ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাহাড়ে জুম চাষে এবার বাম্পার ফলন ॥ চাষীর মুখে হাসি

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ২ নভেম্বর ২০১৫

পাহাড়ে জুম চাষে  এবার বাম্পার  ফলন ॥ চাষীর  মুখে হাসি

জীতেন বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি ॥ খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান এই তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড়ীদের জুম ক্ষেতে এখন পাকা ফসল তোলার ভরা মৌসুম। জুমিয়াদের ঘরে ঘরে উঠছে জুমের ধানসহ হরেক রকমের ফসল। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার বিস্তীর্ণ সবুজ পাহাড়ে পাকা জুম ধানের ঘ্রান। সারা বছর পরিশ্রম শেষে ফলানো ফসল ঘরে তুলতে পেরে আদিবাসী নারী-পুরুষের মুখে ফুটেছে হাসি। আদিবাসী কৃষকরা জানিয়েছে এবার পাহাড়ে জুমে বাম্পার ফলন হয়েছে। তিন পার্বত্য জেলার ক’দিন পর পর থেমে থেমে বৃষ্টি আর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে এবার জুমের আবাদ ও ফলন ভাল হয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ে পাকা সোনালী ধান জুমিয়াদের এনে দিয়েছে পারিবারিক স্বাচ্ছন্দ্য। ঘরে ঘরে এখন খুশির বন্যা। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ ও স্থানীয় জুম চাষীদের সঙ্গে কথা বলে এ খবর জানা গেছে। জানা গেছে, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান তিন পার্বত্য জেলায় চলতি মৌসুমে প্রায় ১৯ হাজার ৮শ’ ৬২ হেক্টর জমিতে ৪০ হাজার জুমিয়া পরিবার জুম চাষ করছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জুমের আবাদ হয়েছে বান্দরবান পার্বত্য জেলায়। বান্দরবানে ২৮ হাজার পরিবার প্রায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে জুমের আবাদ করেছে। রাঙ্গামাটিতে পাঁচ হাজার পরিবার সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে এবং খাগড়াছড়িতে ৬ হাজার ৬শ’ ৮২ পরিবার পাঁচ হাজার ৩শ’ ৬২ হেক্টর জমিতে আবাদ করেছে। পার্বত্য অঞ্চলে লাঙ্গলে চাষাবাদ জমির পরিমাণ খুবই কম। ফলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায় জীবন ধারণের একমাত্র উপায় পাহাড়ে আদিযুগের প্রথানুযায়ী জুম চাষের ফসল উৎপাদন। সাধারণত পৌষ-মাঘ মাসে মালিকানাধীন কিংবা পরিত্যক্ত ঘন বন-জঙ্গল, পাহাড় নির্বাচন করে জঙ্গল কাটা শুরু হয় এবং ফাল্গুন-চৈত্র মাস পর্যন্ত প্রখর রোদে শুকিয়ে আগুনে পুড়িয়ে ছাই করা হয়। নেড়া পাহাড়ে বৈশাখের প্রথম বৃষ্টিতে প্রথম বীজ ধান বপন ও পরবর্তীতে বিভিন্ন তরিতরকারির বীজ বপনসহ নানা প্রকার ঔষধি রোপণ করা হয়। বর্তমানে জুম চাষের উৎপাদিত ফসলের মধ্যে রয়েছে- মারপা (শশা জাতীয়) বরবটি, শীম, বেগুন, চিকন মরিচ, ধনিয়া, কুমড়া, ঢেঁড়শ, ভুট্টা, কচুসহ নানা প্রকার বর্ষাকালীন সবজি।
×