ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বার্ধক্যের উপকারিতা

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৩১ অক্টোবর ২০১৫

বার্ধক্যের উপকারিতা

বৃদ্ধ বয়সকে অনেকেই ভয় পায়। বয়স বেড়ে যাওয়া মানেই নানা রোগব্যাধির ভয়। কিন্তু বয়স বেড়ে যাওয়া বা বুড়ো হওয়া মানেই সমস্যা বেড়ে যাওয়া নয়। অনেক সমস্যাই কমে যায়। বৃদ্ধ বয়সের রয়েছে অনেক উপকারিতা। বয়স বাড়লে সুখশান্তি বৃদ্ধি পায়, বাড়ে জ্ঞানও। এমনকি বৃদ্ধ বয়সে যৌনজীবনও আগের চেয়ে সুখের হয়। কোন বয়স থেকে বার্ধক্য শুরু হয়? কবি দান্তে বিশ্বাস করতেন, বার্ধক্য শুরু হয় ৪৫ বছরে। ব্রিটিশদের ওপর পরিচালিত এক জরিপ অনুযায়ী বার্ধক্য শুরু হয় ৫৯ বছর বয়স থেকে। মজার বিষয় হলোÑ যত বেশি বয়সী মানুষের কাছে বার্ধক্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছে, তারা তত বেশি বয়সকে বার্ধক্যের বয়স হিসেবে উল্লেখ করেছে। কিন্তু জাতিসংঘ এবং বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ৬০ বছরের পর যেকোন বয়সই বার্ধক্য। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুধু জ্ঞানই বাড়ে না। বাড়ে অভিজ্ঞতাও। ফলে অনেক রোগব্যাধি সম্পর্কে আগে থেকেই সচেতন হওয়া যায় এবং সেগুলো থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের জন উপহ্যাম বলেন, যেসব মানুষ নানা মহামারী রোগ প্রত্যক্ষ করেছে তাদের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সেসব ভাইরাসকে ৪০-৫০ বছর পর্যন্ত মনে রাখতে পারে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, একজন ২০ বছর বয়সী ব্যক্তির বছরে ২-৩ বার জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে এক বা দুইবার হতে পারে। মানব ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ফ্লু রোগ হয় ১৯১৮ সালে। সে সময় পাঁচ কোটি মানুষ মারা যায়। আর এর বেশির ভাগই ২০-৪০ বয়সী মানুষ, যাদের সুঠাম এবং শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী মনে করা হতো। ২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লুর বেলায় একই ধরনের ঘটনা ঘটে। সে সময় মারা যাওয়া অধিকাংশের বয়সই ৬৫ বছরের নিচে। যাদের এ্যালার্জি রয়েছে বৃদ্ধ বয়স তাদের জন্য সুখেরই। কারণ বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ্যালার্জির জন্য দায়ী ‘ইমিউনোগ্লোবিউলিন ই’র উৎপাদন কমে যায়। বার্ধক্যের সঙ্গে বাড়ে বুদ্ধিও। আর এই বুদ্ধির কর্মক্ষমতাও বাড়ে। সিয়াটল লংজিটিউডিনাল স্টাডি ১৯৫৬ সাল থেকে ছয় হাজার মানুষের মানসিক সক্ষমতা যাচাই করে আসছে। এই ছয় হাজার মানুষকে প্রতি সাত বছর পরপর পরীক্ষা করা হয়। এতে দেখা যায়, গণিতে তারা একটু দুর্বল এবং কোন নির্দেশে সাড়া দিতে একটু দেরি করছে। কিন্তু শব্দভা-ার, স্মৃতিশক্তি, সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা ২০-২৯ বছর বয়সের চেয়ে ৪০-৫৯ বছর বয়সের সময় অনেক ভাল। অনেক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বয়স্ক ব্যক্তির যৌনক্ষমতাও অনেকের ধারণার চেয়ে বেশি। ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের ওপর পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, তাদের অর্ধেকের বেশি প্রায় সব সময়ই সঙ্গমের সময় যৌনসুখ পায়। ষাটোর্ধদের ওপর পরিচালিত অন্য এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৭৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৭০ শতাংশ নারী তাদের ৪০ বছর বয়সের যৌনজীবনের চেয়ে বর্তমানে খুবই সন্তুষ্ট। বার্ধক্যে মাইগ্রেনের সমস্যা কমে যায়। ১৮ বছর বয়সী এবং বয়স্কদের ওপর পরিচালিত সুইডেনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বয়স যত বাড়ে মাইগ্রেনের সমস্যা কমতে থাকে, কমতে থাকে ব্যথার পরিমাণও। ৩৭৪ জনের ওপর চালানো ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, মাত্র চারজনের মারাত্মক মাথাব্যথা হয়েছে। বয়স বাড়ার সঙ্গে ঘামের মাত্রাও কমে যায়। কারণ এ সময় ঘর্মগ্রন্থি সঙ্কুচিত হয়ে যায়। সূত্র : বিবিসি অনলাইন
×