ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিশ্বব্যাংক সামিট থেকে ফিরে অর্থমন্ত্রী

কারও কোন অন্যায় নীতি দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারবে না

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৯ অক্টোবর ২০১৫

কারও কোন অন্যায় নীতি দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করতে পারবে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যেসব নীতি গ্রহণ করেছে, তা কোন সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য স্বস্তিদায়ক ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। গত সাত বছরে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যে নীতি গ্রহণ করেছে তাও আমাদের জন্য সুখকর ছিল না। কিন্তু এসব নীতি আমাদের অর্থনীতিতে কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবে না। সম্প্রতি দুই বিদেশী নাগরিক হত্যাকা-কে কেন্দ্র করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আরও বলেছেন, ওই দেশে প্রতিদিন কতজন বিদেশী মারা যায় তার হিসাব কে রাখে?। তাই বিদেশী নাগরিকের হত্যা নিয়ে খুব বেশি হইচই করার কিছু নেই। বরং বাংলাদেশে ল’ এ্যান্ড অর্ডার ইজ ওয়ান্ডারফুল। রবিবার দুপুরে সচিবালয়ের অর্থমন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব কথা বলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান ও পেরুতে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভা শেষে ২৫ দিন পর দেশে ফেরা উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মাদ আবদুল মান্নান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মিজবাহ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের সামষ্টিক অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে আভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে আমাদের লক্ষ্য ৭ শতাংশ। তিনি আরও বলেন, গত ৬-৭ বছরে রাজনৈতক অস্থিরতা ও কোন্দল সত্ত্বেও আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়নি। আমরা তা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আর এ বিষয়টি আমরা জাতিসংঘে তুলে ধরেছি। এরইমধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে, বাংলাদেশ থেকে দুষ্টু রাজনীতি বিসর্জিত হয়েছে। কোনও ধরনের অস্থিরতা বা কোন্দল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে পারবে না। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন সম্পর্কে মুহিত বলেন, জাতিসংঘে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রশংসিত হয়েছে। আমরা বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অর্জনের বিস্তারিত তুলে ধরেছি, যা অন্যান্য দেশের কাছেও সমাদৃত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২০ মিনিটের বক্তৃতায় বাংলাদেশে সব বিষয় সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। সেখানে দারিদ্র্যবিমোচন, শিক্ষা খাতেরর উন্নয়ন, লিঙ্গ বৈষম্যদূরীকরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বাংলাদেশের উদ্যোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করি। এজন্য বাজেটে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এখন এমডিজি গোল পূরণ করে এসটিজি গোল অর্জনের জন্য পরামর্শ ও কর্মকৌশল নির্ধারণ করছি। এ বিষয়ে আমাদের তুলে ধরা ১৭টি পয়েন্টের মধ্যে ১১টি জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছে। এমডিজির জন্য আমাদের নেয়া পদক্ষেপে প্রশংসিত হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রাথমিক শিক্ষায় আমাদের উন্নয়ন হয়েছে। তবে মাধ্যমিক শিক্ষায় আরও কিছু করণীয় রয়েছে। তবে ই-শিক্ষার ব্যাপারে তিনি বলেন, এটি ভাল, তবে ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সম্পর্ক যে ধরনের হওয়ার তা হয় না। ফলে এর মাধ্যমে ভাল শিক্ষা হয় না। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়া লন্ডনে অবস্থান করবেন কি না আমি তা জানি না। তবে তার সকল কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। পত্রিকায় দেখেছি তিনি সেখানে বাসা ভাড়া নিয়েছেন। নতুন পে-স্কেল সম্পর্কে তিনি বলেন, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন পে-স্কেল এরই মধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হয়েছে। খুব শিগগির এ বিষয়ে গেজেট প্রকাশ করা হবে। আশা করা হচ্ছে, আগামী নবেম্বর মাস থেকে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী বেতন পাবেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সম্পর্কে আবুল মাল মুহিত বলেন, শিক্ষকরা একটা বিশেষ অবস্থানে পৌঁছেছেন এটা দুঃখজনক। এটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। বিষয়টা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী তাদের (শিক্ষকদের) সঙ্গে বসেছেন। তিনি আরও বলেন, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছিল, তারা ২৫০ ডলার দিতে রাজি হয়েছে।
×