স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কার অবস্থান ভাল? মোহালি টেস্টের প্রথম দিনশেষে এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়াটা কঠিন। বোলারদের দাপটে প্রথম দিনেই ১২ উইকেটের পতন ঘটেছে। স্বাগতিক ভারত টস জিতে আগে ব্যাট করে মাত্র ২০১ রানে গুটিয়ে গেছে। যদিও ওপেনার মুরালি বিজয় ৭৫ রানের দারুণ একটি ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন কিন্তু সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার অনিয়মিত স্পিনার ডিন এলগারের ঘূর্ণি আঘাতে দ্রুতই মুখ থুবড়ে পড়েছে ভারতের প্রথম ইনিংস। জবাব দিতে নেমে তেমন স্বস্তিতে নেই প্রোটিয়া শিবিরও। দিনশেষে ২৮ রান তুলতেই দুই উইকেট হারিয়েছে তারা ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে। ৪ টেস্টের সিরিজে প্রথম ম্যাচের প্রথম দিনশেষে এখনও ভারত এগিয়ে আছে ১৭৩ রানে।
ভারতীয় বোলিংয়ের ভয়ঙ্কর অংশ যদি হয় স্পিন, তবে দক্ষিণ আফ্রিকার পেস। মোহালি টেস্টের প্রথম দিনে ভারত ব্যাট করতে নামার পর প্রোটিয়াদের সেই শক্তিরই প্রমাণ মিলেছে। দ্বিতীয় ওভারেই ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ানকে ফিরিয়ে দেন পেসার ভারনন ফিল্যান্ডার। এরপর ভালভাবেই সামলে নেয় ভারত। বিজয়ের সঙ্গে দারুণ খেলছিলেন চেতেশ্বর পুজারা। ৬৩ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপদটা কাটানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন এ দুজন। প্রোটিয়া অধিনায়ক হাশিম আমলার সিদ্ধান্তটা তখনই কার্যকর ভূমিকা রাখল। তিনি অনিয়মিত অর্থোডক্স এলগারকে আনার পরই দ্বিতীয় সাফল্য পায় তারা। পুজারাকে (৩১) ফিরিয়ে প্রথম শিকার করেন মূলত ওপেনিং ব্যাটসম্যান এলগার। এরপর তার স্পিনের কাছেই কুপোকাত হয়েছে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মিডলঅর্ডার। বড় কোন ইনিংস খেলতে পারেননি অধিনায়ক ভিরাট কোহলিসহ অন্য কেউ। একপ্রান্ত আগলে ওপেনার বিজয় দেখেছেন বাকিদের আসা-যাওয়ার মিছিল। তিনিও ১৩৬ বলে ১২ চারে ৭৫ রান করে স্পিনার সাইমন হারমারের শিকারে পরিণত হন। রবীন্দ্র জাদেজা ৩৮ রানের একটি ইনিংস খেলে আরও অপদস্থ হওয়া থেকে বাঁচিয়েছেন ভারতকে। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে এলগার ২২ রানে নেন ৪ উইকেট। আরেক স্পিনার ইমরান তাহির ও পেসার ফিল্যান্ডার দুটি করে উইকেট নেন। ২০১ রানে শেষ ভারতের প্রথম ইনিংস।
