ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

এখন চলছে নতুন হিসাব নিকাশ

সরকারী চাকুরেদের ‘খুশি’ করতে ঢেলে সাজা হচ্ছে পে স্কেল

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৭ নভেম্বর ২০১৫

সরকারী চাকুরেদের ‘খুশি’ করতে ঢেলে সাজা হচ্ছে পে স্কেল

এম শাহজাহান ॥ সরকারী চাকরিজীবীদের সবাইকে ‘খুশি’ রাখতে ঢেলে সাজা হচ্ছে অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামো। এজন্য করা হচ্ছে নতুন হিসাব-নিকাশ। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বহাল রাখতে বেতন কাঠামোতে ফের ঘষামাঝা চলছে। কাক্সিক্ষত এই টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালে বাড়তি কত টাকার প্রয়োজন হবে সে হিসাবও কষছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ কারণে আগামী ডিসেম্বর মাসের আগে আর চূড়ান্ত হচ্ছে না অস্টম পে-স্কেল। তাড়াহুড়ো করে বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করতে চান না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই তিনি সবাইকে খুশি রাখার ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ঠা-ামাথায় নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্তকরণের কাজ শুরু করেছেন। জানা গেছে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নিয়মিত মাসিক বেতন-ভাতা পাচ্ছেন দেশের প্রায় ২১ লাখ সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী। এরমধ্যে সরকারী চাকরিজীবীর সংখ্যাই প্রায় ১৪ লাখ। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক, স্বায়ত্তশাসিত, আধাস্বায়ত্তশাসিত, উন্নয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত চাকরিজীবীরা এ হিসাবের বাইরে রয়েছেন। যদিও তারা সবাই সরকারী কোষাগার থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। ওই হিসাবে দেশে বর্তমানে বর্তমানে ২১ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন, যারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে নিয়মিত মাসিক বেতন পাচ্ছেন। এদিকে, অষ্টম পে-স্কেলে বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুণের বেশি হলেও শুধুমাত্র টাইম স্কেল ও সিলেকশ গ্রেড বাতিল করার কারণে সরকারী চাকরিজীবীরা খুশি হতে পারেননি। এ নিয়ে প্রশাসনে এক ধরনের অস্থিরতাও বিরাজ করছিল। যদিও অষ্টম পে-স্কেল কার্যকর করতে বিলম্বের কারণে বিভিন্ন ক্যাডারের কর্মকর্তারা তাদের প্রাপ্য সিলেকশন গ্রেড বুঝে নিয়েছেন। তবে আইন ও যুক্তির মারপ্যাঁচে কেউ এই সুযোগ পাচ্ছেন, কেউবা বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া সরকারের ২৮টি ক্যাডারের মধ্যে কমপক্ষে আটটি ক্যাডারে ২ হাজার ৫০২ জন কর্মকর্তা সিলেকশন গ্রেড পেয়েছন। নিজ মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতার ঘাটতি থাকায় বাকি ক্যাডারের কর্মকর্তারা এই গ্রেড নিতে পারছেন না। এছাড়া ডিসেম্বর পর্যন্ত এই আর্থিক সুবিধা পাওয়ার আকস্মিক সুযোগ আসায় ২০টি ক্যাডার এখন নিয়োগবিধি ও হিসাব-নিকাশ চূড়ান্ত করে তাদের সিলেকশন গ্রেড পাওয়ার চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে সচিবালয়সহ দেশের সকল পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা-কর্মাচরীরা টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের দাবি জানিয়ে আসছেন। এই বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অষ্টম পে-স্কেল ঢেলে সাজাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। সম্প্রতি সচিবালয়ে এক সভা শেষে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডস সফরে রয়েছেন। তিনি আসার আগেই বিষয়টি চূড়ান্ত করার ইচ্ছা ছিল কিন্তু এখন আর সেটা হচ্ছে না। এটাতে আরেকটু সময় লাগবে। তবে যে কোন পরিস্থিতিতে ডিসেম্বরের মধ্যে পে-স্কেলটি চূড়ান্ত করতে চান তিনি। জানা গেছে, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। এরপরই অর্থমন্ত্রীর কথার সুর ও ধরন পাল্টে গেছে। এখন তিনিও এ বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিতে কাজ শুরু করেছেন।
×