ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

পুলিশ প্রেসক্লাবের চিঠি চায়

চট্টগ্রামে প্রেস লেখা বাইকে দাবড়ে বেড়াচ্ছে শিবির ক্যাডাররা

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২৮ অক্টোবর ২০১৫

চট্টগ্রামে প্রেস লেখা বাইকে দাবড়ে বেড়াচ্ছে শিবির ক্যাডাররা

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ নগরে শিবির ক্যাডাররা প্রেস লেখা মোটরসাইকেলে দাবড়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে এসব ক্যাডাররা কৌশল পরিবর্তন করে যাচ্ছে। এ ধরনের দৃশ্য প্রতিনিয়ত চোখে পড়লেও ধরা পড়ছে না কেউই। বোমা হামলা থেকে শুরু করে নাশকতার বিভিন্ন মামলায় এসব শিবির ক্যাডার স্থান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গোপন বৈঠক করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের নজরদারি না থাকায় ও দায়িত্বে অবহেলার কারণে প্রেস লেখা গাড়িতে হেলমেট লাগিয়ে পুলিশকে আড়াল করে কৌশলে নিজেদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নগরীর আকবর শাহ, খুলশী, চকবাজার, কোতোয়ালি ও হালিশহর এলাকায় শতাধিক মোটরসাইকেল রয়েছে শিবিরের ব্যবহারে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, আকবর শাহ, খুলশী ও বায়েজিদ থানা এলাকা পাহাড়িয়া অঞ্চল। ফলে জঙ্গী থেকে শুরু করে ইসলামের কথা বলে বিভিন্ন ধরনের অঙ্গ সংগঠন কাজ করছে এসব এলাকায়। আল্লাহর পথে চলার কথা বলে সাধারণের মন যুগিয়ে নিজেদের সংগঠনের ভাবধারায় গড়ে তোলা হচ্ছে। বিশেষ করে এসব এলাকার চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ছোটখাটোা বাজারেও শিবির ক্যাডারসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা তৎপর রয়েছে। ফলে পুলিশের অভিযানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কয়েকটি টিম ধরা পড়লেও মূলত ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে তৎপর নেতাকর্মীরা। স্বল্প সময়ের মাঝে দ্রুতগতির মোটরসাইকেল ব্যবহার করে এ ধরনের নেতাকর্মীরা স্থান ত্যাগ করছে। জানা গেছে, নতুন কৌশল হিসেবে জঙ্গী ও শিবির ক্যাডাররা মোটরসাইকেল ব্যবহারে তৎপর হয়ে উঠেছে। মোটরসাইকেলের সামনে পেছনে বড় আকারে প্রেস লিখে গোপন বৈঠকে মিলিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বিষয়টি অবগত করার পরও পুলিশ এ্যাকশনে যাচ্ছে না- এমন অভিযোগ করেছেন আকবর শাহ থানাধীন বিশ্বকলোনি এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক ছাত্র। অভিযোগের বিষয়টি ছিল- শিবির ক্যাডাররা বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত থাকলেও তৎপর রয়েছে। পুলিশের গ্রেফতার আড়াল করতে বেশভুষা পরিবর্তন করেছে। করেছে পরিবহন ব্যবহারের পরিবর্তন। যারা রিক্সা বা সিএনজি ট্যাক্সিতে চড়ত তারা এখন ব্যবহার করছে মোটর বাইক। শুধু তাই নয়, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন শিবির ক্যাডারদের জনসমক্ষে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও তারা নিয়মিত ক্লাস করছে না গ্রেফতার আতঙ্কে। তবে গোপন বৈঠক ঠিক রেখেছে। নির্দেশনাও চলছে প্রতিনিয়ত। পরিবহন ব্যবহারে পরিবর্তন এনে মোটর সাইকেলের ব্যবহার চলছে যত্রতত্র। পুলিশের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার অপব্যবহার করে প্রেস শব্দটি জুড়ে দেয়া হয়েছে মোটরসাইকেলের পেছনে ও সামনে। পুলিশও এ ধরনের মোটরসাইকেলকে পাকড়াও করছে না। চট্টগ্রামের প্রায় বিশ ভাগ মোটরসাইকেলে এখন প্রেস লাগানো রয়েছে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেলে যেমন এ শব্দটির ব্যবহার জুড়ে দেয়া হয়েছে, তেমনি রেজিস্ট্রেশনসহ মোটরসাইকেলেও রয়েছে একই শব্দের ব্যবহার। পুলিশের সচেতনতা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই এ ধরনের মোটরসাইকেল পার পেয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, প্রেস লেখা মোটরসাইকেলের কাগজপত্র পরীক্ষায় পুলিশ কেন পিছুটান। শিবির ক্যাডারদের রক্ষায় পুলিশের পক্ষ থেকে সিএমপিতে এ ধরনের ভূমিকা রাখা হচ্ছে কিনা, তা প্রশ্নবিদ্ধ। এ ব্যাপারে সিএমপির এক উর্ধতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেস লেখা মোটরসাইকেল সাধারণত পুলিশ সদস্যরা ধরতে নারাজ। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও প্রেসক্লাব। প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে চিঠি দেয়া হলে অবশ্যই আমরা এসব মোটর সাইকেল পাকড়াও করব। এক্ষেত্রে কোন ধরনের তদবির না করাটাই শ্রেয়। তবে শিবির ক্যাডারদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের বিষয়টি পরীক্ষা করতে হলে প্রেস লেখা প্রত্যেকটি মোটরসাইকেল প্রত্যক্ষভাবে ডকুমেন্টসহ পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকরা এগিয়ে এলে অভিযান সার্থক হবে।
×