ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিটিসিএল বলছে ’১৬ সালের জুনেই শেষ হবে প্রকল্পের কাজ

এবার সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানোর প্রকল্প

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২ নভেম্বর ২০১৫

এবার সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানোর প্রকল্প

ফিরোজ মান্না ॥ বিটিসিএল ২০১৬ সালের মধ্যে সারাদেশে গ্রাম পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়ার জন্য আরও একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পে টেলিযোগাযোগের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করা হবে ৭ লাখ ৮ হাজার ৩০ কিলোমিটার এলাকায়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪শ’ ৯৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা। মোবাইল অপারেটররা সারাদেশে ওয়্যারলেস নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা দিলেও তা অনেক ব্যয়বহুল। গ্রাম পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবা দেয়ার জন্য এনএসএনভিত্তিক টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য চীন সহযোগিতা দিচ্ছে। প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে ২০১৬ সালের ৩০ জুনে। বিটিসিএল সূত্র জানায়, সারাদেশকে ইন্টারনেট সুবিধার আওতায় আনতে ‘অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট এ্যাট উপজেলা লেভেল প্রজেক্ট’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৭ বিভাগের ৬৪ জেলার ২৯০ উপজেলায় অপটিক্যাল ফাইবার কেবল বসানো হবে। সরকারী অর্থায়নে এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪শ’ ৯৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা। অপটিক্যাল ফাইবার কেবল সংযোগ স্থাপিত হলে গ্রাহকরা নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পাবেন। তখন শহর ও গ্রামের বৈষম্য অনেকাংশে কমে যাবে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করা হয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা ২০১৬ সালের ৩০ জুন। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে ঢাকা বিভাগের ১৬ জেলার ৬৭ উপজেলা, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার ৫৯ উপজেলা, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার ৩৮ উপজেলা, খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ৩৭ উপজেলা, রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৪২ উপজেলা, সিলেট বিভাগের ৪ জেলার ২৬ উপজেলা এবং বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ২১ উপজেলা। এসব এলাকায় অপটিক্যাল ফাইবার কেবল সংযোগ স্থাপন করা হবে। জানা গেছে, প্রকল্পের কেবল কেনা হবে খুলনা কেবল কোম্পানি থেকে। তবে যন্ত্রপাতি স্থাপনের কাজ করবে বিদেশী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মাটি খননের কাজ করবে স্থানীয় ঠিকাদার। ৭ লাখ ৮ হাজার ৩০ মাইল এলাকায় অপটিক্যাল ফাইবার কেবল বসানো হবে। এই অপটিক্যাল ফাইবার উপজেলা এক্সচেঞ্জের সঙ্গে জেলা এক্সচেঞ্জকে সংযুক্ত করবে। উপজেলা এক্সচেঞ্জ থেকে প্রতিটি ইউনিয়নে যে কোন সময় এ নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা যাবে। বেসরকারী অপারেটররাও এই অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের সংযোগ সুবিধা নিতে পারবে। সারাদেশে ইতোমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটারের বেশি অপটিক্যাল ফাইবার কেবল স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ৪২ জেলার দেড় শতাধিক নোডে মোট ৪৬ হাজার ক্ষমতাসম্পন্ন এডিএসএল এক্সেস নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত বিটিসিএলের ৭৪৭ এক্সচেঞ্জের (৬৪ জেলার) অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের সঙ্গে সংযোগ ঘটেছে। দেশে টেলিফোনের সংযোগ ক্ষমতা ১৪ লাখের বেশি হলেও এই সুবিধার আওতায় আসেনি বেশিরভাগ টেলিফোন। ইন্টারনেট সেবা দেয়ার যথেষ্ট সুযোগ সৃষ্টি হলেও সেই সেবা থেকে গ্রাহক বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে কম দামে গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন না। বিটিসিএল সূত্র মতে, টেলিফোন, এডিএসএল, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথের চার্জ কমিয়ে আনা হয়েছে। ব্যয়বহুল কপার কেবলের বদলে অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করে খরচ কমানোর পদক্ষেপ হাতে নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার ফাইবার কেবল লাইন স্থাপনের কাজ শেষ করা হয়। বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের সংযোগের কারণেই এসব করা সম্ভব হয়েছে। তবে এক হাজার ইউনিয়নে সংযোগ প্রকল্পটি বার বার পিছিয়ে যাচ্ছে টাকার অভাবে। ইউনিয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে গ্রাম পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে যেত। বিটিসিএলের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। টাকা পেলেই প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে। তবে বিটিসিএলের টার্গেট রয়েছে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ইউনিয়ন প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। এক হাজার চারটি ইউনিয়নে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশের সব ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট লাইন স্থাপন করা হবে।
×