ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম আবাহনীর কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক

ফাইনালেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই

প্রকাশিত: ০৫:০৮, ২৯ অক্টোবর ২০১৫

ফাইনালেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই

রুমেল খান, চট্টগ্রাম থেকে ॥ ‘সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া। সেই সঙ্গে খেলোয়াড়দের কাছে কৃতজ্ঞ। যদিও সেমির ম্যাচে তারা সম্পূর্ণ ফিট ছিলাম না। তারপরও তারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছে। এ জয় তাদের প্রাপ্য ছিল। দর্শক সমর্থন অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। সর্বশেষ সাফ শিরোপা জিতেছে আফগানিস্তান। তাদের দেশের বাজানের মতো ক্লাবকে হারানো নিঃসন্দেহে কৃতিত্বের। এখন আমাদের লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। এজন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে সবাইকে। গোলের সুযোগ পেলে তা কাজে লাগাতে হবে।’ কথাগুলো শফিকুল ইসলাম মানিকের। চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের এই কোচই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। চলমান ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এ মঙ্গলবার এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত প্রথম সেমিফাইনালে স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় ৩-১ গোলে হারায় আফগানিস্তানের ডি স্পিন ঘার বাজান ফুটবল ক্লাবকে। দশদিনের ব্যবধানে চার ম্যাচ! অনেক দলের খেলোয়াড়ই এত অল্প সময়ে বেশি ম্যাচ খেলার ধকল সামলাতে পারেনি। ফলে চোট, অসুস্থতায় আক্রান্ত কম-বেশি সব দলই। ব্যতিক্রম নয় চট্টগ্রাম আবাহনীও। তবে তাদের ইনজুরি একটু কমই। সমস্যা হচ্ছে খেলোয়াড়রা খুবই ক্লান্ত। এ প্রসঙ্গে মানিক বলেন, ‘গ্রুপ পর্যায়ের তিন এবং সেমির ম্যাচ মিলে চার ম্যাচই ছিল অনেক হার্ড। ফলে খেলোয়াড়রা ভীষণ ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। ফলে আমি ওদের অনুশীলন নয়, বরং বিশ্রাম দিয়েই রিকভারি করাতে চাচ্ছি।’ বাজানকে ধরা হয়েছিল এই টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে। অথচ তাদেরই পরাভূত করল চট্টলার ক্লাবটি। কিভাবে সম্ভব হলো এটা? ‘পরিকল্পনা ছিলÑ ওদের খেলতে না দেয়ার। জাহিদকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। অন্যরাও চেষ্টা করেছি। মিডফিল্ডে ওদের ডমিনেট করতে দেইনি। ওদের আমাদের গোলমুখে ওপেন নেট চান্স পেতে দেইনি। যেটা আমরা পেরেছি।’ মানিকের বিশ্লেষণ। বাজানকে হারানোর পাশাপাশি নিজেরাও মাত্র একটি গোল হজম করেছে আবাহনী। এর রহস্য কী? ‘রেজা অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার এই আসরের। ধারণার চেয়ে বেশি ভাল খেলেছে। আশা করি সে ফাইনালেও ভাল খেলবে।’ মানিকের ভাষ্য। তবে সেমির ম্যাচে বদলি হিসেবে কাউকে নামানোর মতো ছিল না। ‘এটার জন্য উদ্বেগ ছিল। রেজা চোট পেয়েছিল। বার বার বলছিল তাকে মাঠ থেকে উঠিয়ে নিতে। কিন্তু আমি তাকে উঠিয়ে নেইনি। ও অভিজ্ঞ। জানে কিভাবে চোট নিয়েও খেলে যেতে হয়।’ ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে কাকে চান? ‘এটা নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। যেই হোক, তারা অবশ্যই নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করেই আসবে। আমরা অবশ্যই তাদের সমীহ করে খেলব।’ মানিকের জবাব। তিনি আরও যোগ করেন, ‘টুর্নামেন্টের শুরুতে আমরা খুব বেশি সময় অনুশীলন করতে পারিনি। ফলে কম্বিনেশন তেমন ভাল হয়নি। ফলে ইস্ট বেঙ্গলের কাছে প্রথম ম্যাচে হেরে যাই। পরে খেলতে খেলতে নিজেদের ছন্দ খুঁজে পাই। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল সেমিফাইনাল খেলা। সেটা পূরণ হয়েছে। ছেলেরা যদি নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে পারে, বর্তমান ছন্দটা ধরে রাখতে পারে, সামর্থ্যরে পুরোটা যদি প্রয়োগ করতে পারে, তাহলে ফাইনালে আমাদের না জেতার কোন কারণ নেই।’ দর্শক-প্রত্যাশা ও চাপ প্রসঙ্গে মানিকের ভাষ্য, ‘চাপ অনুভব করছি না। বরং অনুভব করছি, যে আমরা ক্লাব নয়, বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। এ লড়াইয়ে জেতার তাড়না অনুভব করছি।’ স্বাগতিক হওয়ায় দর্শক সমর্থন পুরোপুরি পাবে চট্টগ্রাম আবাহনী, এতে কোন সন্দেহ নেই। মানিক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখানকার স্থানীয় দল বলে নয়, আমরা দর্শক সমর্থন পাব বাংলাদেশের একটি ক্লাব বলে। তাদের অকুণ্ঠ সমর্থন-ভালবাসা আমাদের ভাল খেলতে প্রেরণা যোগাবে। তাদের দোয়া চাই ফাইনালে জেতার জন্য।’
×