ফিল্যান্ডার যদি ভারতের হয়ে হয়তো স্পিনার হিসেবেই থাকতেন। আর ভারতীয় অফস্পিনার রবীচন্দ্রন অশ্বিন দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেললে একজন পেসার হিসেবে দেখা যেত তাকে। এমনটা বলার কারণ নিজ নিজ দেশের হয়ে তাদের প্রায় সামঞ্জস্যপূর্ণ অবদান। পেস বান্ধব উইকেটে ফিল্যান্ডার ২৩ টেস্টে ১০৯ উইকেট এবং স্পিন বান্ধব উইকেটে অশ্বিন ১৯ টেস্টে নিয়েছেন ১২১ উইকেট। মোহালি টেস্টেও ফিল্যান্ডার দুই উইকেট শিকার করেন। তবে প্রোটিয়া স্পিনাররা যেখানে সফল, নিশ্চিতভাবেই বোঝা যাচ্ছিল ভারতীয় বোলিংয়ের মূল শক্তি স্পিন দারুণ কার্যকরী হবে। সেটার প্রমাণ মিলল দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ে নামার পরই। অশ্বিনকে দিয়েই আক্রমণ শুরু করা ভারত প্রথম সাফল্য পায় সপ্তম ওভারে। অশ্বিন ফিরিয়ে দেন ওপেনার স্টিয়ান ভ্যান জাইলকে (৫)। এক ওভার বিরতি দিয়ে ভারতকে দ্বিতীয় উইকেট পাইয়ে দেন আরেক স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা। ফাফ ডু প্লেসিসকে শিকার করেন তিনি। বাকিটা সময় অবশ্য এলগার-আমলা পার করেছেন নির্বিঘেœ। দিনশেষে ২ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ২৮।
স্কোরকার্ড ॥ প্রথম দিনশেষে
ভারত প্রথম ইনিংস ২০১/১০; ৬৮ ওভার (বিজয় ৭৫, জাদেজা ৩৮, পুজারা ৩১, অশ্বিন ২০*, রাহানে ১৫; এলগার ৪/২২, তাহির ২/২৩, ফিল্যান্ডার ২/৩৮, রাবাদা ১/৩০, হারমার ১/৫১)।
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংস- ২৮/২; ২০ ওভার (এলগার ১৩*, ভ্যান জাইল ৫, প্লেসিস ০, আমলা ৯*; অশ্বিন ১/৪, জাদেজা ১/৭)।
প্যারিসে দ্যুতি ছড়াচ্ছেন নাদাল-ফেদেরার
স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্যারিস মাস্টার্সে জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছেন সেরা দুই তারকা রাফায়েল নাদাল এবং রজার ফেদেরার। দারুণ জয়েই টুর্নামেন্টের শেষ ষোলতে জায়গা করে নিয়েছেন তারা। চলতি বছরটা একেবারেই বাজে কেটেছে দুই তারকার। তবে শেষটায় ভাল করতে দুজনই মরিয়া। যদিও বছর শেষের মাস্টার্স ১০০০ সিরিজের এই টুর্নামেন্টের শেষ নয়টি আসরে ফেদেরার ও নাদালের মধ্যে মাত্র একটি শিরোপা এসেছিল। ২০১১ সালে ফাইনালে জো-উইলফ্রেইড সোঙ্গাকে হারিয়ে সেই শিরোপা নিজের করে নিয়েছিলেন সুইস নাম্বার ওয়ান ফেদেরার। আর ইনজুরির কারণে নাদাল অবশ্য বেশ কয়েকবারই এই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেননি। ২০০৭ সালে সর্বশেষ তিনি ফাইনালে খেললেও শিরোপা জিততে পারেননি। তবে বুধবারের দ্বিতীয় রাউন্ডে নিজ নিজ ম্যাচে দাপুটে জয় তুলে নিয়েছেন তারা। সেইসঙ্গে প্রতিপক্ষদের কাছে অন্তত একটি বার্তাও পৌঁছে গেছে যে, এবার আর কোন ছাড় নয়, শিরোপা নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরবেন দুই তারকার একজন। রজার ফেদেরার ৬-১ এবং ৬-১ গেমে ইতালির আন্দ্রেস সিপ্পিকে হারিয়ে যেন ফেদেরার সেই সতর্ক বার্তাটাই দিয়েছেন। ম্যাচের শুরু থেকেই ফেদেরার নিজেকে প্রমাণ করেন। মাত্র ১০ মিনিটে ৪-০ গেমে এগিয়ে যাবার নয় মিনিট পরে ৬-১ গেমে প্রথম সেট নিজের করে নেন ফেড এক্সপ্রেস।