ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে নাটকীয় ম্যাচে ছক্কা হাঁকিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ১ উইকেটে জেতালেন মেন্ডিস

ভাগ্যগুণে জয় বললেন ম্যাথুস

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৩ নভেম্বর ২০১৫

ভাগ্যগুণে জয় বললেন ম্যাথুস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভাগ্যগুণ ছাড়া কি-ই বা বলা যায়। নিশ্চিত জয় থেকে নিশ্চিত হারের অবস্থায় চলে যাওয়া, অতঃপর শেষ ব্যাটসম্যান অজন্তা মেন্ডিসের ছক্কায় ১ উইকেটের নাটকীয় জয়! বৃষ্টিবিঘিœত শ্রীলঙ্কা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ওয়ানডে ছড়িয়েছে ক্রিকেটের সকল রোমাঞ্চ। তাই তো পাওয়া জয়কে ‘ভাগ্যগুণে’ বলে অভিহিত করলেন স্বাগতিক অধিনায়ক এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস! ‘শেষ পর্যন্ত এটা আসলে ভাগ্যেরই জয়। আমরা মোটেই ভাল অবস্থায় ছিলাম না। কিন্তু ব্যাট হাতে অজন্তা মেন্ডিস কী দিয়ে যে কী করে ফেলল!’ ম্যাথুসের নিজেরও যেন বিশ্বাস হচ্ছে না। নিজেকে সামলে নিয়ে পরক্ষণে অবশ্য বোলার সুরাঙ্গা লাকমল, ব্যাটসম্যান তিলকারতেœ দিলশানের প্রশংসা করেন লঙ্কাপতি। পাশাপাশি দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করতে চান, একই ভেন্যু কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে যেটি অনুষ্ঠিত হবে বুধবার। রবিবার বৃষ্টিবিঘিœত ম্যাচটি নেমে আসে ২৬ ওভারে। অনেকটা টি২০র মেজাজ। ড্যারেন ব্রাভো (৫৮ বলে ৩৮), আন্দ্রে রাসেল (২৪ বলে ৪১) ও আট নম্বরে নামা অধিনায়ক জেস হোল্ডারের (১৩ বলে ৩৬) ব্যাটে ভর করে ৮ উইকেটে ১৫৯ রানের মধ্যম মানের স্কোর গড়ে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডজ। জবাবে তিলকারতেœ দিলশানের বিস্ফোরক হাফ সেঞ্চুরির (৩২ বলে ৫৯) সৌজন্যে একপর্যায়ে ১৩তম ওভারেই ২ উইকেটে ১০৪ রান তুলে নেয় ম্যাথুসের দল। মনে হচ্ছিল, জয় সময়ের ব্যাপার। তখনই দৃশ্যপটে ক্যারিবীয় বোলাররা, যেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৪ মাস পর খেলতে নামা রহস্যস্পিনার সুনীল নারাইন। ম্যাচের উনিশতম ও নিজের পঞ্চম ওভারে ৬ ডেলিভারির ব্যবধানে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি! ঘুরে যায় মোড়। পেসার জোনাথন কার্টার এসে আরও ২ উইকেট। তখন মনে হচ্ছিল, উল্টো উইন্ডিজের জয়টাই সময়ের ব্যাপার! জমে ওঠে শেষ দুই ওভারের নাটক। ১২ বলে শ্রীলঙ্কার চাই ১১ রান, ব্যাটিংয়ে শেষ জুটি মেন্ডিস ও লাকমল। ২৫তম ওভারে চার্লস প্রথম চার বলে একটি ওয়াইডসহ দেন ৩ রান। পঞ্চম বলে মারাত্মক ভুল ‘নো’। সুযোগ দুই হাতে কাজে লাগান মেন্ডিস। ‘ফ্রি হিটে’ ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে দারুণ এক জয় উপহার দেন মূলত স্পিন বোলিংই যার প্রথম কাজ সেই মেন্ডিস। ২০ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ২১! অবিশ্বাস্য জয়ের মূল নায়কই বলতে হবে তাঁকে। তবে হাফ সেঞ্চুরির সৌজন্যে ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে দিলশানের হাতে। সেই তিনিও মেন্ডিসকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। দিলশান বলেন, ‘এখানে ১৬০ অবশ্যই অতিক্রমযোগ্য স্কোর। আমি আর কৌশল পেরেরা বড় শট খেলে শুরুতেই পার্থক্য গড়ে দিতে চেয়েছিলাম। দুর্ভাগ্য হাফ সেঞ্চুরি হওয়ার পর প্রিয় শট দিলস্কুপ খেলার লোভ সামলতে পারিনি! এরপরও হয়ত আমারাই ম্যাচে ছিলাম। কিন্তু নারাইন আর চার্লস পরিস্থিতি বদলে দেয়। শেষ জুটিতে ৭ বলে ১২ রান তুলে নেয়া সামান্য ব্যাপার নয়। এক্ষেত্রে পুরো কৃতিত্ব মেন্ডিসের। ও অসাধারণ ব্যাট করেছে।’ অন্যদিকে জেসন হোল্ডারও হয়ত ভাগ্যের খেলায় হারটা মেনে নিয়েছেন। উইন্ডিজ অধিনায়ক বলেন, ‘মোটেই হতাশাজনক নয়। আমি কেবল এটাকে ক্লোজ ম্যাচে কঠিন হার বলে উল্লেখ করতে পারি! চার্লসের ওপরও রাগ নেই। খেলায় নাটকীয় রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে নারাইন আর সেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমাদের লক্ষ্য দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো।’
×