ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রফতানি টার্গেট পূরণে ব্যর্থ মিশন থেকে অদক্ষদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৬ অক্টোবর ২০১৫

রফতানি টার্গেট পূরণে ব্যর্থ মিশন  থেকে অদক্ষদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে

তৌহিদুর রহমান ॥ বিদেশে বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি করতে ব্যর্থ কূটনৈতিক মিশনগুলো থেকে অদক্ষ কর্মকর্তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। যেসব কূটনৈতিক মিশন ও বাণিজ্যিক উইং বারবার রফতানির টার্গেট পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে সেখান থেকেই কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৩৩টি মিশন রফতানির টার্গেট পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানায়। বিদেশে বাংলাদেশী পণ্যের চাহিদা সৃষ্টি করতে বেশিরভাগ কূটনৈতিক মিশন ব্যর্থ হচ্ছে। বাংলাদেশী পণ্যের রফতানি বাড়াতে যে টার্গেট দেয়া হচ্ছে, তা পূরণ করতে পারছে না বিদেশের মিশনগুলো। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বিদেশে বাংলাদেশের ৫৩টি মিশনের মধ্যে টার্গেট পূরণ করতে পেরেছে মাত্র ২০টি। আর ৩৩টি মিশন টার্গেট পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। সূত্র জানায়, বিদেশের বেশ কয়েকটি মিশন ও বাণিজ্যিক উইং রফতানির টার্গেট পূরণে প্রতিবছর ব্যর্থ হচ্ছে। সেজন্য মিশনগুলোকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এছাড়া দক্ষ ও কর্মঠ কর্মকর্তা নিয়োগেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আর মিশনে থাকা অদক্ষ কর্মকর্তা যারা রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ তাদের অবিলম্বে দেশে ফেরানোর সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। সেজন্য অদক্ষ কর্মকর্তাদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এসব কর্মকর্তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি অন্য মিশনে বদলিও করা হবে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিনমাসে যে ২০টি মিশন তাদের রফতানির টার্গেট পূরণে সফল হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে নতুন দিল্লী, ক্যানবেরা, অটোয়া, টোকিও, সিঙ্গাপুর, দুবাই, লন্ডন, ব্রুনেই, নাইরোবি, কুয়েত, সিউল, প্রিটোরিয়া, ত্রিপোলি, মাস্কাট, মেক্সিকো সিটি, রাবাত, ম্যানিলা, হ্যানয়, কলম্বো ও ওয়াশিংটন। সূত্র জানায়, যেসব মিশন টার্গেট পূরণে ব্যর্থ হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে, ব্রাসেলস, বেজিং, বার্লিন, তেহরান, ইয়াঙ্গুন, মস্কো, প্যারিস, জেনেভা, মানামা, থিম্পু, কায়রো, এথেন্স, হংকং, জাকার্তা, রোম, আম্মান, পোর্ট লুইস, বৈরুত, দি হেগ, লিসবন, দোহা, স্টকহোম, ব্রাসিলিয়া, মালে, ইসলামাবাদ, আঙ্কারা ও তাসখন্দ। এদিকে আরও ৬টি মিশন টার্গেট পূরণে ব্যর্থ হলেও গত বছরের চেয়ে তাদের রফতানি বেড়েছে। এই ছয়টি মিশন হলো কুয়ালালামপুর, মাদ্রিদ, বাগদাদ, কাঠমা-ু, ব্যাঙ্কক ও রিয়াদ। এদিকে জানা গেছে, বিদেশে কোন মিশনে কমার্শিয়াল উইং না থাকা সত্ত্বেও রফতানির টার্গেট পূরণে সফল হয়েছে ১২টি মিশন। বর্তমানে ৩৫টি মিশনে কোন কমার্শিয়াল উইং নেই। তবে কমার্শিয়াল উইং না থাকা সত্ত্বেও যে ১২টি মিশন তাদের টার্গেট পূরণ করেছে তার মধ্যে রয়েছে ব্রুনেই, নাইরোবি, কুয়েত, সিউল, প্রিটোরিয়া, ত্রিপোলি, মাস্কাট, মেক্সিকো সিটি, রাবাত, ম্যানিলা, হ্যানয়, ও কলম্বো। বিদেশে বাংলাদেশের মিশন ছাড়াও ১৮টি কমার্শিয়াল উইং রয়েছে। তার মধ্যে ১০টি উইং-ই তাদের টার্গেট পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। আর ৮টি উইং তাদের টার্গেট পূরণে সফল হয়েছে। সফল হওয়া উইংগুলোর মধ্যে রয়েছে, ক্যানবেরা, অটোয়া, নিউদিল্লী, টোকিও, সিঙ্গাপুর, দুবাই, লন্ডন ও ওয়াশিংটন। চলতি অর্থবছরে বিদেশের মিশনগুলোকে ৩৩ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানির টার্গেট দেয়া হয়েছে। তবে প্রথম তিনমাসে তারা আয় করেছে মাত্র ৮ হাজার ১০৩ মিলিয়ন ডলার। ফলে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ পূরণ হয়নি বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সূত্র জানায়, বিদেশে রফতানি বাড়াতে সরকার থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দেশে কমার্শিয়াল উইং বাড়ানোর সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধাগুলো দূর করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেখানেই অশুল্ক বাধা শনাক্ত হচ্ছে, সেখানেই বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা হচ্ছে।
×