ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থছাড় বাড়িয়েছে উন্নয়নসহযোগীরা প্রতিশ্রুতি কমেছে

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২৯ অক্টোবর ২০১৫

অর্থছাড় বাড়িয়েছে উন্নয়নসহযোগীরা প্রতিশ্রুতি কমেছে

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) উন্নয়নসহযোগী সংস্থাগুলোর প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থছাড় কিছুটা বেড়েছে। তবে কমেছে বৈদেশিক অর্থের প্রতিশ্রুতি। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ঋণ ও অনুদানের ক্ষেত্রে ৮৮ শতাংশ প্রতিশ্রুতি কম পেয়েছে সরকার। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এ প্রেক্ষাপটে প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়াতে ফরওয়ার্ড প্লানিং করার তাগিদ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। ইআরডি সূত্র জানায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রতিশ্রুতি কমলেও অর্থছাড় ৬ শতাংশ বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে অর্থছাড় হয়েছে ৫০ কোটি ডলার। যা গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে অর্থছাড় হয়েছিল ৪৭ কোটি ডলার। অর্থনীতির জন্য ভাল খবর হলো গত অর্থবছরের তুলনায় উন্নয়নসহযোগী সংস্থগুলোকে পুরনো ঋণ এবং সুদ মিলে ১২ কোটি ডলার কম পরিশোধ করতে হয়েছে। অন্যদিকে উন্নয়নসহযোগী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে মোট পাঁচ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। যা মূলত অনুদান হিসেবে দিতে ইআরডির সঙ্গে চুক্তি করেছে উন্নয়নসহযোগী দেশ কিংবা সংস্থা। গত অর্থবছরের একই সময়ে ৪৪ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পায় ইআরডি। এর মধ্যে ৩৮ কোটি ডলারের ঋণ এবং ৬ কোটি ডলারের অনুদান। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দাতা সংস্থার সঙ্গে চুক্তির ওপর ভিত্তি করে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতির হিসাব করা হয়েছে। গত তিন মাসে বৈদেশিক ঋণের কোন চুক্তি না হওয়ায় প্রতিশ্রুতির দুরবস্থা। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং দাতা সংস্থার গাফিলতির কারণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বার বার তাগাদা দেয়ার পরও সঠিকভাবে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত না করে ইআরডিতে পাঠানো হচ্ছে। আবার এসব ডিপিপি দাতা সংস্থার অনুমোদনে পাঠানো হলেও দ্রুত সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। এতে ব্যাপক সময় নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে ঋণের প্রতিশ্রুতি গত অর্থবছরের চেয়ে বেশি আশা করা হলেও উল্টো কমেছে। ইআরডির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রতিশ্রুতি কম হলেও বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে না। কারণ অক্টোবরে বেশ কিছু চুক্তি হয়েছে যা এখনও হিসাবে আসেনি। আবার নবেম্বর এবং ডিসেম্বরে বেশ কয়েকটি প্রকল্প চুক্তির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এগুলো সম্পন্ন হলে প্রতিশ্রুতি অনেক বেড়ে যাবে। ইআরডি বলছে, সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে বিশ^ব্যাংক। সংস্থাটি প্রায় ২৫ কোটি ডলার অর্থছাড় করেছে। এর মধ্যে ১৯ কোটি ডলার ঋণ এবং বাকি অর্থ অনুদান। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সাড়ে সাত কোটি ডলার, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি) চার কোটি ডলার এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) সাড়ে চার কোটি ডলার ছাড় করেছে। উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ইআরডি। আর অর্থছাড় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে এডিপি বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হচ্ছে। প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল। বিশেষ করে বড় দশ মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি। এজন্য ফরওয়ার্ড প্ল্যানিং করার কথা বলেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ তাগিদ দেন।
×