ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সাজানো মামলায় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৮:১৩, ২৬ অক্টোবর ২০১৫

সাজানো মামলায় নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা ঢাকতে জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে নিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাজানো মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ দেওয়ান সালাহউদ্দিন এবং সাভার পৌরসভার মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি রেফাত উল্লাহকে গ্রেফতারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে তিনি এ অভিযোগ করেন। তিনি অবিলম্বে ডাঃ দেওয়ান সালাহউদ্দিন এবং রেফাত উল্লাহর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করে তাদের মুক্তি দাবি করেন। ফখরুল বলেন, গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের আইনী প্রতিকার পাওয়ার অধিকারটুকুও খর্ব করছে বর্তমান সরকার। জনবিচ্ছিন্ন শাসকগোষ্ঠীর হিংসাশ্রয়ী রাজনীতি ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক কর্মকা-ে যুক্ত না হওয়ার জন্য ভীতি সৃষ্টিই এর একমাত্র লক্ষ্য। তারা একদলীয় শাসন পাকাপোক্ত করার জন্য নানামুখী অপকৌশল এঁটে যাচ্ছে। আর সেই অপকৌশলের অংশ হিসেবে সারাদেশে বিএনপির পুনর্গঠন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার হীন উদ্দেশে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের ধারাবাহিকতায় ডাঃ দেওয়ান সালাহউদ্দিন এবং রেফাত উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিবৃতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে এর জন্য সরকারকে দায়ী করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলার বর্তমান অবনতিশীল পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যথাযথভাবে কাজে না লাগিয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়ার কারণেই দেশে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ অবস্থার অবসানে সরকারকে সুস্থ ধারায় ফিরে আসতে হবে। এর আগে শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত ও অবিলম্বে জড়িতদের বিচার চায় বিএনপি। ফখরুল বলেন, কোন ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে তদন্তের আগেই বিএনপিকে জড়িয়ে বক্তব্য দেয়া হচ্ছে, যা সত্যিই দুঃখজনক। বিভিন্ন হত্যাকা-ের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এখন ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ভাষায় কথা বলছে। কিন্তু এসব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হলে এক সময় তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপিকে এর আগে বিভিন্ন সময়ে ভাঙ্গার এবং বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এখন বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বিএনপি সম্পূর্ণভাবে একটি উদারপন্থী গণতান্ত্রিক দল। এই দলটিকে জঙ্গীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা বলে সরকারী দলের লোকেরা বিএনপিকে ভুলভাবে চিহ্নিত করতে চায়। একটি কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। বিএনপি সেই দল যারা বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছে এবং সংসদীয় গণতন্ত্রেও সূচনা করেছে। বিএনপি সব সময় মানুষের অধিকার নিয়ে আন্দোলন করেছে। চিকিৎসার জন্য বিদেশে অবস্থান করা বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন না বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুল বলেন, লন্ডনে চিকিৎসা শেষে ৭ নবেম্বরের আগেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দেশে ফিরে আসবেন। খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন না বলে যারা বলছেন, তা খালেদা জিয়া ও বিএনপির বিরুদ্ধে একটি গভীর চক্রান্ত। খালেদা জিয়া তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে দেশের মানুষের সঙ্গে সব সময় ছিলেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন। অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গেই বলতে চাই, খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। তার চোখের চিকিৎসা চলছে। একই সঙ্গে পায়ের চিকিৎসাও হচ্ছে। চিকিৎসক ছেড়ে দেয়া মাত্রই তিনি দেশে ফিরে আসবেন। ৭ নবেম্বর উপলক্ষে বিএনপির ১০ দিনের কর্মসূচী ॥ ৭ নবেম্বরকে ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করতে বিএনপি এবার ৫ নবেম্বর থেকে ১৫ নবেম্বর পর্যন্ত ১০দিনের কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। শনিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। ঘোষিত কর্মসূচী অনুযায়ী ৭ নবেম্বর ভোর ৬টায় নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ১০টায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। এছাড়া ৮ নবেম্বর বেলা ৩টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করবে বিএনপি। এরপর প্রতিদিন বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন আলোচনা সভার আয়োজন করবে।
×