ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ঘরের মাটিতে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ওয়ানডে সিরিজে ;###;(৩-২) হারল ভারত, ম্যাচসেরা ডি’কক, সিরিজসেরা ডি ভিলিয়ার্স (৩ সেঞ্চুরি, ৯০ গড়ে ৩৫৮ রান), ১০টি করে উইকেট নিয়ে যৌথভাবে সর্বোচ্চ শিকারি রাবাদা ও স্টেইন

ধোনিও বললেন সম্ভব ছিল না

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ২৭ অক্টোবর ২০১৫

ধোনিও বললেন সম্ভব ছিল না

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রিকেট নাকি গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। ওয়ানডে-টি২০’র মতো ছোট পরিসরের লড়াই সেখানে আরও বেশি অনিশ্চয়তাময়। অথচ মহেন্দ্র সিং ধোনি বললেন, ওয়ানডেতে ৪শ’র ওপরে রান তাড়া করে জেতা যায় না! এ থেকে পরিষ্কার, হারার আগেই ম্যাচটা হেরে বসে ভারত। হবেই বা না কেন? ওয়াংখেড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং যারা দেখেছেন তারা একবাক্যে মানবেন, কেবল চার-ছক্কা, সেঞ্চুরির-বন্যা নয়, ক্রিকেট মোড়লদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স, কুইন্টন ডি’কক আর ফাফ ডুপ্লেসিসরা। ৪ উইকেটে উঠল রেকর্ড ৪৩৮ রান! ধোনির আর দোষ কি। এক্ষেত্রে যায় হয় ২২৪ রানে অলআউট ভারতের হার ২১৪ রানে। সেই সঙ্গে প্রথমবারের মতো ঘরের মাটিতে পাঁচ ওয়ানডের সিরিজে ৩-২এ লজ্জা। ‘পঞ্চাশ ওভারে প্রায় সাড়ে ৪শ’র কাছাকাছি রান। অজস্র শট বল। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্যাচ মিস। বোলারদের প্রতি ওভারে ১০Ñ এর ওপরে রান দেয়া। এরপর আর কি বাকি থাকে বলুন!’ ম্যাচে ভারতের ভুলগুলো কি ছিলÑ এমন প্রশ্নে অসহায় ভারত অধিনায়ক। পরের বাক্যে মহেন্দ্র সিং ধোনি যেন শোকস্তব্ধ এক কবি, ‘ভুল! সবই তো ভুল! ঠিক হলো কোথায়? একজন জ্ঞানী সাংবাদিক হিসেবে আপনার এই প্রশ্নটাই তো ভুল! ৩৫০ হলেও চেষ্টা করা যেত। কিন্তু পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে সাড়ে ৪শ’ রান তাড়া করে জয় সম্ভব ছিল না। সত্যি বলতে ম্যাচটা আমরা ব্যাটিংয়ে নামার আগেই হেরে গেছি!’ ধোনির আসলে কঠিন সময় যাচ্ছে। বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর, ঘরের মাটিতে প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২-০তে টি২০ এবং ৩-২এ ওয়ানডে সিরিজে হার রঙিন পোশাকের ভারত অধিনায়কের। আগামী বছর নিজেদের মাটিতে টি২০ বিশ্বকাপের আগে ধোনির জন্য এটা কঠিন এক বার্তা। মুম্বাইর ওয়াংখেড়ের পিচে বোলারদের জন্য কিছু ছিল না বলেও মন্তব্য করেন তিনি, ‘টসটা এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। দক্ষিণ আফ্রিকা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে। পিচে প্রচুর রান ছিল। এখানে পেসারদের কিছুই করার নেই। যদিও আমার শুরুতে অনেক বেশি শট বল দিয়েছি। এই পিচে ছন্দময় ব্যাটিং-লাইনের বিপক্ষে আমরা ছিলাম অসহায়। স্পিনাররাও সুবিধা পায়নি।’ তবে টেস্টে এমনটা হবে না বলে মন্তব্য ওয়ানডে ও টি২০ অধিনায়কের। বিশ্লেষকদের মতে সাদা পোশাকের অধিনায়ক বিরাট কোহলিকেও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। প্রোটিয়াদের সঙ্গে চার টেস্টের দীর্ঘ সিরিজ। মোহালিতে প্রথম টেস্ট ৫ নবেম্বর থেকে। ওদিকে ম্যাচ শেষে পিচ কিউরেটর সুধীর নায়েকের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে খবর হয়েছেন ভারতের অন্তর্বর্তী কোচ রবি শাস্ত্রী! এমন ব্যাটিং ট্র্যাক বানানোয় কিউরেটরের একহাত নিয়েছেন তিনি। যুদ্ধংদেহী ভঙ্গিতে সুধীরের সঙ্গে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলেন ডিরেক্টর ও কোচের দ্বৈরথ ভূমিকায় থাকা শাস্ত্রী! স্বাগতিক শিবির যখন বিধ্বস্ত-লেজেগোবরে, দারুণ সাফল্যে প্রতিপক্ষ প্রোটিয়ারা তখন উৎফুল্ল। দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য ছিল দারুণ এক আনন্দের দিন। তিন সেঞ্চুরির কোনটিকে আলাদা করতে পারছি না! ১২ ওভারে ১৬৯ তুলে নেয়া একটা দলকে থামানো সহজ নয়। ব্যাটিং-বোলিং সবকিছুই হয়েছে আমাদের চাওয়া মতো। ভারতে এসে এখন পর্যন্ত সবকিছুই ঠিকমতো এগোচ্ছে। ছেলেরা সফরটা উপভোগ করছে। টেস্টেও এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’ ডি’কক ৮৭ বলে ১০৯, ডুপ্লেসিস ১১৫ বলে ১৩৩ (আহত অবসর) ও ডি ভিলিয়ার্স ৬১ বলে ১১৯Ñ সত্যি ম্যাচসেরা বেছে নেয়াটা সহজ ছিল না। ১০৯ কেই চিত্তাকর্ষক মনে হয়েছে, তাই তো অফিসিয়ালরা তরুণ ডি’ককের হাতে সেরার পুরস্কার তুলে দেন। পাঁচ ম্যাচে ৩ সেঞ্চুরি, ৯০ গড়ে সর্বোচ্চ ৩৫৮ রান করে সিরিজসেরা অধিনায়ক ডি ভিলিয়ার্স। শীর্ষ পাঁচ রান সংগ্রাহকের তিনজনই দক্ষিণ আফ্রিকার, বোলিংয়ে সেরা পাঁচে চার! ব্যক্তিগত নৈপুণ্যেও ভারতকে ছাড়িয়ে অতিথি প্রোটিয়ারা। যৌথভাবে সর্বোচ্চ ১০টি করে উইকেট নিয়েছেন পেসার কাগিসো রাবাদা ও ডেল স্টেইন।
×