ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আহত ১০ ॥ আট ঘণ্টা পর স্বাভাবিক, তদন্ত কমিটি গঠন

নাটোরে ট্রেন-ট্রাক সংঘর্ষ

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৪ নভেম্বর ২০১৫

নাটোরে ট্রেন-ট্রাক সংঘর্ষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর, ৩ নবেম্বর ॥ ঢাকাগামী আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন ও পাথর বোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষে ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়ে ১০ জন আহত হয়েছে। সোমবার রাত সোয়া ১টায় নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের হুগোলবাড়িয়া রেল ক্রসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে নাটোরের সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ট্রেনের যাত্রীরা দুর্ভোগের শিকার হয়। দুর্ঘটনার প্রায় ৮ ঘণ্টা পর নাটোরের সঙ্গে সারাদেশের রেল চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিলকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার ব্রিগেডের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড ও ট্রেন যাত্রীরা জানান, সোমবার গভীর রাতে ঢাকাগামী আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন নাটোর স্টেশন ছেড়ে আসে। এর অল্প কিছুক্ষণ পরই নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের হুগোলবাড়িয়া রেল ক্রসিংয়ে গেটের সিগন্যাল না থাকায় সোনা মসজিদ থেকে খুলনাগামী পাথর বোঝাই ট্রাকের সঙ্গে বিকট শব্দে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়। এতে ট্রাক ও ট্রেনের অন্তত ২০ যাত্রী আহত হয়। ট্রেন যাত্রীরা অভিযোগ করেন, রেল ক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেটম্যানের অবহেলার কারণে শত শত যাত্রীর প্রাণ ঝরে যেতে পারত। তবে আল্লাহর অশেষ রহমতে সবার জীবন রক্ষা পেয়েছে। তারা বলেন দুর্ঘটনা ঘটার পরও গেটম্যানকে সেখানে দেখা যায়নি। এমনকি নাটোর রেল স্টেশনে কর্তব্যরত কোন কর্মকর্তাকেও ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি। তারা রেল ক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেট ম্যানের কর্তব্যে অবহেলার জন্য তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। রেললাইনের ওপর ট্রাক ও রেলের বগি বিকল থাকায় উদ্ধারকারী ট্রেন না আসা পর্যন্ত নাটোরের সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঘটনার প্রায় ৬ ঘণ্টা পর ঈশ্বরদী থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন এসে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটি লাইনে স্থাপন করলে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। এর পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত নাটোর সদর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, রেল ক্রসিং গেটের সিগন্যাল ফেলা না থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়। যাত্রীরা নিরাপদে আছে এবং যাতে তারা নিরাপদে যেতে পারে তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। নাটোর রেলস্টেশন মাস্টার অশোক কুমার চক্রবর্তী জানান, হুগোলবাড়িয়া রেল ক্রসিংয়ে সুলতান নামের অস্থায়ীভাবে নিয়োগকৃত (টিএলআর) গেটম্যান দায়িত্বে রয়েছে। তবে ঘটনার সময় সে সেখানে ছিল কিনা তা তিনি জানেন না। এছাড়া স্টেশনে রাতের দায়িত্বে ছিলেন ওহিদুর রহমান। তিনি খবর পাওয়া পর ঘটনাস্থলে যান। এ ব্যাপারে রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় ম্যানেজার আফজাল হোসেনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা শওকত জামিলকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ওই রেল ক্রসিংয়ে দায়িত্বরত গেটম্যান ভয়ে সেখান থেকে চলে গিয়েছিল। আর স্টেশন মাস্টারকে ঘটনাস্থলে না পাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি জানান, তার অফিস ছেড়ে যাওয়ার কোন নিয়ম নেই।
×