ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাথরুম সঙ্কটে বিপাকে জবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ২৪ অক্টোবর ২০১৫

বাথরুম সঙ্কটে বিপাকে জবি শিক্ষার্থীরা

হাসান ইমাম সাগর ॥ বাথরুম সঙ্কটে বিপাকে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষার্থী। সম্প্রতি ক্যাম্পাসের নিচতলা সংলগ্ন বেশকয়েকটি বাথরুম বন্ধ এবং অপসারণের কারণে সমস্যা তীব্র হয়ে উঠেছে। এ সমস্যার অধিকাংশ ভুক্তভোগী হচ্ছে মেয়েরা। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য হতেগোনা কয়েকটি বাথরুম থাকলেও অধিকাংশ বাথরুম ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় ১০ হাজার মেয়ে শিক্ষার্থীর জন্য আছে দুইটি কমনরুম। এখানকার বাথরুম ব্যবহার করতে দীর্ঘ লাইনে সিরিয়াল ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় সবসময়। পরিচ্ছন্নতার অভাবে বাথরুম ব্যবহার অসহনীয় হয়ে উঠেছে। পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ না থাকায় ময়লার দুর্গন্ধে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়াসহ নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এতে ক্যাম্পাসে না আসা এবং আসলেও দ্রুত বাসায় ফিরে যেতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসজুড়ে নিচতলার সমস্ত বাথরুম অকেজো হয়ে পড়ে আছে। নতুন ভবনের নিচতলার বাথরুমটি বন্ধ করে শিক্ষকদের ক্যান্টিন চালু করা হয়েছে। ক্যাফেটেরিয়ার একটি মাত্র বাথরুম ভেঙ্গে ফটোস্ট্যাটের দোকান বসানোর জন্য রুম তৈরি করা হয়েছে। ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচতলার বাথরুমটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে দীর্ঘদিন। পানি সরবরাহ না থাকায় ছাত্রদের কমনরুমের বাথরুমটি ব্যবহৃত হচ্ছে না। এদিকে বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের নিচতলার সবক’টি বাথরুম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মসজিদ সংলগ্ন বাথরুমটি সাধারণ জনগণের ব্যবহারের জন্য শিক্ষার্থীদের সুযোগ পাওয়া দুরূহ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগে মেয়েদের জন্য নির্দিষ্ট কোন বাথরুম নাই। রক্ষণাবেক্ষণের কর্মীদের নিষ্ক্রিয়তার জন্য নোংরা আর পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে বেশকয়েকটি বাথরুম। গণিত বিভাগের ৭ম ব্যাচের ছাত্রী নুসরাত জাহান ডলি অভিযোগ করে জনকণ্ঠকে বলেন, বাথরুমের অভাবে আমরা ঠিকমত ক্লাসে উপস্থিত হতে পারি না। কোন কারণে পেটে সমস্যা হলে ভয়ে ক্যাম্পাসেই আসি না। শারীরিক সমস্যার জন্যে অতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। আমরা ইচ্ছা করলেই ছেলেদের মতো চলতে পারি না। আমাদের নিরাপত্তার জন্য যেখানে সেখানে বাথরুম ব্যবহার করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেক সময় আমরা বাধ্য হয়ে ছেলেদের অথবা শিক্ষকদের বাথরুম ব্যবহার করি। তাছাড়া এই বাথরুম সমস্যার জন্য আমাদের লেখাপড়ারও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের ছাত্রী তিথি চক্রবর্তী বলেন, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার সময় আমাদের তিনঘণ্টার জন্য পরীক্ষার হলে ঢুকতে হয়। আমাদের বাথরুম না থাকায় পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অনেক কষ্ট করে পরীক্ষা দিতে হয়। এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. সেলিম ভুঁইয়া জনকণ্ঠকে বলেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই মসজিদের বাথরুমটি সংস্কার করা হবে এবং অন্যান্য বাথরুমগুলোও পর্যায়ক্রমে ব্যবহারের উপযোগী করা হবে।
×