ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযোদ্ধা দিবস উপলক্ষে আলোচনায় সৈয়দ আশরাফ

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ সৃষ্টির অপচেষ্টা

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ২ ডিসেম্বর ২০১৫

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ বিপক্ষ সৃষ্টির অপচেষ্টা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ও বিপক্ষের শক্তির বিভাজন বাংলাদেশে ছিল না। ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এ বিভাজনটা ইচ্ছা করেই করা হয়েছে। অনেকেই আমরা এ ফাঁদে পা দিয়েছি। মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে মুক্তিযোদ্ধা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ আশরাফ আরও বলেন, জার্মানিতে হিটলার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেছিল। যুদ্ধে তাদের পরাজিত করা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত জার্মানিতে হিটলার ও নাৎসিদের নাম কেউ নেয় না। তিনি বলেন, আমারও একাত্তরে পাকিস্তানীদের যুদ্ধে পরাজিত করেছি। অথচ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর পরাজিত শত্রুদের দোসর দেশের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন করেছিল জেনারেল জিয়াউর রহমান ও এরশাদ। তিনি বলেন, আজ সমগ্র জাতির ঐক্যবদ্ধ থাকার কথা। কিন্তু সেখানে আমরা দেখছি বিভাজন। কারণ আমাদের মূল চেতনায় মুক্তিযুদ্ধ। মূল নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধু। তাই বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে মানুষের চেতনায় যারা অন্তর্নিহিত করতে চায়, তাদের কোন স্থান নেই। উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশে সৈয়দ আশরাফ বলেন, আমরা আপনাদের সামনে অঙ্গীকার করেছিলাম ক্ষমতায় এলেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর একের পর এক যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, সেই মামলার তদন্ত হয়েছে, বিচার হয়েছে এবং অনেকের রায়ও কার্যকর করা হয়েছে। এটা আমাদের পরম পাওয়া। এতে লাখো মা-বোন যারা সম্ভ্রম হারিয়েছে এবং যারা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছে- তাদের আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে। তিনি বলেন, আমরা চাই সব মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যবদ্ধ থাকুন। দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। দেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের আরও প্রয়োজন। আমরা মাত্র শুরু করেছি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিতে। তার নেতৃত্বে দেশকে আরও এগিয়ে নেয়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, এ দিনটি (১ ডিসেম্বর) আপনারা মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে পালন করেন। আপনারা (মুক্তিযোদ্ধারা) দিবসটির সরকারী স্বীকৃতির চেষ্টা করেছেন। আমরাও আপনাদের সঙ্গে একমত। সরকারী স্বীকৃতি আদায়ের প্রচেষ্টা আমরাও করব, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। এটা সব মুক্তিযোদ্ধার ন্যায্য দাবি। আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগ না থাকার কারণে এখনও তা হচ্ছে না। কিন্তু আমরা ও মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল যদি একটু সিরিয়াস হই, তাহলে সেদিন বেশি দূরে নয় আমরা এ দিনটি সরকারীভাবে পালন করতে পারব। মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) হেলাল মোর্শেদের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব) নজরুল ইসলাম, সংগঠনের মহাসচিব ইসমত কাদির গামা, মহাসচিব (প্রশাসন) এমদাদ হোসেন মতিন, মহাসচিব (কল্যাণ) আলাউদ্দিন, মহাসচিব (অর্থ) শাহ আলম।
×