ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মংলা বন্দরে আটকে থাকা গাড়ি ছাড় করার দাবি বারভিডার

প্রকাশিত: ০১:৫৮, ২৮ অক্টোবর ২০১৫

মংলা বন্দরে আটকে থাকা গাড়ি ছাড় করার দাবি বারভিডার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মংলা বন্দরে দীর্ঘদিন আটকে থাকা দুই হাজারের বেশি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ছাড় করার সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশে রিকন্ডিশন্ড ভেহিকল ইমপোর্টার্স এ্যান্ড ডিলারস এ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। একইসঙ্গে গাড়িগুলো পুলিশের তত্ত্বাবধানে রাখার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। এজন্য সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্তের স্থগিতাদেশ চেয়েছে সংগঠনটি। বুধবার রাজধানীর পল্টনে বারভিডা কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি আবদুল হামিদ শরীফ। বারভিডা সভাপতি বলেন, ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর গাড়িগুলোকে ছাড় করার ব্যবস্থা নিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশ দেন অর্থমন্ত্রী। তবে সেটা কার্যকর হয়নি। এরপর ২০১৪ সালের ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে এক অনুশাসনও প্রদান করা হয়। সেটাও বাস্তবায়ন হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা স্বাক্ষরিত সিদ্ধান্তের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, বর্তমানে মংলা বন্দরে অখালাসকৃত রিকন্ডিশন্ড গাড়ি রয়েছে ২০৭৯টি। এগুলোর মধ্যে আমদানি নীতি ভঙ্গ করে আনা হয়েছে ৫১২টি এবং বাকি ১৫৬৭টি সম্পূর্ণ নিয়ম-কানুন মেনে আমদানি করা। শুধু শুল্ক জটিলতার কারণে আটকে রাখা হয়েছে। আমদানি নীতি ভঙ্গ করে আমদানি করা ৫১২টি গাড়ির ব্যাপারে গত বছর ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্যসচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আবদুল হামিদ শরীফ বলেন, বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের বেইলআউট (সমস্যা থেকে উত্তরণ) সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের সেই সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। উল্টো আমাদের গাড়িগুলোকে পুলিশের তত্ত্বাবধানে দিয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা বিস্মিত হয়েছি যে, চার-পাঁচ বছরের আমদানিকৃত যেসব গাড়ি শুল্কায়ন জটিলতায় বন্দরে পড়ে আছে, সেসব গাড়ির সঙ্গে সম্প্রতি আমদানি ও অখালাসকৃত গাড়ির ক্ষেত্রেও সরকার একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ সিদ্ধান্তের ফলে গোটা ব্যবসায়ী সমাজে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। কেননা আটকেপড়া প্রতিটি গাড়ির মালিক আছেন এবং অধিকাংশ গাড়িই বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আমদানি করা। গাড়িগুলোকে তাদের মালিকদের পরিবর্তে পুলিশের তত্ত্বাবধানে দিলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিতেও বিরূপ প্রভাব পড়বে। সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার প্রাক্তন সভাপতি আবদুল হক বলেন, এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে একটি খারাপ বার্তা যাবে। প্রধানমন্ত্রী কিন্তু এটা চাননি। এ সিদ্ধান্তকে স্থগিত রেখে আমদানিকারকদের সঙ্গে বসলে উত্তরণের একটি পথ বেরিয়ে আসবে। তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সরকারের কোন দফতর গাড়ি নিলে টাকা দিয়েই নেবে। এজন্য তো আমাদের সঙ্গে বসতে হবে। দাম তো শুধু ক্রেতা ঠিক করতে পারে না। এর জন্য বিক্রেতাকে দরকার হয়। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে উইন উইন সিচুয়েশন সৃষ্টি করতে হবে। প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে মংলা বন্দরে দীর্ঘদিন পড়ে থাকা ২ হাজার ৭৯টি রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বিষয়ে বৈঠক হয়। সেখানে এই গাড়িগুলো বন্দর থেকে অপসারণ করে পুলিশের তত্ত্বাবধানে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। যে কোন আমদানি পণ্য বন্দরে পৌঁছার পর ৩০ দিনের মধ্যে খালাস করতে হয়। তা না হলে বন্দর কর্তৃপক্ষ ওই পণ্য নিলামে তুলতে পারে।
×