ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৬ নবেম্বর পরবর্তী শুনানি

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ শরীয়তপুরের সোলায়মান ও ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২ নভেম্বর ২০১৫

যুদ্ধাপরাধী বিচার ॥ শরীয়তপুরের সোলায়মান ও ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত শরীয়তপুরের সোলায়মান মোল্লা ওরফে সলেমান মৌলভী ও পলাতক ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। মামলার অভিযোগ (চার্জ) দাখিল এবং পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৬ নবেম্বর দিন ঠিক করেন আদালত। রবিবার ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হচ্ছেন বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ার্দী। রবিবার প্রসিকিউশন পক্ষে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন প্রসিকিউটর ঋষিকেশ সাহা। অপরদিকে আসামি সোলায়মান মোল্লার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী গাজী এমএইচ তামিম। এ সময় সোলায়মান মোল্লার পক্ষে জামিন আবেদন করেন আইনজীবী তামিম। জামিন আবেদনের শুনানি ওই দিন হবে। এর আগে ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে গত ১৪ জুন রাতে শরীয়তপুর সদর উপজেলার কাশিপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে সলেমান মৌলভীকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন ১৫ জুন তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। ২০১০ সালে শরীয়তপুরের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সামাদ তালুকদারের দায়ের করা যুদ্ধাপরাধ মামলার প্রধান আসামি সলেমান মৌলভী। গত ২৯ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার দেয়া প্রতিবেদন অনুসারে আসামিদের বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবরোধী অপরাধের মোট ৪টি অভিযোগ রয়েছে। প্রথম অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২২ মে, আসামিরা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর ১০০ থেকে দেড় সদস্যসহ শরীয়তপুর জেলার পালং থানা এলাকায় কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কৃষক আব্দুস সামাদসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের ২শ’ মানুষকে গুলি করে হত্যা ও বাড়ির মালামাল লুট করে। দ্বিতীয় অভিযোগ : ২৬ মে, ১৯৭১ সালে জেলার পালং থানার মালোপাড়া ও রুদ্রকর গ্রামে হামলা চালিয়ে মঠের পুরোহিতকে গুলি করে হত্যা করে ও গ্রামগুলো থেকে মালামাল লুট এবং আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। মালোপাড়া থেকে ৩০-৪৫ জন মহিলা ও পুরুষকে ধরে মাদারীপুর পাকিস্তান আর্মি ক্যাম্পে নিয়ে ৩ দিন আটকে রেখে মহিলাদের ধর্ষণ করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু পুরুষদের গুলি করে হত্যা করে। তৃতীয় অভিযোগ : জুন মাসে একই থানার শৈলেন্দ্র কৃষ্ণ পালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুজনকে হত্যা করে ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিযাতন করে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে। চতুর্থ অভিযোগ : ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ থেকে ১০ ডিসেম্বর পযন্ত আসামিরা দখলদার বাহিনীর সহায়তায় এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অপরাধ করে। এ সময় মানবতাবিরোধী অপরাধ করার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভয়ভীতি ও আতঙ্কের সৃষ্টি করে পালং থানার এক থেকে দেড় হাজার মানুষকে দেশত্যাগ করে ভারতের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয়গ্রহণে বাধ্য করে।
×