ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় স্ত্রীর দেহ থেঁতলে দিলেন ইমাম

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২ নভেম্বর ২০১৫

পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় স্ত্রীর দেহ থেঁতলে  দিলেন ইমাম

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার ॥ পরকীয়ায় বাধা দেয়ায় এক যৌতুক লোভী ইমাম স্বামী পিটিয়ে স্ত্রীর শরীর থেঁতলে দিয়েছে। রবিবার সকালে আহত স্ত্রীকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মসজিদের ইমাম স্বামী হাফেজ মোহাম্মদ ওয়ারেসের হাতে আহত গৃহবধূ হাসপাতালের কেবিনে বর্তমানে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছে। শনিবার রাতে চকরিয়া পূর্ববড় ভেওলা চরপাড়া গ্রামে ঘটেছে অমানবিক এ নির্যাতনের ঘটনা। পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে ইমাম স্বামী ওয়ারেস দীর্ঘদিন ধরে তার ওপর এ অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্ত্রী ডেজিনা অভিযোগ করেছে। গৃহবধূর স্বজনরা জানান, ২০০৪ সালে কোণাখালী মরংঘোনা এলাকার শাহ আলমের মেয়ে ডেজিনা আক্তারের (২৮) সঙ্গে সামাজিকভাবে বিয়ে হয় পূর্ববড় ভেওলা নুরুল ইসলামের পুত্র হাফেজ মোহাম্মদ ওয়ারেসের। বিয়ের সময় বরপক্ষকে আসবাবপত্র, কাপড়-চোপড়, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার যৌতুক দেয়া হয়। ইতোমধ্যে তাদের সংসারে ২টি মেয়ে সন্তানেরও জন্ম হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী ও শ্বশুর পক্ষের লোকজন তাকে নানাভাবে নির্যাতন করতে শুরু করে। এ ঘটনা নিয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। গৃহবধূ ডেজিনা আক্তার অভিযোগ করেছেন, সালিশী বৈঠকের পর তাকে বাড়িতে নিয়ে কিছুদিন পর স্বামী ওয়ারেস, শ্বশুর নুরুল ইসলাম, দেবর জয়নাল আবেদিনসহ পরিবারের লোকজন তার ওপর যৌতুকের দাবিতে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। দুটি সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করে আসছেন। তার স্বামী ওয়ারেস দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় একটি মসজিদে ইমামতি করেন। সেই সুবাদে ওই এলাকায় একটি মেয়ের সঙ্গে তার পরকীয়া প্রেমের সৃষ্টি হয়। স্বামীর পরকীয়া প্রেমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তার ওপর নেমে আসে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের ধারাবাহিক নির্যাতন। আহত ডেজিনা বলেন, শনিবার রাতেও আগের মতো স্বামী ওয়ারেস যৌতুক এনে দেয়ার জন্য আমাকে চাপাচাপি করলে আমি টাকা আনতে অক্ষম বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ির দরজা বন্ধ করে আমার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। পূর্ববড় ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিল বলেন, ওই গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় আগেও কয়েকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। কিন্তু এবারের ঘটনাটি খুবই অমানবিক। চকরিয়া থানার পুলিশ জানান, গৃহবধূকে অমানবিকভাবে মারধরের কয়েকটি ছবি পরিবারের লোকজন আমাকে দেখিয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×