ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

টিআইবিকে ক্ষমা চাইতে হবে, অন্যথায় আইনী ব্যবস্থা ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৩০ অক্টোবর ২০১৫

টিআইবিকে ক্ষমা চাইতে হবে, অন্যথায় আইনী ব্যবস্থা ॥ নাসিম

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সরকার ও জাতীয় সংসদ সম্পর্কে আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল নেতৃবৃন্দ। টিআইবির ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা বন্ধ এবং উক্ত প্রতিবেদনের জন্য ক্ষমা না চাইলে সংস্থাটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে শরিক দলের নেতারা টিআইবির আয়ের উৎস ও কারা অর্থের যোগান দেয়, তা খতিয়ে দেখার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে বলেন, সংসদ নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় টিআইবিকে অবিলম্বে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে সংস্থাটির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের এক সভা শেষে তিনি আরও বলেন, টিআইবি সংসদ নিয়ে যে কথা বলেছে, তা ক্ষমার অযোগ্য ও গর্হিত কাজ। এক্ষেত্রে তারা বিএনপি-জামায়াতকেও ছাড়িয়ে গেছে। তাদের বক্তব্যে প্রমাণ হয়েছে- এটা গভীর ষড়যন্ত্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, টিআইবির আয়ের উৎস কী, কারা এদের অর্থের যোগান দেয়, তা খতিয়ে বের করুন। টিআইবির বক্তব্যের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, কিভাবে তারা বলতে পারে এই পার্লামেন্ট একটি নাট্যশালা? তারা কিভাবে বলতে পারে এই পার্লামেন্ট পুতুল নাচের আসর? এটা শুধু অমার্জনীয় নয়, তারা বিএনপি জামায়াতের চেয়েও জঘন্য ভাষায় সংসদকে আক্রমণ করে কথা বলেছে। তিনি বলেন, তারা (টিআইবি) কারা? তাদের পরিচয় কী? এই টিআইবির মুখপাত্ররা কী চায়? তারা কী চেয়েছিল? টিআইবির কথা শুনে মনে হচ্ছে, তারা চেয়েছিল দেশে নির্বাচন না হোক, অসাংবিধানিক সরকার আসুক। সেক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ হয়ে এখন এ ধরনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছে। সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি বলেই কি আজকে তাদের এত ক্ষোভ? নির্বাচন চাওয়ার অধিকার তাদের কে দিয়েছে? তাদের কাজ গবেষণা করা। তিনি বলেন, ১৪ দলও মনে করে টিআইবিকে ক্ষমা চাইতে হবে। নইলে তাদের বিরুদ্ধে যেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া দরকার ১৪ দল সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। অদূর ভবিষ্যতে টিআইবির মুখোশ উন্মোচন করা হবে। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যই দুই বিদেশী হত্যা, তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা এবং পুলিশ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা একইসূত্রে গাঁথা। এর সঙ্গে কারা জড়িত, কারা গডফাদার, গডমাদার, গডব্রাদার, সব বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া লন্ডনে যাওয়ার পরপরই দেশে এ ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, চিহ্নিত করা হয়েছে, তারা একটি দলের মুখচেনা লোক। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ৫ জানুয়ারির আগে ও পরে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে সরকারকে উৎখাত করতে ব্যর্থ হন। এখন তিনি বা তার দল ও জামায়াত চক্র বিদেশীকে হত্যা করে কোন চক্রান্ত সফল করতে চায় কিনাÑ এ প্রশ্নও সামনে এসে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ ব্যাপারে দ্রুত তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশবাসীর সঙ্গে আমরাও আশা করছি, খুব দ্রুত গডফাদার, গডমাদার ও গডব্রাদারের নাম বেরিয়ে আসবে। বিএনপি নেতা শমসের মবিন চৌধুরীর পদত্যাগ প্রসঙ্গে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তাদের দলের কে ইন বা আউট হলো সেটা বিএনপির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ সময় তিনি কৌতুক করে বলেন, ‘তবে কী বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা শুরু হলো নাকি?’ সম্প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান তিনি। আগামী ৩ নবেম্বর জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ২ নবেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভা সফল করার লক্ষ্যে আয়োজিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া। বৈঠকে অন্যদের মধ্যেÑ আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, জাতীয় পার্টির (জেপি) মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএম মোজাম্মেল হক, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, আবদুস সাত্তার, ফরিদুর নাহার লাইলী, সুজিত রায় নন্দী, ওয়ার্কার্স পার্টির কামরুল আহসান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নূরুল আম্বিয়া, গণতন্ত্রী পার্টির নুরুর রহমান সেলিম, ডাঃ শহিদুল্লাহ শিকদার, শাহাদাত হোসেন, বাসদের রেজাউর রশিদ খান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম, ন্যাপের ইসমাইল হোসেন, শফি আহমেদ, গণআজাদী লীগের এস কে শিকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×