ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঘরের মাঠে হার দিয়ে শুরু তামিমের বরিশাল বুলস ৩৩ রানে জয়ী

বরিশালের কাছেও হার চিটাগাংয়ের

প্রকাশিত: ০৭:২১, ১ ডিসেম্বর ২০১৫

বরিশালের কাছেও হার চিটাগাংয়ের

মিথুন আশরাফ, চট্টগ্রাম থেকে ॥ সবার মুখে একটি কথাই শোনা গেছে, রান হবে চট্টগ্রামের উইকেটে। বরিশাল বুলস রান করেও দেখাল। কিন্তু এত বেশি রান করল যে চিটাগাং ভাইকিংস তা অতিক্রম করতেই পারল না। হারল ৩৩ রানে। ঘরের মাটিতে প্রথম ম্যাচেই কুপোকাত হল তামিম ইকবালের দল চিটাগাং। সেই সঙ্গে টানা তিন ম্যাচে হারও হল। ঢাকায় যে বেহাল দশা হয়েছে চিটাগাংয়ের তা চট্টগ্রামেও বজায় থাকল। সেই তুলনায় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বরিশাল অনেকটাই এগিয়ে গেল। চিটাগাং যেখানে ৫ ম্যাচে ১ জয়ে মাত্র ২ পয়েন্ট পেয়েছে, সেখানে বরিশাল ৪ ম্যাচে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট পুঁজি করে নিয়েছে। বরিশাল শুরুতে বিপদে পড়ে। ৬৩ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে। একটা সময় মনে হচ্ছিল ১০০ রানও করতে পারবে না। অথচ সেই দলই কিনা দেখা গেল ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭০ রান করে ফেলেছে! কিভাবে সম্ভব হল? অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ যে হাল ধরলেন। ৫১ রান করলেন। তার সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে শ্রীলঙ্কান সেকুগে প্রসন্ন’র ৬১ রানের জুটিই ও সপ্তম উইকেটে কেভন কুপারের ৩৫ রানের জুটিই বরিশালকে অনেক এগিয়ে দেয়। মোহাম্মদ আমির ও জিয়াউর রহমান ২টি করে উইকেট নেন। এ রান অতিক্রম করতে গিয়ে ১৯.৫ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রানের বেশি করতে পারেনি চিটাগাং। যে দলটি টুর্নামেন্টের প্রথম তিন ম্যাচে ১৭০ রানের নিচে করেইনি, তারাই কিনা এত কম রানে অলআউট হয়ে গেল। চতুর্থ ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে ৯২ রানে অলআউট হওয়ার পর থেকেই রান খরায় ভুগতে শুরু করল চিটাগাং। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন নাঈম। বল হাতে ৩ উইকেট নেন কেভন কুপার। ভাগ্যক্রমে যদি সিলেট সুপার স্টারসের বিপক্ষে মিরপুরে না জিততো চিটাগাং তাহলে টানা ৫ ম্যাচেই হয়ত হার হত নিয়তি। তা থেকে মুক্তি মিলেছে। তবে টানা তিন হার হয়ে গেল চিটাগাংয়ের। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই হারে চিটাগাং। ঢাকাতেও যেমনটি ঘটেছে, চট্টগ্রামেও তাই ঘটেছে। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ২ উইকেটে হারের পর সিলেটকে হারায় চিটাগাং। তবে এরপর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে ৭ উইকেটে ও ঢাকা ডায়নামাইটসের কাছে ৬ উইকেটে হারে চিটাগাং। সোমবার চট্টগ্রাম ধাপের প্রথম ম্যাচেও হার হল দলটির। চিটাগাংয়ের উত্থান না থাকলেও বরিশাল সেই কাজটি ঠিকই করেছে। প্রথম ম্যাচেই রংপুরকে ১৩ রানে হারিয়েছে। এরপর সিলেট সুপার স্টারসকে ১ রানে হারিয়ে টানা দুই জয় তুলে নিয়েছে। