ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দিবারাত্রি টেস্টের পক্ষে স্মিথ ও ম্যাককুলাম

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ১ ডিসেম্বর ২০১৫

দিবারাত্রি টেস্টের পক্ষে স্মিথ ও ম্যাককুলাম

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ১৩৮ বছরের ইতিহাসে নতুন ধারার সাক্ষী হলো এ্যাডিলেড। গোলাপি বলে ফ্লাডলাইটের আলোয় প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হলো দিবারাত্রির টেস্ট। এ আয়োজনকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার কমতি ছিল না। পক্ষে-বিপক্ষে মত দিয়েছেন ক্রিকেটের বড় বড় সব রথী-মহারথী। তবে দিবারাত্রির টেস্টের পক্ষে কথা বললেন সাক্ষী হওয়া দুই অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ ও ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। যদিও বোলারদের দাপটে মাত্র তিন দিনেই জয় তুলে নেয় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া। তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০তে জিতে নেয় স্মিথ বাহিনী। ‘এটা ছিল অসাধারণ এক অভিজ্ঞতা। তিন দিনে শেষ হওয়া কোন টেস্ট ম্যাচে ১,২০,০০০ দর্শকের উপস্থিতি সত্যি এ্যামেজিং।’ বলেন বিজয়ী অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্মিথ। এ্যাডিলেডে তিন দিনে মোট ১,২৩,৭৩৬ জন দর্শক খেলা উপভোগ করেন। যেখানে ইতিহাসের অংশ হতে প্রথম দিনই উপস্থিত হন ৪৭,৪৪১ জন; ১৯৩২-৩৩এ’র পর এ্যাডিলেডে যা দর্শক উপস্থিতির নতুন রেকর্ড। বিষয়টা সামনে উঠে আসার কারণটা অনুমেয়। ওয়ানডে ও টি২০’র দাপটে গত বেশ কয়েক বছর ধরে টেস্টের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন অনেকে। দর্শক সংখ্যা বাড়াতে তাই অভিনব এই দিবারাত্রির টেস্টের আয়োজন। যাতে অফিস বা দিনের কাজ শেষ করে বিকেলে ও সন্ধ্যায় দর্শক মাঠে হাজির হতে পারেন। সে লক্ষ্যে অনেকটাই সফল এই আয়োজন। সফরকারী অধিনায়ক ম্যাকুকলাম যেমন বলেন, ‘টেস্টকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এটি যুগান্তকারী এক পদক্ষেপ। এটা ভাবা যায় তিন দিনে ১,২০,০০০ মানুষ মাঠে এসেছে? যার অর্থ দর্শক ধারণাটা গ্রহণ করেছে। এটা তারই প্রমাণ। ভবিষ্যতে আমরা আরও বেশি করে এ ধরনের ম্যাচ চাইব। কেবল অস্ট্রেলিয়া নয়, নিউজিল্যান্ডেও যেন দিবারাত্রির টেস্টের আয়োজন হয়। দর্শক এ আয়োজনকে ভালভাবে গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন আয়োজক দেশ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের (সিএ) নির্বাহী প্রধান জেমস সাদারল্যান্ড। তিনি বলেন, ‘এটা উপযুক্ত সময়ের দারুণ এক আয়োজন। যেটিকে দর্শক লুফে নিয়েছে। এত মানুষ উপস্থিত হয়ে বুঝিয়েছেন যে, তারা আরও দিবারাত্রির ম্যাচ দেখতে চান।’ আলোচিত দিবারাত্রির টেস্টে সবচেয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে গোলাপি বল নিয়ে। সদ্য অবসরে যাওয়া অস্ট্রেলীয় ওপেনার ক্রিস রজার্স যেমন বলেন, ‘আমাকে পরিষ্কারভাবে বলটা দেখতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। ঠিক লাল বলের মতো পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিলাম না। একটু ঝাপসা মনে হচ্ছিল যা কখনই আদর্শ হতে পারে না।’ গোলাপি বলে অনুশীলনের অভিজ্ঞতা থেকে একথা বলেন তিনি। ডেভিড হাসি তো পরীক্ষামূলক নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া একাদশের মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচটিতে মাঠেই ছিলেন। তিনি বলেন, ‘এটা ৮০ ওভারের মতো টেকসই নয়। ম্যাচে আমাদের দু’বার বল বদল করতে হয়েছিল। সুতরাং আমার মনে হয়, দেরি হওয়ার আগেই ভাবার প্রয়োজন আছে!’ তবে ম্যাচ শুরুর আগেও নিজেদের পক্ষে দৃঢ় ছিলেন বলটির প্রতিষ্ঠা কোম্পানি কোকাবুরার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ব্রেট এলিয়ট, ‘শেষ পাঁচ বছর ধরেই অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে এমসিস, ইসিবি ও সিএ গোলাপি বলে প্রচুর সংখ্যক ম্যাচ খেলেছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আত্মপ্রকাশের জন্য এটি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত।’ শেষ পর্যন্ত মাঠেও তেমন কোন সমস্যা তৈরি হয়নি। বল যদি ঝামেলাই করত, অবশ্যই সেটি অধিনায়ক টের পেতেন। এ নিয়ে বরং এতটুকু অভিযোগ নেই স্মিথ ও ম্যাককুলামের।
×