ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘হত্যার খবরের পেপার দিয়ে বেরিয়ে যান প্রধান শিক্ষক’

প্রকাশিত: ১৮:০৩, ৩ নভেম্বর ২০১৫

‘হত্যার খবরের পেপার দিয়ে বেরিয়ে যান প্রধান শিক্ষক’

অনলাইন ডেস্ক ॥ ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বরে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়। ‘সেই ঘটনার প্রায় দেড়দিন পর, আমরা দুই ভাই ভারতের যে স্কুলে পড়তাম, তার প্রধান দেশটির যেসব পত্রিকায় জেলহত্যার খবর ছাপা হয়েছিল, সেগুলো আমাদের দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যান। সেগুলো পড়ে, আমার ছোটভাই প্রথমে কাঁদতে শুরু করে। এর কিছুক্ষণ পর কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি আমিও।’ ‘আমি তখন পড়ি ক্লাস ইলেভেনে, ভাই আরো ছোট। আমার তিনটি বোনের কারোই বিয়ে হয়নি। মা আমাদের নিয়ে পড়লেন অথৈ সাগরে। এমন দু:সময়ে মানুষ পড়েনা তানা, কিন্তু পড়লে সামলে ওঠা খুব কঠিন।’ ‘আমার পিতা কোন অর্থ-সম্পদ রেখে যাননি। সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখা এবং পুরাতন সংসদ ভবন শাখা মানে নাখালপাড়া শাখা থেকে মোট সাত হাজার দুশো পঞ্চাশ টাকা পাই আমরা।’ বিবিসি বাংলাকে কথাগুলো বলছিলেন ১৯৭৫ সালের ৩রা নভেম্বরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে নিহত জাতীয় চার নেতার অন্যতম এএইচএম কামরুজ্জামানের বড় ছেলে এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র খায়েরুজ্জামান লিটন। জেলহত্যা দিবসের চল্লিশ বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়। ঐ ঘটনার আগে সে বছরই ১৫ই আগস্ট বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এরপরই এই জাতীয় চার নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। তিন দশকেরও বেশি সময় পরে পরবর্তীতে ঐ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়। মি. লিটন বলছেন, যে অপরাজনীতির বলি হয়েছিলেন তাঁর পিতাসহ অন্য জাতীয় নেতৃবৃন্দ, সে রাজনীতি এখনো বাংলাদেশ থেকে নির্মূল হয়নি। প্রতিক্রিয়াশীল, সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় উগ্রপন্থী শক্তিকে এখনো সমূলে উৎপাটন সম্ভব হয়নি। আর সেজন্য মি. লিটন মনে করেন, সরকারের সাথে সাথে প্রতিটি নাগরিকে দায়িত্ব এসব প্রতিরোধে সজাগ থাকা ও চোখ-কান খোলা রাখা। সূত্র: বিবিসি বাংলা
×