ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গণজাগরণ মঞ্চের বিক্ষোভ সমাবেশে ইমরান সরকার

এ্যামনেস্টি প্রমাণ করল যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের পা চাটা সংগঠন তারা

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৩১ অক্টোবর ২০১৫

এ্যামনেস্টি প্রমাণ করল যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের পা চাটা সংগঠন তারা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’ মানবাধিকার নামধারী মানবতাবিরোধী সংগঠন মন্তব্য করে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, ‘এটি একটি জঙ্গীবাদী সংগঠন। এটি মানবাধিকার সংগঠন হতে পারে না। সিরিয়া ও ফিলিস্তিনে সাধারণ মানুষকে হত্যা করলেও তারা কোন ধরনের কথা বলে না বা তার প্রতিবাদ জানায় না। কিন্তু বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের শুরু থেকেই বিভিন্ন সময় এই ধরনের বিরূপ বিবৃতি দিয়ে আসছে এই সংগঠনটি।’ ‘এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল’-এর পক্ষ থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদকে মুক্তি দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিচার চাওয়ার প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করে গণজাগরণ মঞ্চ। শুক্রবার মঞ্চের উদ্যোগে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতির বক্তব্যে ইমরান এসব কথা বলেন। ২৭ অক্টোবর সংগঠনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে এ্যামনেস্টির সাউথ এশিয়া রিসার্চ ডিরেক্টর ডেভিড গ্রিফিথ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অপরাধগুলো ভীতিকর। কিন্তু মৃত্যুদ- শুধু সন্ত্রাসের দিকে ঠেলে দিবে। ন্যায্য বিচার ছাড়া মৃত্যুদ- আরও বিরক্তিকর। তিনি দাবি করেন, সাকা এবং মুজাহিদের বিচার এবং আপীল প্রক্রিয়া পরিষ্কারভাবেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। ২ নবেম্বর রিভিউ আবেদনের শুনানির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন তারা যে মৃত্যুদ-ের জন্য অপেক্ষায় আছে সেটা ন্যায়বিচারের বদলে ভুলভাবে বিচারের ফল।’ একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধারাও যুদ্ধাপরাধ করেছে দাবি করে এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল প্রশ্ন তুলেছে। তাদের বক্তব্য, শুধু এক পক্ষের বিচার হবে কেন? ‘যুদ্ধাপরাধ করা মুক্তিযোদ্ধাদের কেন বিচার করা হচ্ছে না সেই প্রশ্নও তুলেছে এ্যামনেস্টি। পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবিও জানিয়েছে তারা। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ধৃষ্টতাপূর্ণ ও ন্যক্কারজনক বক্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে ইমরান বলেন, ‘এই সংগঠনের কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে সেই সংগঠনের যারা বাংলাদেশে কাজ করছেন তাদের ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের বিবৃতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের দাবি করে প্রমাণ করল এই সংগঠনটি আমেরিকা ও পাকিস্তানের পা চাটা সংগঠন। তারা চূড়ান্তভাবে তাদের মুখোশ উন্মোচন করল এই বিবৃতির মাধ্যমে।’ তিনি বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপি ও আওয়ামী লীগসহ সকল রাজনৈতিক সংগঠনে যেসব যুদ্ধাপরাধী আছেন তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’ এছাড়া যেসব সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না তাদেরও কার্যক্রম বন্ধ করার দাবি জানান তিনি। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে তাদের বিবৃতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে ইমরান বলেন, পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচীর মাধ্যমে সারা বিশ্বে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা হবে। এ সময় ব্রিটেনে অবস্থিত এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের কার্যালয়ের সামনে গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ ও সমাবেশের কর্মসূচী ঘোষণা করেন ইমরান এইচ সরকার। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি লাকী আক্তার, খেলাঘরের সংগঠক তাহমিন সুলতানা সাথী ও মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিলটি শহীদ মিনার হয়ে আবার শাহবাগে এসে শেষ হয়। এদিকে এ্যামনেস্টির ঔদ্ধত্যপূর্ণ বিবৃতির প্রতিবাদে আজ শনিবার ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ও বিকেল চারটায় টিএসসিতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে পহেলা নবেম্বর রাজধানীর কলাবাগানে এ্যামনেস্টির বাংলাদেশ কার্যালয়ের সামনে জুতা ও ঝাড়ু নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করেছে প্রগতিশীল বিভিন্ন ছাত্র ও সামাজিক সংগঠন।
×