি হাতুড়ি বাড়ি দিতে হয়েছে। একইভাবে রবিবারও চলছে পাইলটির ড্রাইভিং কাজ। পদ্মার মাওয়া প্রান্তে সাত নম্বর পিলারের তিন নম্বর এ পাইলটি স্থাপনে হরদম কাজ চলছে। সার্ভিস পাইলটি স্থাপনে প্রচ- শব্দ হয়। পাইলিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করা হবে সেতুর স্প্যান (পিলার)। পিলারের ওপর বসবে সেতুর সø্যাব ও ট্রাস। চীনে সø্যাব ও ট্রাস বানানোর কাজ চলছে। পিলার বানানোর কাজ শেষ হলে সø্যাব ও ট্রাসজুড়ে দেয়া হবে। তাই প্রথমেই সেতুর ৪২টি পিলার তৈরি করা হচ্ছে। এদিকে এ সেতুর কাজ পর্যবেক্ষণে উচ্চ পর্যায়ের বিশেষঞ্জ দল আসছে। এই বিশেষঞ্জ প্যানেল সেতুর সেতুটির দু’দিন ধরে বৈঠক করবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আব্দুল আউয়াল ও জাপান থেকে ইসিহারা বাংলাদেশে পৌঁছেনে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে এ বিশেষজ্ঞ টিমের অপর বিদেশী সদস্য কানাডার অস্টেন ফিল্ট ও নেদারল্যান্ডসের কারবাজাল পথে রয়েছেন। জামিলুর রেজা চৌধুরীসহ বাংলাদেশের পাঁচ জন এবং বিদেশী ৪ জন। মোট ৯ জনের এ টিম বৈঠকে বসবেন। নতুন গতি পেয়ে পদ্মা সেতুর কর্মযজ্ঞে দেশী-বিদেশী প্রায় ২০ হাজার কর্মীর নিরন্তর কাজ করছেন। ২০ হাজারের ১৮ হাজার বাংলাদেশী। আর দু’হাজার বিদেশীর। এর মধ্যে ৫শ’ রয়েছে বিদেশী নারী কর্মী। পালাক্রমে রাতদিন কাজ করে যাচ্ছে তারা। এই ২০ হাজারের বাইরে নিরাপত্তায় রয়েছে দু’পারে ২ হাজার সেনা সদস্য। এছাড়া পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনতো রয়েছেই। সকলের মধ্যেই নতুন উদ্দীপনা কাজ করছে। জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল হাসান বাদল জানান, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর সকলের মধ্যেই নতুন আত্মবিশ্বাস বিরাজ করেছে। তাই এ প্রকল্পের কাজে নতুন গতি পাচ্ছে। স্থানীয় সাংসদ অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তা এবং আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য এ পদ্মা সেতুর জন্য আরেকটি মাইলফলক। তিনি বলেন, অনুষ্ঠানে মানুষের স্বতঃস্ফূত অংশগ্রহণই অনেক কিছুর জানান দিচ্ছে। এটি শুধু সফলতা নয়, বাঙালীর বীরত্বগাঁথার এবং দেশের অগ্রগতির মাইলফলক। এ অঞ্চলের অগ্রগতির এখন নানা সম্ভবনা হাতছানি দিয়ে ডাকছে, যা আগে কেউ ভাবতেও পারেনি।
×