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে গিয়ে কুমিল্লার কাছে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানেই হেরেছে। জয়ের ধারাবাহিকতা রাখতে পারেনি। চতুর্থ ম্যাচে এসে চিটাগাংকে হারিয়ে আবারও জয়ে ফিরেছে বরিশাল। বরিশালের এ জয়টি সবাইকে অবাকই করেছে। চট্টগ্রামে খেলা হচ্ছে। প্রতিপক্ষ দলটি আবার চিটাগাং। এ দলের বিপক্ষে শুরুতে বিপাকেও পড়ে বরিশাল। ৬৩ রানের মধ্যে এভিন লুইস, রনি তালুকদার, সাব্বির রহমান, দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা মেহেদী মারুফ ও নাদিফ চৌধুরীর উইকেট হারিয়ে বসে বরিশাল। গুরুত্বপূর্ণ ৬ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে খাদের কিনারাতে পড়ে যায়। সেখান থেকে এক এক করে মাহমুদুল্লাহ, প্রসন্ন (৩৬) ও কুপার (২১*) দলকে এতদূর নিয়ে আসেন। কঠিন পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরে অল্প রানে অলআউট হওয়ার সম্ভাবনাকে শুধু উড়িয়েই দিলেন না, বড় স্কোরও গড়েন। যা দলকে জয়ের জন্য মজবুত ভীত গড়ে দেয়। বরিশালের মত চিটাগাংও শুরুতেই বিপদে পড়ে। ৭৭ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে। তামিম ইকবাল, কামরান আকমল, তিলকারতেœ দিলশান, এনামুল হক বিজয়, এলটন চিগুম্বুরা ও জিয়াউর রহমানের উইকেট হারায়। গুরুত্বপূর্ণ ৬ ব্যাটসম্যান যখন এত কম রানে আউট হয়ে যায় তখন কি আর ম্যাচ জেতা যায়? এরপরও সপ্তম উইকেটে গিয়ে যে নাঈম ইসলাম ও মোহাম্মদ আমির ৪৫ রানের জুটি গড়েন তা প্রশংসাই পায়। দু’জনই দলের পক্ষে সবচেয়ে বেশি রানও করেন। ১২২ রানে আমির (২০) আউটের পর ৭ রান যোগ হতেই নাঈমও (৩৮) সাজঘরে ফেরেন। ৮ উইকেটের পতন ঘটে যায়। ১৩৭ রানে গিয়ে ১ বল বাকি থাকতে অলআউটই হয়ে যায় চিটাগাং। পরপর দুই বলে মাহমুদুল্লাহ দু’টি উইকেট শিকার করে ফেলেন। চট্টগ্রাম ধাপের প্রথম ম্যাচে যখন টস হয়েছে, জিতেছে চিটাগাং। আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে। তখনই তামিম ইকবাল বলেছেন, ‘অনেক ভাল উইকেট। তিন পরিবর্তন নিয়ে নামছি। জীবন মেন্ডিসের পরিবর্তে এলটন চিগুম্বুরা, সাঈদ আজমলের পরিবর্তে কামরান আকমল ও ইয়াসিরের পরিবর্তে আসিফ হাসান খেলবে।’ টস হারার পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বলেছেন, ‘আমরা টস জিতলে প্রথমে ফিল্ডিংই নিতাম। টার্গেট অতিক্রম করার জন্যই খেলতাম। দু’টি পরিবর্তন নিয়ে নামছি। ব্রেন্ডন টেইলরের পরিবর্তে মেহেদী মারুফ খেলবে।’ মাহমুদুল্লাহ কি এখন উল্টো কথাই বলবেন না। বলবেন না যে ‘টস হেরেই ভাল হয়েছে’, তাতেই যে জয় মিলেছে। রংপুর, কুমিল্লা, ঢাকার পর বরিশালের কাছেও হারল চিটাগাং ভাইকিংস।
×