ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দিল্লিকে রুখতে পাক অস্ত্র তালিবান, জানতেন ওবামা

প্রকাশিত: ১৯:৪১, ২৭ অক্টোবর ২০১৫

দিল্লিকে রুখতে পাক অস্ত্র তালিবান, জানতেন ওবামা

অনলাইন ডেস্ক ॥ ২০০৮ সালের ৭ নভেম্বর। সবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন বারাক ওবামা। তখনই ওবামাকে একটি নথি পাঠিয়েছিলেন তাঁর বিদেশনীতি উপদেষ্টা জন ব্রেনান। তাতে স্পষ্ট বলা ছিল, আফগানিস্তানে ভারতের প্রভাব রুখতে তালিবানকে ব্যবহার করছে পাক সেনা। সেই ব্রেনানই এখন মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র প্রধান। তাঁর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে পাওয়া কিছু ই-মেল প্রকাশ করেছে উইকিলিকস। তা থেকে ব্রেনানের এই বিশ্লেষণের কথা জানা গিয়েছে। আফগানিস্তানে তালিবান-সহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগের কথা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে নয়াদিল্লি। ব্রেনানের ই-মেলের বক্তব্য সেই দাবিকেই ফের সমর্থন করল বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা। প্রথম থেকেই ওবামা প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ব্রেনানের। প্রথমে তাঁকে প্রধান সন্ত্রাস-দমন উপদেষ্টার পদ দিয়েছিলেন ওবামা। পরে সিআইএ-র প্রধান হন তিনি। উইকিলিকসে প্রকাশিত ই-মেলে তিনি ওবামাকে স্পষ্টই জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে তালিবান জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রায় সব লড়াইয়ে জিতছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন বাহিনী। কিন্তু তাতে লাভ হচ্ছে না। কারণ, ওই জঙ্গিরা পাক-আফগান সীমান্তে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। তার পর ফের আফগানিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। ব্রেনানের মতে, পাক-আফগান সীমান্তের উপজাতি অধ্যুষিত এলাকায় তালিবান দমন অভিযান তেমন সফল হচ্ছে না। কারণ, পাক সেনা ও আইএসআইয়ের একাংশ তালিবানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে আগ্রহী। আফগানিস্তানে সোভিয়েত অভিযানের সময় থেকেই পাক সেনা ও আইএসআইয়ের ওই অংশের সঙ্গে জেহাদিদের যোগ ছিল। এখন আফগানিস্তানে ফের ভারতের প্রভাব বাড়ছে। তাই মার্কিন বাহিনী সরে গেলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পাকিস্তান। ব্রেনানের মতে, তখন ভারত ও ইরানের প্রভাব রুখতে তালিবানকে ফের ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করছে পাক সেনা ও আইএসআই। ঘটনাচক্রে ওবামা জমানাতেই আফগানিস্তান থেকে সরে গিয়েছে মার্কিন সেনা। ফলে, সে দেশে প্রভাব বিস্তারের লড়াই ফের তীব্র হয়েছে। সেই লড়াইয়ে পাকিস্তান তালিবান-সহ অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলিকে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে বলে বার বার দাবি করেছে নয়াদিল্লি। সাম্প্রতিক অতীতে আফগানিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকেও নিশানা করার চেষ্টা করেছে জঙ্গিরা। কূটনীতিকদের মতে, পাকিস্তানের এই দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানলেও এখনও তাদের উপরে নির্ভর করছে আমেরিকা। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির সঙ্গে তালিবানের আলোচনায় পাকিস্তানকেই মধ্যস্থতা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওয়াশিংটন থেকে শোনা গিয়েছিল ‘ভাল তালিবান, খারাপ তালিবান’- তত্ত্ব। এখন অবশ্য ঘানি সরকারের সঙ্গে তালিবানের আলোচনা নিয়ে উৎসাহে ভাটা পড়েছে। তাও আমেরিকা এখনও আগুন নিয়ে খেলছে বলে মনে করে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ ভারতের সব শীর্ষ কর্তাই বার বার জানিয়েছেন, ভাল তালিবান, খারাপ তালিবান বলে কিছু হতে পারে না। মার্কিন নীতির অভিমুখ না বদলালে দক্ষিণ এশিয়ায় বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা সাউথ ব্লকের। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
×