ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁও পৌর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতাদের দলীয় মনোনয়ন লাভে লবিং

প্রকাশিত: ২৩:৫৬, ২৯ নভেম্বর ২০১৫

ঠাকুরগাঁও পৌর নির্বাচনে  আওয়ামীলীগ নেতাদের দলীয় মনোনয়ন লাভে লবিং

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও ॥ পৌর নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীরা কেন্দ্রের দলীয় মনোনয়ন লাভে লবিং এ দৌড়ঝাপে ব্যস্ত সময় কাটোচ্ছেন। বিএনপি তাদের প্রার্থী মনোনয়ন করলেও জাতীয় পার্টি ও বাম দল গুলোর গায়ে এখনও নির্বাচনী হাওয়া লাগেনি। এছাড়া আকস্মিকভাবে দলীয় প্রতীকের সামনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে অনেকে সাহস ও ভরসা পাচ্ছেন না। তাই এবার মেয়র প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হবেনা বলে মাঠ পর্যায়ে সাধারণ ভোটাররা মনে করছেন। তফশিল ঘোষণার পর আওয়ামীলীগ ও বিএনপি মেয়র পদসহ অন্যান্য পদের জন্য দলের নেতাকর্মীর কাছে দরখাস্ত আহবান করে। এরই প্রেক্ষিতে আওয়ামীলীগের প্রার্থীতা লাভের জন্য যারা জেলা কমিটির কাছে আবেদন করেন এবং জেলা কমিটি যাদের নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন বাবু, ঠাকুরগাঁও আইন কলেজের অধ্যক্ষ, সাবেক উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা যুব মহিলালীগের আহবায়ক তাহমিনা আখতার মোল্লা, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য আব্দুল মজিদ আপেল, বর্তমান প্যানেল মেয়র ব্যবসায়ী বাবলুর রহমান, পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল হক, প্রাক্তন পৌর চেয়ারম্যান এস, এম সোলায়মান আলী সরকার এবং বর্তমার মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা এসএমএ মঈন। এদের অধিকাংশ প্রার্থী এখন কেন্দ্রের সিন্দান্তের জন্য ঢাকায় অবস্থান করছেন। এদিকে কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ছোট ভাই জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি মির্জা ফয়সাল আমিন, বিএনপির পৌর কমিটির সভাপতি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, সাবেক ছাত্রনেতা বিএনপির জেলা কমিটির সদস্য ওবায়দুল্লাহ মাসুদ এবং গত পৌরসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী জেলা বিএনপি’র সহ-সভাপতি চৌধুরী গোলাম সারোয়ার রঞ্জু দলের কাছে মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়েছেন। এরমধ্যে জেলা ও পৌরকমিটি প্রাথমিক ভাবে মির্জা ফয়সাল আমিনকে মনোনীত করলেও এষনও চূড়ান্ত করেননি । জাসদ, জেএসডি, বাসদ, ন্যাপ, জাতীয় পার্টি, কমিউনিষ্ট পার্টি (সিপিবি), ওয়ার্কার্স পার্টির এখনও পৌর নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তবে সিপিবি জানিয়েছে মেয়র পদে প্রার্থী না দিলেও কাউন্সিলর পদে প্রার্থী তাদের রয়েছে। ঠাকুরগাঁও পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হওয়া স্বত্বেও এলাকার বিশেষ করে মহল্লার রাস্তাগুলোতে গত ৫ বছরে মেরামত সংস্কারে পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন। পৌর পানি সরবরাহ এক বছর ধরে প্রায় বন্ধ। পানির জন্য শহরবাসী হাহাকারে রয়েছে। শহীদ মোহাম্মদ আলী স্টেডিয়াম সড়ক হতে সমস্ত শহরের রাস্তা, অলিগলিতে ডাস্টবিন না থাকায় বছরের পর বছর ধরে ময়লা আবর্জনার শহর হিসেবে পরিচিত হয়ে গেছে। শহরে নেই প্রয়োজনীয় পাবলিক টয়লেট, খাবার পানির ব্যবস্থা । ফলে এই শহরটিতে আধুনিকতার ছাপ এখনো পড়েনি। ওয়ার্ড কাউন্সিলররা এ ব্যাপারে ‘গা’ করেন না। সিংহভাগ কাউন্সিলরের একই কথা “আমরা কি করব”! উপর ওয়ালাই যদি চোখ কান বন্ধ রাখেন তাহলে নীচের ওয়ালারাদের কি করার আছে ? এদিকে বেশ কয়েক জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোটা অংকের ডোনেশন দিয়ে বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিদের যেমন- মাদার তেঁরেসা, নেলসন ম্যান্ডেলা সম্মান লাভ করে নিজেকে ধন্য মনে করে বগল বাজিয়ে ঢেঁকুর ফেলছেন। এইসব কাউন্সিলরদের নেই কোন সমাজ সেবা, নেই কোন অবদান। বিগত পৌর নির্বাচনে নগরবাসী বড় আশা করে আওয়ামীলীগ প্রার্থীকে মেয়র নির্বাচিত করেছিলেন। শহরবাসীর এ আশা যেন প্রথম শ্রেণি হওয়াতে বহু বিদেশী অনুদান ও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরন না হওয়ায় এবারের নির্বাচনে সাধারণ মানুষ ভোটাররা হতাশার মধ্যে পরেছেন। নির্বাচনী হাওযায় তাই সাধারণ মানুষ সামিল হচ্ছেন না। এমনকি সরকারী দলের তৃণমূল কর্মীরাও সামনে এগুচ্ছে না। জানা যায়, আওয়ামীলীগের মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে তৃণমূলের ভোটে মনোনয়ন দেয়া হবে। তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ঠাকুরগাঁও পৌরসভা যেহেতু প্রথম শ্রেণির তাই হাইকমান্ড থেকে মেয়র প্রার্থী ঘোষনা করার জোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে নির্বাচনী বাতাসে ভাসছে এ খবরটি।
×